জেদের বশে কেক বানান আঞ্জুমান আরা

  • তোফায়েল হোসেন জাকির, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আঞ্জুমান আরা চৌধুরী আঞ্জু

আঞ্জুমান আরা চৌধুরী আঞ্জু

কয়েক বছর আগে ছোট মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে গাইবান্ধা পৌরসভার কলেজপাড়ার একটি দোকানে কেক অর্ডার করেন আঞ্জুমান আরা চৌধুরী আঞ্জু। দোকানদার সঠিক সময়ে কেক সরবরাহ করতে না পারায় মেয়ের জন্মদিন প্রায় ভেস্তেই যাচ্ছিলো। সেদিন কেক ছাড়াই মেয়ের জন্মদিন পালন করতে হয় তাকে।

তখনই কেক তৈরির বিষয়টি আঞ্জুমান আরার মাথায় আসে। পরবর্তীতে স্বামী ও বন্ধুদের সহয়োগিতায় ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বাসায় কেক বানানোর কাজ শুরু করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এরপর ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল গাইবান্ধার সার্কুলার রোডের মাস্টারপাড়ায় আঞ্জু’স কিচেন নামে কেকের দোকান খোলেন তিনি। দিনে দিনে ব্যবসার পরিসর বেড়েছে তার। এখন নরমাল ভ্যানিলা, নরমাল চকলেট, চকোলেট ভ্যানিলা, ব্ল্যাক ফরেস্ট, রেড ফরেস্ট, রেড ভেলভেট কেক, পিজ্জাসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করছেন তিনি। অর্থনৈতিকভাবেও সাবলম্বী হয়ে উঠেছেন আঞ্জুমান আরা।

একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। নিজের পরিশ্রমই তার এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। পথে পথে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়েছে আঞ্জুমান আরাকে। তবে কখনোই দমে যাননি তিনি। নিজের মেধা, মননশীলতা, কর্মনিষ্ঠা এবং একাগ্র প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছেন এই নারী উদ্যোক্তা।

বিজ্ঞাপন
নারী উদ্যোক্তা আঞ্জুমান আরা চৌধুরী

সফল উদ্যোক্তা আঞ্জুমান আরা তার কেক ব্যবসা শুরুর প্রসঙ্গে বলেন, শুরুটা আসলে জেদের বশেই হয়েছিল। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা থাকলেও আমার মনে হয় ঘরে বসে থাকার চেয়ে কিছু করা ভালো। সেই চিন্তা থেকেই আসলে আমার কেক বানানো শুরু। ঢাকায় গিয়ে কেক তৈরি করা শিখি। প্রথমে আশেপাশের দু-একটি জায়গায় কেক দেই। সেখান থেকে বেশ ভালো সাড়া পাই। দেখা যায় ক্রেতাদের চাহিদা বেশ ভালো এবং তারা খাওয়ার পর অনেক প্রশংসাও করতেন।

ক্রেতাদের চাহিদা ও প্রশংসা দেখে আঞ্জুমান আরার মনোবল এবং কাজ করার আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। তার হাতে বানানো বিভিন্ন রকম কেক দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি খেতেও তেমন সু-স্বাদু। কেক মানসম্মত হওয়ায় খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা পান তিনি। অর্ডার মোতাবেক নিখুঁতভাবে এবং সঠিক সময়ে ডেলিভারি দেন আঞ্জুমানা আরা। এতে তার পরিচিতি আরও বাড়তে থাকে। পাশাপাশি অনেক অর্ডারও পেতে থাকেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্ডার এবং কাজের প্রসার বাড়তে থাকে তার।

আঞ্জুমান আরা বলেন, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। সাহস আর কাজ করার মনমানসিকতা থাকলে ব্যস্ততার মাঝেও কাজ করা সম্ভব। সংসার, সন্তানদের লেখাপড়া ও বাবা-মাকে সময় দেয়ার পরও কেক বানানোর কাজ করে যাচ্ছি। সবার সহযোগিতা ও উৎসাহ পাওয়ায় আমার কাজ করার ইচ্ছা আরো বেড়ে যায়। প্রতিটি কাজে আমার স্বামী ও বন্ধুরা আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। সবসময় তারা আমার পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন। তাদের সহযোগিতায় আজ আমি এই জায়গায় আসতে পেরেছি।

দেশের প্রতিটি জেলায় কেকের দোকান এবং নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রত্যাশা করছেন সফল নারী উদ্যোক্তা আঞ্জুমান আরা আঞ্জু।