শিবচরে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, আটক ২৫

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, মাদারীপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

মাদারীপুর জেলার শিবচরের কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় পুলিশ কমপক্ষে ৪০ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। পরে রাতে ঘটনাস্থল ও এলাকা থেকে ২৫ জনকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় শিবচর থানার এসআই মারুফুল হক বাদী হয়ে (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৫২ জনকে চিহ্নিত আসামী ও  আরো ১ হাজার থেকে ১২'শ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (রাত সোয়া ৮টা) আটককৃত সকল আসামীকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবির, জেলা পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) উত্তম কুমার পাঠকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল, আক্রান্ত ব্যক্তি, সাংবাদিকসহ এলাকার অনেকের কাছ থেকে ঘটনার বর্ননা নেন। পরে বিকালে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

মামলা

এতে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কাজী জিহাদুল কবিরকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। অন্যদিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোসাঃ লুৎফন্নাহার নাজীমকে প্রধান করে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত শনিবার বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।  তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠান।

বিজ্ঞাপন

ওই বিষয়টি নিয়ে গতকাল সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মিটিং করেন উপজেলা প্রশাসন। তখন প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে দিলে তার প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় অভিভাবকেরা। তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবী করে বিক্ষোভ করে।

এসময় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিক্ষুব্ধরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও'র গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক ফরহাদ হোসেন আহত হন। এ সময় পুলিশ প্রায় ৪০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে রাতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

বিজ্ঞাপন
মামলা

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ে যান। সেখানে শিক্ষার্থীদের সাথে সমঝোতা বৈঠকে অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে আমি পুলিশ নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ লাঠি চার্জ ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’ 

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবির জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকার বিভিন্ন জনের সাথে আমরা কথা বলেছি। খু্ব শীঘ্রই ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।