পঞ্চগড়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের ঢেঁকি
কালের বিবর্তনে পঞ্চগড়ে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম-গঞ্জের গৃহস্থলী কাজে ব্যবহৃত এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি। তাই এখন আর আগের মতো শোনা যায় না ঢেঁকির ধুপুর ধাপুর শব্দ।
শনিবার (২৮ মার্চ) সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের হাকিমপুর এলাকায় হঠাৎ দেখা যায় এক বাড়িতে পিঠা তৈরির জন্য ৩ গৃহবধূ ঢেঁকিতে চালের গুঁড়া করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জানা যায়, কাঠের তৈরি এই ঢেঁকিতে এক সময় গ্রামের গৃহবধূরা ধান ভেঙে চাল করে রান্না করতেন। বিভিন্ন পিঠা তৈরির জন্য চালের গুঁড়াও এই ঢেঁকিতে করতেন গৃহবধূরা। যেন ঢেঁকিই ছিল গ্রাম-গঞ্জের ধান ভাঙার একমাত্র মাধ্যম ও ভরসা। কিন্তু আধুনিকতার যুগে রাইস মিল ও বিভিন্ন ধান কাটার মিলের কারণে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এই ঢেঁকি। তবে কিছু কিছু এলাকায় এখনো ঢেঁকির দেখা মেলে।
এ বিষয়ে কথা হয় হাকিমপুর এলাকার গৃহবধূ মিছিরন বেওয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে চলে যাবে। তাই মেয়ের জন্য পিঠা বানানোর জন্য ঢেঁকিতে চালের গুঁড়া করছি। আগে আমরা প্রতিদিন ঢেঁকিতে ধান ভেঙে চাল বানিয়ে রান্না করতাম।’
একই কথা জানান জেলার সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের ফুলপাড়া এলাকার গৃহবধূ জেসমিন বেগম। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে ঢেঁকি আছে, কিন্তু তেমন ব্যবহার হয় না। শুধু মাঝে মধ্যে পিঠা তৈরির জন্য ঢেঁকিতে চালের গুঁড়া বানানো হয়।’
পঞ্চগড় জেলার দিশারী নাট্যগোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ রিপন বলেন, ‘কালের বিবর্তনে এখন আর আগের মতো ঢেঁকি দেখা যায় না। কিন্তু ঢেঁকি আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এর ব্যবহার বাড়লে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পারব।’