রহনপুর রেলস্টেশনের বেদখল জমিতে অনৈতিক কারবার
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশনের আশপাশের জায়গা দিন দিন বেদখল হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণ রেলের জমি বেদখল হয়ে গেছে।
প্রসাশনের নাকের ডগায় বসেই প্রভাবশালীরা দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। রেললাইনের কোলঘেঁষে কাঁচাপাকা স্থাপনা এবং অবৈধ দোকান বসিয়ে দখলদাররা হাতিয়ে নিচ্ছে হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এতে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ট্রেন।
তবে বিভিন্ন সময়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হলেও কার্যত কোন সফলতা আসেনি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় প্রভাবাশালী অসাধু সিন্ডিকেট মাসোয়ারা নিয়ে স্থায়ীভাবে দখলদারিত্ব টিকিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রেলের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জমি উদ্ধারের কোন উদ্যোগ না থাকায় নতুন করে আরো জায়গা বেদখল হচ্ছে। এসব জমিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলে বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন প্রভাবশালীরা। কেউ কেউ নামমাত্র মূল্যে রেলের জমি লিজ নিয়ে অতিরিক্ত জায়গা দখল করেছেন।
এছাড়া রহনপুর পৌরসভাও রেলওয়ের জায়গায় আমবাজার ও দৈনিক বাজার বসিয়ে থাকে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ— দখলের পাশাপাশি রেলের জমিতে মিনি পতিতালয় গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে চলছে মাদকেরও কারবার।
স্থানীয়রা বলছেন, রেলওয়ের অনেক জলাশয় ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এতে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। রেলের জায়গার অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে জোড়ালো অভিযান চালানো উচিত। উচ্ছেদের সঙ্গে দখলদারদের স্থায়ীভাবে প্রতিহত করতে নিয়মিত মনিটরিং প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
একইভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেললাইনের দুই পাশের অনেক জায়গা দখল হয়ে গেছে। কোথাও মার্কেট আবার কোথাও বাড়িঘর ও বস্তি বানিয়ে এসব জায়গা দখল করা হয়েছে। কোটি টাকার এসব জমি উদ্ধারে রেল কর্তৃপক্ষ যেমন ব্যর্থ, তেমিন রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, রেললাইনের দুই পাশে ১০ ফুট জায়গা খালি রাখার নিয়ম। সরকারি নির্দেশনা ছাড়াও যেকোন দুর্ঘটনা এড়ানো ও বাড়তি সতর্কতার জন্য এমন বিধান। অথচ এখানকার কোথাও এমন খালি রাখার চিত্র চোখে পড়ে না। উপজেলার বেশিরভাগ জায়গা ঘুরে রেললাইনের দুই পাশে বস্তি, দোকানপাট এবং আধাপাকা স্থাপনা বানিয়ে দখলের চিত্র দেখা গেছে। রহনপুরকে পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দরে পরিণত করার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও অবৈধ দখলদারিত্বের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।
পশ্চিম রেলওয়ের ভূসম্পদ কর্মকর্তা নুরুজ্জামান জানান, রহনপুর রেলস্টেশন এলাকায় রেলওয়ের প্রায় ৬শ’ বিঘা জমি রয়েছে। যার অধিকাংশই বেদখলে। খুব শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান চালনো হবে।
গোমস্তাপুরের স্থানীয় সংবাদকর্মী মনিরুল ইসলাম দোয়েল বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া অবৈধ দেহ ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। দখলদাররা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই দিব্বি অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে ধ্বংস হচ্ছে স্থানীয় যুবসমাজ, বাড়ছে অপরাধ।
রহনপুর পৌর মেয়র তারিক আহমদ বলেন, রেলের জমি উদ্ধারে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। জমি দখল করে অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দীনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে রেল বিভাগের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।