পুঁজিবাজারে ক্রান্তিকাল চলছে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বক্তব্য দিচ্ছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেন,ছবি: শাহরিয়ার তামিম

বক্তব্য দিচ্ছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেন,ছবি: শাহরিয়ার তামিম

পুঁজিবাজারে এখন ক্রান্তিকাল চলছে (ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড) বলে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেন।

বিভিন্ন ইস্যুতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে টানা নয় মাস ধরে থেমে থেমে দরপতনে বিনিয়োগকারীদের অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকার পুঁজি উধাও হওয়ার পর তিনি এ কথা স্বীকার করেছেন।

বিজ্ঞাপন

খায়রুল হোসেন বলেন, ‘পুঁজিবাজার এখন ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড পার করছে। আমার অনেক কাজ করছি। তাতে কাজ করতে গিয়ে ভুল হচ্ছে। আবার সংশোধন করছি। তবে আশা করছি, আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজার ভালো হবে। ভালো সুফল দেখতে পারবেন। দেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান ৪০-৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।’

সোমবার (০৭ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘ডিএসই এসএমই ও ভি-নেক্স প্লাটফর্মের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন
dse
ডিএসই এসএমই ও ভি-নেক্স প্লাটফর্ম উদ্বোধন করেন অতিথিরা, ছবি: শাহরিয়ার তামিম

 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম। অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার ও নির্বাহী পরিচালক, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভি-নেক্সট প্লাটফর্মের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সহযোগিতায় এগিয়ে যাবে। তখন একটি কোম্পানি আন্তর্জাতিকভাবে মূল্যায়িত হবে। সেসব কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা সহজ হবে। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত করতে আগ্রহী হবে। কারণ তারাও চাইবে ক্যাপিটালের রিটার্ন। আর এ কাজটি সহজ করা হবে।’

‘ভি-নেক্সটের মাধ্যমে চীন থেকে শুরু করে সব দেশ থেকেই বিনিয়োগ আসবে। একই সঙ্গে করপোরেট সংস্কৃতি আসবে। এছাড়া আমাদের দেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট, চার্টার্ড সেক্রটারিজসহ যেসব দক্ষ জনবল গড়ে উঠবে, তাতে করে ভবিষ্যৎ পুঁজিবাজার নিয়ে আমি আশাবাদী। ডিএসই যে এসএমই বোর্ড তৈরি করেছে, এগুলোর কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে পরিচালনা করে উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইস্যু ম্যানেজারদেরকেও তাদের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে পরিচালনা করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।

ডিএসইকে উদ্দেশ্য করে খায়রুল হোসেন বলেন, ‘ভি-নেক্সট মার্কেটটি যেন হুজুগের কারণে নষ্ট না হয়। আমার অনুরোধ থাকবে, প্রথম থেকেই আপনারা সচেতন থাকবেন। একই সঙ্গে আমরা আশা করব, ডিএসই শিগগিরই অটোমেটিক ট্রেডিং বোর্ড চালু করবে। যেখানে ওটিসি মার্কেট থেকে শুরু করে বন্ড মার্কেটের ট্রেডিং শুরু হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজার আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের ও উন্নত দেশের বাজারের সমতুল্য হবে। এছাড়া আগামী দু্ই-তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশের বাজার নতুন স্তরে উন্নীত হবে। তখন জিডিপিতে অংশগ্রহণ বেড়ে যাবে।’

‘২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আমাকে ডেকে বললেন, আইটি খাতের কোম্পানিগুলোর জন্য ৫০ কিংবা ১০০ কোটি টাকার দরকার নেই, পাঁচ-১০ কোটি টাকা সংগ্রহে বিএসইসি কাজ করতে পারে। তখনই আমরা মাত্র ছয় মাসে একটি আইন প্রণয়ন করি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর রুলস করি। যাতে করে স্মল প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। পরে ডিএসই সেটা প্রতিষ্ঠা করেছে। আর এটাকে স্বার্থক করতে আজ এসএমই ও ভি-নেক্সট প্লাটফর্ম উদ্বোধন করেছি। যা অচিরেই পুঁজিবাজারে গভীরতা বাড়াবে,’ বলেন খায়রুল।