স্কুলছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, পটুয়াখালী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ ইছা, ছবি: সংগৃহীত

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ ইছা, ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কাংকুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন কুয়াকাটাগামী বিকল্প সড়কের চৌরাস্তায় বিক্ষোভ করে তারা এ দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ আছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ ইছা সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে একা অফিস রুমে ডেকে আনেন। ওই ছাত্রীর কাছে গেলদিন স্কুলে না আসার কারণ জানতে চান। এক পর্যায় শিক্ষক ওই ছাত্রীর শরীরে হাত দেন ও মুখে চুমু দেন। পরে ওই ছাত্রী তার এক বোনকে বিষয়টি জানায়। ওই বোন শিশুর বা মোস্তফা হাওলাদারকে খবর দেন।

স্কুলে পৌঁছে শিশুর কাছ থেকে সব শুনে বিষয়টি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. এনামুল হককে জানান। ঘটনা শুনে সভাপতি প্রধান শিক্ষককে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে প্রধান শিক্ষক শিশুর বাবার পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চান।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনার তদন্তে কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাশার মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান। তদন্ত প্রমাণিত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী

 

স্কুলের একাধিক শিশু শিক্ষার্থী জানায়, ওই শিক্ষার্থীর মুখে চুমু দেওয়ার পর মুখ ধুয়ে ফেলতে বলেন প্রধান শিক্ষক। এছাড়া এ ঘটনা কাউকে না বলার অনুরোধ করেন। পাশাপাশি ক্লাসে ফার্স্ট বানানোর প্রস্তাবও দেন।

পঞ্চম শ্রেণির একাধিক ছাত্রী জানায়, হুজুর (হেড) স্যারের কথা না শুনলে মারধর করেন। তারা এই স্কুলে একজন মহিলা প্রধান শিক্ষক চায়।

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রীণা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েও ক্লাস থ্রিতে পড়ে। এখন ওই শিক্ষককে নিয়ে বেশ চিন্তায় আছি।’

মঙ্গলবার বিকেলে স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মাওলানা আবু সালেহকে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি একটি আবেদন (সই ছাড়া) সহকারী শিক্ষকদের কাছে রেখে গেছেন। যেখানে শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে মোবাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবু সালেহ মোহাম্মদ ইছা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এটি ষড়যন্ত্র।’

তবে কারা ষড়যন্ত্র করছে সেটা তিনি বলেননি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল বাশার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) অনুপ দাশ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগে কলাপাড়ার একজন প্রধান শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে আবারও এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার অভিযোগ ওঠায় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন।’