প্রথম ধাপে কলেজ পাননি ৪৭ হাজারের‌ বেশি শিক্ষার্থী

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে অনলাইন আবেদনে প্রথম ধাপের ফল প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ৪৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেও কলেজ পায়নি। এদিকে, জিপিএ ফাইভ পেয়েও কলেজ পায়নি ৭ হাজার ৫৯৯ জন। এছাড়া দেশের ২২০টি কলেজে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীও আবেদন করেননি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবেদনের সময় কম কলেজ নির্বাচন করা এবং ফলাফল অনুযায়ী প্রত্যাশিত কলেজ নির্বাচন না করায় এমন হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৩ জুন) রাতে প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সূত্র জানা যায়, ফলাফলে দেখা গেছে গত ২৬ মে থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত একাদশে ভর্তি হতে অনলাইনে আবেদন করেন ১৩ লাখ ৩৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পছন্দের কলেজ পেয়েছেন ১২ লাখ ৮৭ হাজার শিক্ষার্থী। বাকি ৪৮ হাজার শিক্ষার্থী প্রথম ধাপে কোনো পছন্দের কলেজ পাননি। কলেজ না পাওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফল বলে বিবেচিত জিপিএ-৫ শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৮ হাজারের বেশি। আর একজন শিক্ষার্থীও পায়নি এমন কলেজের সংখ্যা ২২০টি।

যে কারণে কলেজ পাননি জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা-

ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী-একজন শিক্ষার্থী তার এসএসসির ফলাফল ও অনলাইন আবেদনের সময়ে দেয়া পছন্দক্রমের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন। একজন শিক্ষার্থী ১০টি কলেজ পছন্দক্রমে দিতে পারেন। অনেকে পছন্দের দুই, তিন বা চারটি কলেজ পছন্দক্রমে দিয়েছেন। মূলত তাদের সেই কলেজগুলোতে আসন শূন্য না থাকায়, তারা ভর্তির সুযোগবঞ্চিত হয়েছেন।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার ঠিক একই কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের নজর ছিল দেশের ভালো কলেজগুলোর দিকে। তারা হাতেগোনা কয়েকটি কলেজ পছন্দক্রমে দিয়েছেন। যেখানে সবার আকর্ষণ বেশি। এজন্য সেখানে প্রতিযোগিতাও বেশি ছিল। আর সেসব কলেজে জিপিএ-৫ প্রাপ্তরাই কেবল চান্স (সুযোগ) পান। অনেক সময় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্য থেকে নম্বরের হিসাবে সামনের কয়েকজন সুযোগ পান। আর জিপিএ-৫ পেয়েও নম্বর কম থাকায় অনেকে বাদ পড়েছে।

তিনি আবারও বলেন, কলেজ পছন্দের সময় সব ভালো মানের কলেজকে পছন্দ দিয়েছেন যেমন শিক্ষার্থীরা, তেমনি তাদের উচিত ছিল তার প্রাপ্ত নম্বরের দিকে নজর রেখে কলেজ পছন্দ দেয়া।

কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীদের বর্তমানে করণীয়-

প্রথম ধাপে আবেদন করে যারা কলেজ পাননি, তাদের জন্য কী করণীয় তাও জানিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।

এ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, এসব শিক্ষার্থীদের আবেদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্বিতীয় ধাপে চলে যাবে। এখন শিক্ষার্থীদের শুধু অনলাইন আবেদনে গিয়ে পছন্দক্রমে পরিবর্তন আনতে হবে। পরামর্শ থাকবে, তারা যেন পছন্দক্রমে নতুন কিছু কলেজ যোগ করেন। তবে কলেজ আসনের কোনো সংকট নেই। সব শিক্ষার্থীই ভর্তি হতে পারবেন।

এদিকে প্রথম ধাপে আবেদন করে কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীদের দ্রুত কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। প্রথমেই তাদেরকে ৩৩৫ টাকা ফি পরিশোধ করে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ‘ফি ‘ পরিশোধ করতে কারও অসুবিধা হলে সরাসরি বিকাশের মাধ্যমে নিশ্চায়ন ফি দিয়েও নিশ্চায়ন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

কেউ যদি প্রথম ধাপে কাঙ্ক্ষিত কলেজ না পান, সেক্ষেত্রেও তাকে প্রাথমিক নিশ্চায়ন করতে হবে। ২৯ জুন রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক নির্বাচন নিশ্চায়ন করতে পারবেন। এরপর তিনি মাইগ্রেশনের সুযোগ পাবেন। ৪ জুলাই পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে।

দ্বিতীয়-তৃতীয় ধাপে আবেদন ও ফল-

৩০ জুন থেকে দ্বিতীয় ধাপে আবেদন শুরু হবে, যা চলবে ২ জুলাই পর্যন্ত। ৪ জুলাই রাত ৮টায় দ্বিতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হবে। এরপর টানা চার দিন চলবে দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিতদের নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া। ৯ ও ১০ জুলাই তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হবে। এ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ১২ জুলাই রাত ৮টায়। তিন ধাপে আবেদনের পর ফল প্রকাশ, নিশ্চায়ন ও মাইগ্রেশন শেষে ১৫ জুলাই থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে আগামী ৩০ জুলাই।

চলতি বছর সব শিক্ষা বোর্ড (সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) মিলিয়ে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী ছিল ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। সব মিলিয়ে এবার প্রায় ১০ লাখ আসন ফাঁকা থাকবে।