করোনা: ঘটা করে সিভিল সার্জনের মেয়ের বিয়ে
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি ঠেকাতে জনসমাগম এড়িয়ে চলার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও ঘটা করে চিকিৎসক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন।
শুক্রবার (২০ মার্চ) জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের ডরমিটরিতে থাকা নিজের সরকারি বাসভবনে এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনা চলছে। অনেকেই বিষয়টিকে দায়িত্বহীনতা বলে দাবি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর-চাপুইর গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন মোল্লার ছেলে প্রকৌশলী মঈনুল হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সিভিল সার্জনের মেয়ে চিকিৎসক শাননিন আলম মমোর বিয়ের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার ঘটা করেই চলে বিয়ের আয়োজন।
বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের অবকাশ এলাকায় সিভিল সার্জন শাহ আলমের সরকারি বাসভবনের প্রধান ফটকের ভেতরে ফুল দিয়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বাড়ির ভেতরে একটি প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। বাসভবনের ভেতরে একটি জায়গায় রান্নার কাজ চলছে।
দুপুর ২টার দিকে জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের ডরমিটরি সংলগ্ন নিয়াজ মুহাম্মদ ফারুকী পার্কে দেখা যায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শওকত হোসেন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফায়েজুর রহমান, জেলার বিভিন্ন ক্লিনিকের ডেন্টাল চিকিৎসকরা, ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
পৌনে ৩টার দিকে সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবনে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র আমন্ত্রিত অতিথিরাই ভেতরে যেতে পেরেছেন। ফটকের বাইরে সিভিল সার্জন শাহ আলমের নিজের লোকজন দাঁড় করিয়ে দেন। ফলে সাংবাদিকদের কেউ ভেতরে যেতে পারেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা শহরের কয়েকজন জানান, সারা দেশ যেখানে করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন সেখানে সিভিল সার্জনের মতো একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এমন কাণ্ডে সকলেই অবাক। ঘটা করে এমন সময়ে বিয়ের আয়োজন দায়িত্বহীনতার মধ্যে পড়ে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন শাহ আলম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মেয়ের গায়ে হলুদ ছিল। খুবই স্বল্প পরিসরে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। পরিবারের লোকজনসহ অনেককেই নিমন্ত্রণ করতে পারিনি।’
জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। বিয়ের কথা আমরা জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে আমরা কেউই নই।’