ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে মাছ শিকার, বিপাকে কৃষকরা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, নেত্রকোনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে মাছ শিকার চলছে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে মাছ শিকার চলছে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

নেত্রকোনায় হাওরাঞ্চলের কৃষকদের ফসল রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃক নির্মিত বেড়িবাঁধ কেটে চলছে মাছ শিকার। এতে কমতে শুরু করেছে বাঁধের পানি। ফলে বিপাকে পড়েছেন বাঁধ সংলগ্ন হাওরের কৃষকরা। এ ঘটনায় স্থানীয় দুই মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছেন।

অভিযোগের বিবরণে জানা গেছে, জেলার মদন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাছকুনিয়া হাওরের বাঁধের ভেতরে স্থানীয় দক্ষিণপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি রহিছ মিয়া, আব্দুল জলিল, আব্দুল আওয়াল, শামীম, ফজলে রাব্বি ও শিহাব উদ্দিনের জমি রয়েছে। মাছ শিকারের জন্য ওইসব জমি একই গ্রামের সালেক মিয়ার কাছে এক বছরের জন্য ৮০ হাজার টাকায় লিজ দেন তারা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, জমি লিজ নিয়েই সালেক মিয়া ফসল রক্ষা বাঁধটি কেটে দুই পাশে গর্ত করেন। বাঁধের ভেতরের পানি ছেড়ে জাল দিয়ে মাছ শিকার শুরু করেন। এতে হাওরের উঁচু জমির পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় কৃষকরা বোরো আবাদ নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন।

স্থানীয় কৃষক বদরুল, জামাল, কাইয়ূম মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সরকার লাখ লাখ টাকা খরচ করে কৃষকদের ফসল রক্ষার জন্য বাঁধ নির্মাণ করে দিয়েছেন। কিন্তু এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী নিজেরা লাভবান হওয়ার আশায় বেড়িবাঁধ কেটে মাছ নিধন করে কৃষকদের ক্ষতি করছেন। কৃষকদের দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরে স্থানীয় দুইজন মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করেছেন বলেও জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে সালেক মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘মাছ ধরতে বাঁধের ভেতরের জমির মালিকদের কাছ থেকে এক বছরের জন্য ৮০ হাজার টাকায় লিজ নিয়েছি। আমি বাঁধ কেটে গর্ত করিনি। পানির স্রোতে এমনিতেই দুই স্থানে গর্ত হয়ে যায়। আমি মাছ ধরার জন্য ওই গর্তে জাল ফেলেছি।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান শেখ মানিক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে মাছ নিধনের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

নেত্রকোনা পাউবো’র উপসহকারী প্রকৌশলী নিবারণ চক্রবর্তী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘বিষয়টি জানা নেই। উপজেলা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়ালীউল হাসান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’