কমবে ডিজেল-পেট্রোল-অকটেনের দাম!
ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। নতুন দর প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। যে কোনো সময় গেজেট আসতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (৩ মার্চ) বিকেলে সচিবালয়ের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন তথ্য জানান।
দাম কমছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিছুটা সাশ্রয় হবে বলে আশা করছি। দেখি কী অনুমোদন আসে। তারপর চূড়ান্তভাবে বলা সম্ভব হবে। আমরা আধুনিক প্রাইসিংয়ে যাচ্ছি। এখন থেকে প্রতিমাসে দাম সমন্বয় করা হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়লে বেড়ে যাবে, আবার কমলে কমে যাবে।
আগে সাধারণভাবে অভিযোগ থাকতো, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দেশে কমানো হয় না। এখন সেই অভিযোগ আর থাকার সুযোগ নেই। ফর্মূলা রয়েছে। সে অনুযায়ী দাম কমবেশি হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
দাম কমলে গাড়ি ভাড়া কমবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় কমে যাওয়া উচিত। এখানে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, আমরা তাদের সঙ্গে বসার পরিকল্পনা নিয়েছি।
সর্বশেষ, ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হয়। ওইদিন ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৯ টাকা লিটার, পেট্রোল ১৩৫ থেকে কমিয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেন ১৩৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এরপর নজিরবিহীন দাম বাড়ানো হয়, ২০২২ সালের ৫ আগস্ট রাতে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) জারি করা আদেশে ডিজেল ও কেরোসিন লিটার প্রতি ৩৪ টাকা এবং পেট্রোল ও অকটেনে ৪৬ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১১৪ টাকা লিটার, পেট্রোল ১৩৫ টাকা এবং অকটেন ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ওই দাম বৃদ্ধির পর গণপরিবহনের ভাড়া বেড়েছিল সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ। তার আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকায় করা হয়। ওই সময়েও পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ।
সরকার জ্বালানি তেলের দামে ভর্তূকি দেওয়া থেকে বের হয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে আইএমএফের চাপও রয়েছে। ‘জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ নির্দেশিকা’ প্রজ্ঞাপন ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাস্তবতার নিরিখে দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রোল ব্যক্তিগত যানবাহনে বেশি পরিমাণে ব্যবহৃত হয় বিধায় এর মূল্য বিলাস দ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে সব সময় ডিজেলের চেয়ে বেশি রাখা হয়। বর্তমানে ডিজেল ও অকটেনের খুচরা বিক্রয় মূল্য পার্থক্য লিটার প্রতি ২১ টাকা। ফর্মূলা অনুযায়ী অকটেনের মূল্য নির্ধারণকালে ডিজেলের সঙ্গে পার্থক্য লিটার প্রতি ন্যূনতম ১০ টাকা যেন থাকে, সেজন্য প্রাইসিং ফর্মুলায় ‘α’ ফ্যাক্টর বিবেচিত হবে।
পেট্রোলিয়াম পণ্য ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলসহ সরকার যে সব গ্রেডের জ্বালানি তেলের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে থাকে, সেগুলোর জন্য এই স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে। তবে সরকার/বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রয়োজন মনে করলে অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্যের ক্ষেত্রেও শর্ত সাপেক্ষে উক্ত নির্দেশনা প্রয়োগ করতে পারবে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রাথমিকভাবে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি মার্চ ২০২৪ থেকে কার্যকর হবে।