বেনাপোলে পচনশীল পণ্য খালাস বন্ধে রাজস্ব বঞ্চিত ৫০ কোটি টাকা



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
ছবি: বার্তা২৪, বেনাপোল বন্দরে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক তিনদিন ধরে আটকে রয়েছে

ছবি: বার্তা২৪, বেনাপোল বন্দরে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক তিনদিন ধরে আটকে রয়েছে

  • Font increase
  • Font Decrease

আমদানি করা মাছ, ফল ও সবজি জাতীয় পণ্যে যুক্ত করা অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার না করায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে তিনদিন ধরে পণ্য নিয়ে শতাধিত ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে।

এই আটকে থাকা পণ্যে ব্যবসায়ীদের লোকসান হয়েছে, প্রায় ১০ কোটি টাকা। অন্যদিকে, পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে, ৫০ কোটি টাকার মতো।

এদিকে, প্রচণ্ড গরমে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আটকে থাকা মাছ, টমেটো, আদা, রসুন, কাঁচা মরিচ, আপেল, আনারসহ বিভিন্ন ধরনের পচনশীল পণ্য।

তবে খাদ্য পণ্য খালাস বন্ধ থাকলেও অনান্য পণ্যের আমদানি, রফতানি ও খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

পচনশীল খাদ্যদ্রব্য আমদানিতে শুল্ক পরিশোধের ক্ষেত্রে এনবিআরের (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) নতুন নীতিমালায় পণ্যবাহী ট্রাকের চাকা অনুপাতে আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন নির্ধারণের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রেখেছেন আমদানিকারকেরা।

এনবিআরের নতুন নির্দেশনায়, আমদানি কমে যাওয়া ও বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্ষোভ জানিয়ে আইন বাতিলের দাবিতে ইতোমধ্যে বিক্ষোভ করেছেন তারা। তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, এনিবিআরের আদেশ তারা পালন করছেন।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তার বড় একটি অংশ ফল, মাছ ও সবজি জাতীয় পণ্য।

সাধারণত, পণ্যের পরিমাপ ও সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আমদানি শুল্ককর আদায় করা হয়ে থাকে। কিন্তু এনবিআর ফল, সবজি ও মাছের ক্ষেত্রে কত চাকার ট্রাকের পণ্য আসছে, তার ওপর ভিত্তি করে পণ্যের শুল্ককর আদায় করে থাকে।

গত ২৩ জুন আবার নতুন করে ট্রাকের চাকা অনুপাতে পণ্যের ওজন বাড়িয়ে শুল্ককর নির্ধারণ করে চিঠি দেয় এনবিআর। এতে প্রতি ট্রাকে অতিরিক্ত ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা গুনতে হচ্ছে। এতে লোকসানে পড়ে পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া নতুন করে চাপিয়ে দেওয়া শুল্ককর প্রত্যাহারের দাবিতে কাস্টমস অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন পণ্য আমদানিকারকেরা। কোনো সমাধান না হওয়ায় পণ্য চালান আটকে গরমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এনিয়মে পণ্য আমদানি যেমন কমবে, তেমনি সরকারও রাজস্ব হারাবে।

এ বিষয়ে আমদানি, রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে শতাধিক ট্রাক মাছ, ফল ও সবজি জাতীয় পণ্য আমদানি হয়। খালাস বন্ধ থাকায় ৩ দিনে সরকারের ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কমেছে।

আমদানি রফতানি সমিতির সেক্রেটারি জিয়াউর রহমান বলেন, কাস্টমস শুল্ককর বৃদ্ধির আগে তাদের ১২ চাকার এক ট্রাক হিমায়িত মাছে ৬ লাখ ১২ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। এখন নতুন নিয়মে তাদের অতিরিক্ত দেড় লাখ টাকা গুনতে হবে। এছাড়া ফলের ট্রাকে বেশি গুনতে হবে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত, যা বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।

বন্দরে মাছ নিয়ে আটকে থাকা ট্রাকচালক মহিদুর রহমান জানান, কাস্টমস ছাড়পত্র না দেওয়ায় ৩ দিন আটকে থেকে ট্রাকের পণ্য নষ্ট হচ্ছে। একই কথা জানিয়েছেন, সবজি বহনকারী ভারতীয় ট্রাকচালক উত্তমও।

আমদানি, রফতানিকারক উজ্বল বিশ্বাস বলেন, এনবিআর নির্দেশনায় বলেছে, কোনো পণ্যবাহী ট্রাকে পণ্যের ওজন কমবেশি হলে তা শতভাগ ওজন করে খালাস দেওয়া যাবে। তবে কাস্টমস এনবিআরের ৪ নম্বর নির্দেশনা মানছে না। ফলে, পণ্য খালাস নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনদিন ধরে বেনাপোল বন্দরে আটকা রয়েছে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক, ছবি- বার্তা২৪.কম

আমদানিকারক আবুল হোসেন বলেন, এনবিআরের নতুন নিয়মে পণ্যের শুল্কায়ন হলে যেমন আমদানি কমে যাবে, তেমনি ফল, মাছ ও সবজির বাজার চড়া হবে। ৩ দিন পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় কেবল ব্যবসায়ীরাই ক্ষতির মুখে পড়েননি, এতে আমদানি কমায় সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।

ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি, রফতানিকারক রেজাউল বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশ কাস্টমস পচনশীল খাদ্যদ্রব্য আমদানিতে নতুন করে শুল্ক বৃদ্ধি করায় তার প্রভাব পড়েছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যেও।

গত ৩ দিনে কোনো সমাধান না আসায় পণ্যবাহী অনেক ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় পেট্রাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের আটকে থাকা ট্রাকের ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রায় ১০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, নতুন নিয়মে পণ্য খালাস নিতে বাধা নেই। তবে কিছু কিছু আমদানিকারক শুল্ক বৃদ্ধির কারণে পণ্য খালাস নিচ্ছেন না। তাদের দাবির বিষয়ে কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখছেন বলে জানান তিনি।

এনবিআরের নির্দেশনা পত্রে বলা হয়েছে, ৬ চাকার ট্রাকে কমলা, মাল্টা ও কেনুর জন্য বাধ্যতামূলক ১৮ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের থাকা পণ্যের ২০ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২২ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৫ টনে ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ২৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

এছাড়া, ৬ চাকার ট্রাকে থাকা আঙুরের জন্য ১৯ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের থাকা পণ্যের ২০ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২২ টনের ডিউটি। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৪ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ২৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

৬ চাকার ট্রাকে থাকা আনারের জন্য ২৩ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের থাকা পণ্যের ২৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২৭ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৮ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ২৯ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

৬ চাকার ট্রাকে থাকা আপেলের জন্য ২১ টনের শুল্ককর, ১০ চাকার ট্রাকের ২২ টনের শুল্ককর, ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২৩ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৫ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ২৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

এছাড়া ৬ চাকার ট্রাকে থাকা হিমায়িত মাছের জন্য ৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের ১০ টনের শুল্ককর, ১২ চাকার ট্রাকের ১৩ টনের শুল্ককর, ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ১৮ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ২০ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

বরফ ছাড়া মাছের ৬ চাকার ট্রাকের ১৫ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের ১৮ টনের শুল্ককর, ১২ চাকার ট্রাকের ২০ টনের শুল্ককর, ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২১ টনের এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ২২ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

শুঁটকি মাছের ক্ষেত্রে ৬ চাকার ট্রাকের জন্য ১৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের থাকা পণ্যের ১৮ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২০ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২২ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ২৪ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

টমেটো ৬ চাকার ট্রাকের জন্য ১৮ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের থাকা পণ্যের ২০ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ২৪ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ২৮ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ৩০ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

পান ৬ চাকার ট্রাকের জন্য ৬ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১০ চাকার ট্রাকের থাকা পণ্যের ৯ টনের শুল্ককর দিতে হবে। ১২ চাকার ট্রাকে থাকা পণ্যের জন্য ১১ টনের ডিউটি দিতে হবে। ১৪ চাকার ক্ষেত্রে ১২ টনের ডিউটি এবং ১৬ বা তার বেশি চাকার গাড়িতে থাকা পণ্যের ১৩ টনের শুল্ককর দিতে হবে।

গড়ে সব গাড়িতে শুল্কের পরিমাণ আগের চেয়ে ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

বেনাপোল কাস্টমসে ১২ বছর পর রাজস্ব আয়ে রেকর্ড- ৬১৬৪ কোটি টাকা



আজিজুল হক, সিনিয়র করেসপন্ডডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
ছবি: বার্তা২৪, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি রাজস্ব আয় বেনাপোল বন্দরে

ছবি: বার্তা২৪, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি রাজস্ব আয় বেনাপোল বন্দরে

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ১২ বছর পর রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার পর তা রেকর্ড ছুঁয়েছে, বেনাপোল কাস্টমস হাউস। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আমদানি পণ্য থেকে এনবিআর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৫ হাজার ৯শ ৪৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৬ হাজার ১শ ৬৫ কোটি টাকা।

এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২শ ১৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বেশি আর শতকরা প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি। 

এসময় এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ২১ হাজার ৭শ ৮০ মেট্রিক টন পণ্য।

বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে এ অর্জন পদ্মাসেতুতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে কাস্টমস বন্দরের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বন্দরে নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যসংশিষ্টরা।

১৩ স্থলবন্দরের মধ্যে বেশি রাজস্ব আয় হয় বেনাপোলে
রাজস্ব আয়ের দিক থেকে চট্রগ্রাম সমুদ্র বন্দরের পর বেনাপোল স্থলবন্দরের অবস্থান। দেশের চলমান ১৩টি স্থলবন্দরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য হয় আর রাজস্ব আসে বেনাপোল বন্দর থেকে।

তবে আরো বেশি বাণিজ্যের চাহিদা থাকলেও সুষ্ঠু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা আর অবকাঠামোগত নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারতেন না আমদানিকারকেরা। এতে গত ১২ বছর ধরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছিলেন না কাস্টমস হাউস, বেনাপোল।

অবশেষে, ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে বর্তমান সরকার সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো উন্নয়ন করে বেনাপোল বন্দরে আর সেইসঙ্গে পদ্মা সেতুর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় অন্য বন্দর ব্যবহারকারীরাও আমদানি শুরু করেন বেনাপোল দিয়ে। এর সুফল পেলো এ যাবত কালের সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়ে রেকর্ড গড়ে বেনাপোল কাস্টমস হাউস।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ২১ হাজার ৭শ ৮০ মেট্রিক টন পণ্য, ছবি- বার্তা২৪.কম


যেসব পণ্যে রাজস্ব আয় বেশি

বিদায়ী অর্থবছরে (২০২৩-২৪) সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে, ফেব্রিকস, পচনশীল দ্রব্য, ইংগড, ট্রাক চেচিস, মোটরপার্টস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাঁচামাল থেকে আর সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল আমদানিকারক পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বিডি, এসএমসিএল নিলয়এসএম করপোরেশন

আমদানিকারক আব্দুস সামাদ জানান, ৫ ঘণ্টায় এখন সহজে বেনাপোল থেকে পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে। পদ্মাসেতু চালুর আগে ফেরিতে যানজট ও ঘন কুয়াশার কারণে দুইদিন পর্যন্ত সময় লাগতো। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে যারা অন্য বন্দর ব্যবহার করতেন তারা এখন বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করছেন। এটাও রাজস্ব বৃদ্ধির বড় একটা কারণ।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, এ বছরের শেষের দিকে বেনাপোল বন্দরে নির্মাণাধীন কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল চালু হবে। এতে ব্যাপক সুবিধা সৃষ্টি হবে বন্দরে। তখন এপথে রাজস্ব আয় আরো বাড়বে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট কাস্টমসবিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বিপুল জানান, পদ্মাসেতুর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে গত বছর সক্রিয় ছিল কাস্টমস।

তিনি বলেন, বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে ব্যবসায়ীরা বেনাপোল বন্দর বেশি ব্যবহার করেছেন।

বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক রেজাউল করিম জানান, রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে কাস্টমসের পাশাপাশি বন্দরেরও ভূমিকা রয়েছে। তাদের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, বন্দরে অটোমেশন প্রক্রিয়া চালু, অবকাঠামো উন্নয়ন ও পণ্যের ওজন স্কেলের সঠিক পরিমাপের কারণে রাজস্ব আয়ে এবার রেকর্ড গড়েছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার রাফেজা সুলতানা জানান, রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে বর্তমান কাস্টমস কমিশনারের সঠিক দিকনির্দেশনা ও কাজের স্বচ্ছতার কারণে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা এ বছর ছাড়িয়ে গেছে।

এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য থেকে সরকারের রাজস্ব এসেছিল ৫ হাজার ৭শ ৮৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে ঘাটতি দেখা দেয় ১ হাজার ৪শ ৫০ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে কাস্টমসে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৩শ ৯২ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ১ হাজার ১শ ৪৫ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ১শ ৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেশি আদায় হয়েছিল ৪৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা আবার ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ২শ ৩ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ১শ ৩৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৪শ ৫২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং ২০১১-১২ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১শ ৯৪ কোটি টাকা।

;

আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ঔষধ শিল্পের উন্নয়নে নীতিমালা চান ব্যবসায়ীরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
এফবিসিসিআই’র স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা

এফবিসিসিআই’র স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা

  • Font increase
  • Font Decrease

আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ঔষধ শিল্পের বিকাশ, উন্নয়ন এবং রফতানি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারের নীতি সহায়তা চান এই খাতের ব্যবসায়ীরা। দেশে আয়ুর্বেদিক এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধ তৈরির উপকরণ ও কাঁচামাল সহজলভ্য করা, বিলুপ্ত প্রায় ঔষধী গাছ সংরক্ষণ এবং ভেষজ বনায়ন গড়ে তোলা, হার্বাল পণ্যের ব্র্যান্ডিং, পণ্য উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণসহ প্রযুক্তির প্রয়োগ ও গবেষণায় সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে এফবিসিসিআই’র মতিঝিল কার্যালয়ে আয়ুর্বেদিক এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধ শিল্প বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এই আহ্বান জানান ব্যবসায়ী নেতারা।

উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ হার্বাল প্রোডাক্টস ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. আলমগীর মতি। কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআই’র পরিচারক এবং ইউনিভার্সেল টেকনোলজি বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়্যারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক খাতের বাণিজ্যিক এবং রফতানি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এফবিসিসিআই নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে। খাতের প্রতিবন্ধকতা সমূহ চিহ্নিতকরণ এবং তার সমাধানে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করার আশ্বাস দেন তিনি। এ জন্য, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক শিল্পের উদ্যোক্তাদের কাছে যৌক্তিক প্রস্তাবনা আহ্বান করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

এ সময় এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, হার্বাল ঔষধ, খাদ্যদ্রব্য এবং কসমেটিকস শিল্পে শতভাগ স্থানীয় ভ্যালু অ্যাডিশনের সুযোগ রয়েছে। সারাবিশ্বেই হার্বাল এবং হালাল পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই বাজার ধরতে হলে উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তি ও গবেষণায় বিনিয়োগে মনযোগী হতে হবে। এ সময়, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক শিল্পের টেকসই উন্নয়নে সকল অংশীজনকে সাথে নিয়ে দ্রুত একটি কৌশলপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন মো. আমিন হেলালী।

আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ঔষধ শিল্পের মেডিক্যাল রেকর্ড এবং ডেটা কালেকশনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ প্রীতি চক্রবর্তী। হার্বাল পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণেও এই খাতের উদ্যোক্তাদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আয়ুর্বেদিক শিল্পের অবকাঠামো, হিমাগার ও সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং সরকারি উদ্যোগে সারা দেশে ঔষধী বনায়ন গড়ে তোলার ওপর আলোকপাত করেন কমিটির চেয়ারম্যান ডা. আলমগীর মতি।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালকবৃন্দ, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ।

;

‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডিএসই টেকনোলজি হাব হিসেবে কাজ করবে’



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু

ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু

  • Font increase
  • Font Decrease

স্টক এক্সচেঞ্জ ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের (ইএসএস) মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শততম ইস্যু হিসেবে টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের শেয়ার প্রো-রাটার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেয়া হয়৷।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ডিএসই ট্রেনিং একাডেমিতে এই বরাদ্দ প্রদান করা হয়। শততম ইস্যুর শেয়ার বরাদ্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাওিক আহমেদ শাহ, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খাইরুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ, টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জালাল উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের উপ-মহাব্যবস্থাপক হাসনাইন বারী, সিডিবিএলের মহা-ব্যবস্থাপক রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী এবং ডিএসই’র লিস্টিং অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের সহকারি মহাব্যবস্থাপক মো. রবিউল ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানসমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ৷

ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশের চিন্তা করছেন তার একটি ছোট নমুনা হলো ইএসএস সফটওয়্যারের ১০০তম ইস্যু পরিচালনা। ডিএসই স্মার্ট বাংলাদেশের অটোমেশনের হাব হতে পারে। বিশ্বব্যাপী ক্যাপিটাল মার্কেট ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চলছে। এখন পুঁজিবাজারের অধিকাংশ কাজ টেকনোলজির মাধ্যমে চলছে। আজকে ইএসএস সিস্টমে যে সফটওয়্যারটি ব্যবহার করছি তা দেশীয় একটি সফটওয়্যার। স্মার্ট বাংলাদেশ সেদিন বাস্তবায়িত হবে যেদিন আমরা নিজস্ব টেকনোলজি ব্যবহার করে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবো। এই ইএসএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে শুধু অর্থ সাশ্রয় করিনি। এতে আইপিও প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। একইসাথে এর মাধ্যমে আমরা সুশাসন নিশ্চিত করতে পারছি। আশা করছি ভবিষ্যতে এই সফটওয়্যার আরও বড় পরিসরে আসবে। বর্তমানে রাইট শেয়ার ইস্যুর বিষয়টি এই সফটওয়্যারে যুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বিএসইসি’র অনুমোদনের পর এই সফটওয়্যার পূর্ণতা পাবে বলে আমি মনে করেন।

প্রো-রাটা পদ্ধতিতে ইএসএস-এর মাধ্যমে শেয়ার বরাদ্দের শততম ইস্যু টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। এটি ডিএসই’র একটি মাইলফলক৷ আমরা গর্বিত ইএসএস-এর মাধ্যমে শততম ইস্যু শেয়ার বরাদ্দ করতে পেরে৷ ইলেকট্রোনিক সাবসক্রিপসন সিস্টেম (ইএসএস) সফটওয়্যারে নতুন যে মডিউল তৈরি করা হয়েছে, তা শেয়ার বরাদ্দের আধুনিক পদ্ধতি। যা দেশের পুঁজিবাজার, বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ের জন্য একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এর ফলে খুবই অল্প সময়ে আইপিও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়৷ এই পদ্ধতিতে খুবই সহজে, স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে শেয়ার বরাদ্ধ দেয়া যায়৷

পরিশেষে, আমি আশা করি কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে যে মূলধন উত্তোলন করেছে তা সঠিকভাবে ব্যবহার করে তাদের ব্যবসাকে আরো সম্প্রসারণ করবে৷

তার আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্যে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সাত্বিক আহমেদ শাহ বলেন, শুরুতে ইএসএস বিদেশি সংস্থার সহযোগিতায় যাত্রা শুরু হলেও, ২০১৬ সাল থেকে স্টক এক্সেচেঞ্জের নিজস্ব মেধা ও দক্ষতায় ইএসএস সফটওয়্যার তৈরি হয়েছে। রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স এবং স্বল্প সময়ে শেয়ার বন্টন নিশ্চিতকরণে ইএসএস পুঁজিবাজারের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনামূলক বিভিন্ন রেগুলেটরি আপগ্রেডেশন, এমেন্ডমেন্ট স্বল্প সময়ে ইএসএস-এ সংযোজনের সক্ষমতা সত্যি প্রশংসনীয়। ইএসএস ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং টেকসই পুঁজিবাজার গঠনে গতিশীল অবদান রাখবে।

টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিএসই ও ইস্যু ম্যানেজারদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমাদের ডিএসইতে তালিকাভুক্তির কার্যক্রম চালু হয়েছে। আমি চাই নতুন নতুন মেডিসিন প্রোডাক্টগুলো বাংলাদেশে তৈরি হোক। এই কোম্পানির আইপিওতে ২৪.৬৪ গুণ বেশি সাবস্ক্রিপশন হয়েছে। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আমি আশা করি, আমরা বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিতে পারবো।

সিএসই’র উপ-মহাব্যবস্থাপক হাসনাইন বারী বলেন, আজকে ইএসএস এর মাধ্যমে ১০০তম সাবসক্রিপশন। এ সফটওয়্যারটি মূলত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর জন্য তৈরি হয়েছিল। এখন এটি একটি মাল্টিপারপাস এপ্লিকেশন হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। আগে এই বিষয়ে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হতো এখন আমাদের এই খরচ অনেক কমে গেছে।

সিডিবিএল-এর মহাব্যবস্থাপক রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সিডিবিএল ক্যাপিটাল মার্কেটে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। সিডিবিএল সবসময় অনেক উদ্ভাবনীর সাথে থাকে। ইএসএস-এর খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে সিডিবিএল কাজ করে যাচ্ছে। সিডিবিএল ইএসএসকে বিনিয়োগকারীদের তথ্যের ভেরিফিকেশন প্রদান করে। আমরা সিডিবিএল ইএসএস-এর একটি পার্ট হতে পেরে খুবই আনন্দিত।

ডিএসই’র লিস্টিং ডিপার্টমেন্টের সহকারি মহাব্যবস্থাপক মো. রবিউল ইসলাম ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম (ইএসএস) সম্পর্কে বলেন, সফটওয়্যারটির ২০০৯ সালে পাবলিক ইস্যু রুল অনুযায়ী প্রবর্তন করা হয়, ১ মার্চ, ২০১০-এ দুবাই ভিত্তিক "ইনফোটেক মিডল ইস্ট" দ্বারা তৈরি করা হয় । সফটওয়্যারটির তৈরি ব্যয় ছিল ৭০,৮৭৫ ডলার এবং বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি ছিল ৪৫,৩৬০ ডলার (প্রথম ৩ বছর) এবং পরবর্তী বছরগুলোর জন্য ১৭,৭১৮ ডলার। বিশাল খরচ কমাতে এবং পাবলিক ইস্যু বিধিগুলির ঘন ঘন সংশোধনের জন্য, ডিএসই ২০১৪ সালে ডিএসই'র অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তাদের দ্বারা সাম্প্রতিক প্রযুক্তি এবং আরও উন্নত বৈশিষ্ট্যসহ নতুন বুক বিল্ডিং সিস্টেম তৈরি করেছে যা বর্তমানে ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম নামে পরিচিত। সিস্টেমটি ডিএসই ও সিএসই উভয় এক্সচেঞ্জের মালিকানাধীন।

পরবতী‍র্তে ডিএসই’র লিস্টিং ডিপার্টমেন্টের সহকারি মহাব্যবস্থাপক মো. রবিউল ইসলাম প্রো-রাটার ভিত্তিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য মোট ১০০ কোটি টাকার বিপরিতে ২৪৮৭ কোটি ১৮ হাজার ১০৪ টাকার আবেদন জমা পড়ে, যা ২৪.৬৪ গুণ বেশি। প্রতি ১০,০০০ টাকা আবেদনের বিপরীতে নিবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীগণ ১১টি শেয়ার এবং অনিবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীগণ ২০টি শেয়ার বরাদ্দ পায়।

ডিএসই’র প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খাইরুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ বলেন, আজকের ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের মাধ্যমে ১০০তম ইস্যুতে টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের আইপিও-তে সর্বোচ্চ ২৪শত কোটি টাকার সাবস্ক্রিপশন একটি মাইলফলক তৈরি করেছে। আমি আশা করি এটি আমাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অনুপ্রাণিত করবে। এছাড়াও তিনি আশা পোষণ করেন কোম্পানিটি সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলবে এবং বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণ করবে। ডিএসইর পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।

;

এশিয়ান পেইন্টসের উদ্যোগে ‘কালার অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত, এশিয়ান পেইন্টসের উদ্যোগে ‘কালার অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত, এশিয়ান পেইন্টসের উদ্যোগে ‘কালার অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা

  • Font increase
  • Font Decrease

এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম পেইন্ট প্রস্তুতকারক এশিয়ান পেইন্টস বিশ্বব্যাপী অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বিশদ গবেষণার ভিত্তিতে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ‘কালার অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করেছে।

এ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- এশিয়ান পেইন্টস ইন্টারন্যাশনালের চিফ এক্সিকিউটিভ প্রজ্ঞান কুমার এবং এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশের অন্যান্য সদস্যরা।

সেইসঙ্গে বাংলাদেশের বিশিষ্ট স্থপতি, ডিজাইনার এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এশিয়ান পেইন্টস প্রতি বছর বিভিন্ন সৃজনশীল শাখার বিশেষজ্ঞ যেমন- স্থপতি, শিল্পী, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার এবং মিডিয়া, সমাজবিজ্ঞান ও ফ্যাশনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ‘কালার নেক্সট’ তৈরি করে।

এটি একটি বিস্তৃত রিপোর্ট, যা বিশ্বজুড়ে রঙ, উপকরণ, টেক্সচার ফিনিশ এবং ট্রেন্ডের ডিজাইন দিকনির্দেশনা তুলে ধরে। ২০০৩ সাল থেকে এশিয়ান পেইন্টস রঙ ও উপকরণ নিয়ে গবেষণা করে আসছে। এতে প্রতিষ্ঠানটি নিত্যনতুন ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘কালার নেক্সট’ এশিয়ার অন্যতম এবং অনন্য রঙ ও উপকরণের নির্দেশিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়ান পেইন্টস বাংলাদেশের একমাত্র হোম ডেকোর কোম্পানি, যারা ট্রেন্ডগুলো নিয়ে গবেষণা করে এবং গ্রাহকদের তৃপ্তি এবং সন্তোষ এনে দিতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

২০২৪ সালের ইভেন্টে ‘কালার অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়: টেরা

বাংলাদেশের উর্বর ভূমি এবং উষ্ণ মাটি থেকে অনুপ্রাণিত এই রঙটি, যাতে রয়েছে সমৃদ্ধ এবং মাটির টোন। এটির মাধ্যমে স্থিরতা, উষ্ণতা এবং মাটির সঙ্গে গভীর সম্পর্ক প্রতীক হিসেবে প্রতিফলিত হয়, যা দেশের কৃষি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন। ‘টেরা’ স্বাচ্ছন্দ্য এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে আদর্শ।

বিজ্ঞপ্তিতে ইভেন্ট সম্পর্কে আরো বলা হয়, এই ইভেন্টে আরো চারটি প্রেরণামূলক কালার ট্রেন্ড উঠে আসে। সেগুলি হচ্ছে- সয়েল- যেটির অভিনব উপাদান ডিজাইন ও সৃজনশীলতায় উৎসাহ জোগায়; ইন্টু দ্য ডিপ- এটি অপরূপ সমুদ্রের গভীরতা ও এর নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রতি মুগ্ধতা বাড়িয়ে তোলে; রেট্রোফিউচারিজম- যা চিরচেনা ল্যান্ডস্ক্যাপ, ফোকলোর গল্পের মাধ্যমে ভবিষ্যতকে বুঝতে সাহায্য করে; এবং গবলিন মোড- যা কি না নিখুঁত হওয়ার তাড়নাকে দমন করে নিজেকে খুঁজে পাওয়াকে নির্দেশ করে।

এই উৎসবময় ইভেন্টে এশিয়ান পেইন্টস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী প্রজ্ঞান কুমার বলেন, বর্ণিল, মুগ্ধকর ও সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই রঙগুলো নিয়ে গ্রাহক ও ভোক্তাদের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে।

তিনি বলেন, এশিয়ান পেইন্টস প্রতিনিয়ত গ্লোবাল ট্রেন্ড এবং সেগুলোর লোকাল সম্পৃক্ততা বিশ্লেষণ করে, যা ভোক্তাদের সামগ্রিক চাহিদার প্রতিফলন ঘটায় ও ডিজাইনকে অনুপ্রাণিত করে। এই রিপোর্টে চলতি ‘ট্রেন্ড’গুলি সামনে নিয়ে আসতে স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যতবান্ধব, কার্যকর, নান্দনিক রঙ ও টেক্সচার তৈরির মাধ্যমে অভিনবত্বকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, যা সাধারণ মানুষের লাইফস্টাইলকে আরো সমৃদ্ধ করবে।

;