যে কোনো সময় যুক্ত হচ্ছে কৈলাশটিলার ২১ মিলিয়ন গ্যাস

  • সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত,  কৈলাশটিলার গ্যাস ফিল্ড

ছবি: সংগৃহীত, কৈলাশটিলার গ্যাস ফিল্ড

গ্যাস সংকটে নাকাল অবস্থায় সুখবর নিয়ে হাজির হয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির কৈলাশটিলা-৮। দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রস্তুত কূপটি। যে কোনোদিন উদ্বোধন করা হবে বলে জানা গেছে।

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

কৈলাশটিলা গ্যাস ক্ষেত্রের মালিকানায় রয়েছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড (এসজিএফসিএল)। কৈলাশটিলা-৮ নম্বর কূপ খনন করার জন্য রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্সকে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়।

বাপেক্স চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি কূপটির খনন কাজ শুরু করে। কূপটির ৩ হাজার ৪শ ৩৮.৪ মিটার গভীরতা থেকে ৩ হাজার ৪শ ৪৬.৫ মিটার পর্যন্ত গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

২৪ মে ডিএসটি (ড্রিল স্টেম টেস্ট) এবং প্রোডাকশন টেস্টিংয়ে কূপ মুখে ফ্লোয়িং প্রেসার ৩ হাজার ৩শ ৮৩ পিএসআই (প্রেসার বর্গ ইঞ্চি) পাওয়া যায়। কূপটি থেকে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয়েছে।

মে মাসে এসজিএফসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, গ্যাস গ্যাদারিং পাইপ নির্মাণ শেষ। আগামী ৩ মাসের মধ্যে কূপটি থেকে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ২ মাসের মধ্যেই গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রস্তুত হয়েছে কূপটি।

সুখবর নিয়ে হাজির হয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির কৈলাশটিলার ৯টি কূপ ছবি- সংগৃহীত


এসজিএফসিএল জানিয়েছে, কৈলাশটিলার অবশিষ্ট উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুত রয়েছে ১ হাজার ৯শ বিলিয়ন ঘনফুট। ৮ নম্বর কূপে প্রাপ্ত হরাইজোন ৪-এর গ্যাস মজুত ২৪-২৫ বিলিয়ন ঘনফুট, যা নতুন মজুত হিসেবে যুক্ত হলো।

নতুন সংযোজিত গ্যাসের দাম ১ হাজার ৬শ ২০ কোটি টাকা (প্রতি ঘনমিটার ২২.৮৭ টাকা বিবেচনায়)। অন্যদিকে, কূপটির খনন কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১শ ৭২ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ গ্যাস সংকটে নাকাল। একদিকে দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলোর উৎপাদন কমে আসছে, অন্যদিকে আমদানিকৃত গ্যাসের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে। এক সময় দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে দৈনিক ২ হাজার ৮শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যেতো।

গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত উৎপাদন কমে যাচ্ছে। উৎপাদন কমতে কমতে ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। সংকট সামাল দিতে বিদেশ থেকে ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট (এলএনজি আকারে) গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। তারপরও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না ঘাটতি পূরণ করতে। দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে দৈনিক ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি করা হয়।

ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’-এ সামিট গ্রুপের ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই এফএসআরইউটি (ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট) থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সারাদেশেই তার প্রভাব পড়েছে।

১৫ জুলাই নাগাদ এ পাইপ চালু হওয়ার কথা ছিল কিন্তু মেরামত না হওয়ায় এখনো সার্ভিসের বাইরে রয়েছে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি। আমদানি করতে টেকনিক্যাল জটিলতার পাশাপাশি বিদেশ থেকে উচ্চদরে এলএনজি আমদানি ব্যয় সামাল দিতে গিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তেমন একটি সময়ে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া বিশাল স্বস্তির খবর বলে মানতে হবে।

কৈলাশটিলার পাশাপাশি বন্ধ থাকা সিলেট-৭ নম্বর কূপে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। কূপটির ওয়ার্কওভার কাজ শুরু হয়েছে। দৈনিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে আশা করা হচ্ছে।