চলছে হরতাল-ভোটগ্রহণ, পাহারায় ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য

  ভোট এলো, এলো ভোট


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক পাহারা

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক পাহারা

  • Font increase
  • Font Decrease

সব জল্পনা কল্পনা আর উদ্বেগকে পেছনে ফেলে শুরু হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। ঘড়ির কাটায় সকাল ৮টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। গত কয়েক ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার ঘটনা ঘটায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য কেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরে পাহারায় রয়েছেন, নজরদারি করছেন বিভিন্ন সংস্থার গোয়েন্দারা।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয় আর তা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য। যা গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এক লাখ ৩০ হাজার বেশি।

এদিকে ‘একতরফা’ নির্বাচন বর্জন ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি চলছে। 

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৬টা পর্যন্ত এ হরতাল চলবে।


আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবকিছু করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। কেউ নাশকতা করে পার পাবে না। ইউনিফর্মে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য এবং সাদা পোশাকে ভোটকেন্দ্রের আশপাশেসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গোয়েন্দারা কাজ করছে। এছাড়া হরতালের নামে যদি কেউ নাশকতা করার চেষ্টা করে তবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রেও বাধা দিলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ নির্বাচনে যেমন বিএনপি নেই, তেমনি নেই আরও কিছু উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক দল। ফলে এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঠে নামিয়ে নির্বাচন জমজমাট করার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর বাইরে জাতীয় পার্টি ছাড়াও নির্বাচনে আছে বেশকিছু দল। আট বিভাগের ৬৪ জেলায় ২৯৯ সংসদীয় আসনে ভোট উৎসব হচ্ছে।

নাশকতাকারীর তথ্য দিলে ‌‘লাখ টাকা পুরস্কার’

নির্বাচনে দেশের কোথাও নাশকতাকারীদের সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

২৪ ঘণ্টায় ১৪ জেলায় ২১ ভোটকেন্দ্রে আগুন:

শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের অন্তত ২২ জেলায় ৪১টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৪ জেলার ২১টি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। একই সময় চার জেলায় চার নির্বাচনী ক্যাম্প ও দুই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, সাত জেলায় ১১টি যানবাহন ও তিন জেলায় অন্তত তিনটি স্থাপনায় (ভোটকেন্দ্র নয় এমন বিদ্যালয়) আগুন লাগানো হয়েছে। এছাড়া দুই জেলায় ভাঙচুর করা হয়েছে ২২টির মতো যানবাহন।

বিরোধীদের এ কর্মসূচি চলাকালে শনিবার বগুড়ায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালীতে দলটির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের। আর রাজশাহী, কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুরে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। চট্টগ্রামের দুই স্থানে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে ত্রিভুজাকৃতির লোহার পাত ফেলে রাখায় চাকা পাংচার হয়ে বিকল হয় ৮০টির মতো যাত্রীবাহী ও পণ্যবোঝাই গাড়ি।


রেকর্ড সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তবুও শঙ্কায় ভোটাররা:

এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুলিশের এক লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৭ জন, আনসার ব্যাটালিয়নের ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮৮, সশস্ত্র বাহিনীর ৪০ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। ভোটগ্রহণ ঘিরে এমন নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হলেও মাঠ পর্যায়ে উত্তাপ ও সংশয় দুই-ই বিরাজ করছে। এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্রে হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অনেক স্থানে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের ভয় দেখানো, ক্যাম্প ভাঙচুরসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর গোপীবাগে আন্তঃনগর বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দেওয়া আগুনে ঝরেছে চারজনের প্রাণ।

৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা বলয়:

নির্বাচনে ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র ও দুই লাখ ৬০ হাজার ৮৫৬টি ভোটকক্ষ রয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ-আনসারের ১৫-১৭ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় পৌনে সাত লাখ সদস্য শুক্রবার মাঠে নেমেছেন। এদিন ৬৫৩ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও নেমেছেন। তারা নির্বাচনী অপরাধ দেখলে তাৎক্ষণিক সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার করবেন।

ভোটে চালকের আসনে ৬৬ রিটার্নিং অফিসার:

ভোট নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু করতে চালকের ভূমিকায় ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর মধ্যে আছেন ৬৪টি জেলার ৬৪ জন জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুজন বিভাগীয় কমিশনার। ৪২ হাজারের ভোটকেন্দ্রে রিটার্নিং অফিসার থেকে শুরু করে পোলিং অফিসার পর্যন্ত লক্ষাধিক নির্বাচনী কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। তার মধ্যে রয়েছেন ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার, ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং ৪২ হাজার ১৪৯ জন প্রিসাইডিং অফিসার। নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী, নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি অর্গানোগ্রাম অনুসরণ করা হয়। এতে সবার উপরে থাকেন রিটার্নিং অফিসার। রিটার্নিং অফিসারদের তত্ত্বাবধানেই সার্বিক ভোট প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়।

এ বিষয়ে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, যারা নির্বাচনে নাশকতার চেষ্টা করবে, মানুষের জানমালের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করবে, যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করবে, তাদের কঠোরভাবে দমন করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সুষ্ঠু ও নিরাপদে যাতে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে সেই এই লক্ষ্যে র্যাব কাজ করছে। আমরা প্রতিটি গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে, রিটার্নিং অফিসার সহকারী রিটানিং অফিসার এবং নির্বাচনের কাজ করে যাচ্ছি।

কমান্ডার মঈন বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় যে স্ট্রেনথ আমাদের ইন্টেলিজেন্ট আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকেই নাশকতার চেষ্টা করছে। নির্বাচনে যারা নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চাচ্ছেন তাদের বাধা দান করা বা নাশকতা সহিংসতার মতো বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে। যার প্রেক্ষিতে অনেককেই আমরা আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটকেন্দ্র ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভোটদানে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সারাদেশে পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ১৪৩ জন সদস্য মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশে ৪২ হাজার ১৪৯টি ভোটকেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা রক্ষায় পাঁচ লাখ পাঁচ হাজার ৭৮৮ জন সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে এবং শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীসহ সারাদেশে এক হাজার ১৫৫ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আমাদের মোতায়েন করা জনবল সারাদেশে ৪৮৭টি বেইজ ক্যাম্প থেকে দায়িত্ব পালন করছে। বিজিবির ৭০০ পেট্রোল দিন-রাত টহল দিচ্ছে।

তিনি বলেন, সারাদেশে বিজিবির র‌্যাপিড অ্যাকশন টিম (র‌্যাট), ডগ স্কোয়াড কাজ করছে। এছাড়া, আমাদের কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত আছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই টিমের সদস্যদের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ-আনসার, প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিং অফিসারা কাজ শুরু করেছেন। সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট, প্রশাসন মিলে আমরা নির্বাচন কমিশনের অধীনে সকলে মিলে দায়িত্ব পালন করছ। আশা করি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে সক্ষম হবো।

আইজিপি বলেন, স্ট্রাইকিং টিম, রিজার্ভ ফোর্স, মোবাইল টিম, কুইক রেসপন্স টিম, ডগ স্কোয়াড, র‍্যাবের হেলিকপ্টারসহ সমগ্র জনবল নিয়ে প্রস্তুত। নির্বাচন ঘিরে যে কোনো নাশকতা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নাশকতাকারীর তথ্য দিলে ২০ হাজার থেকে লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। তথ্যের গুরুত্ব অনুসারে সেই পুরস্কারের অর্থ ২-৩ লাখও হতে পারে। তবে তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রেখে, নাশকতাকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

   

উপজেলা নির্বাচন: প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন সানাউল



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন সানাউল

প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন সানাউল

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সানাউল হক মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. শাকিল আহমেদ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সানাউল হক বলেন, ব্যক্তিগত কারণে নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অন্য তিন প্রার্থী হলেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা ও আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য এইচএম খায়রুল বাসার।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন-উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মো. সোহেল রানা, গৌরীপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান শাহীন, ডৌহাখলা ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ পবিত্র ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহিরুল হুদা লিটন।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সালমা আক্তার রুবি, দিলুয়ারা আক্তার, পরশ মনি, নিলুফার ইয়াসমিন, তাসলিমা আক্তার কলি, মোছা. ফেরদৌসী নাসরিন।

আগামী ২১ মে গৌরীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মোট ভোটার দুই লাখ ৭৯ হাজার ৮৫৯ জন। মহিলা ভোটার এক লাখ ৩৮ হাজার ৪০ জন ও পুরুষ এক লাখ ৪১ হাজার ৪৮ জন।

  ভোট এলো, এলো ভোট

;

উপজেলা নির্বাচন: ১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার

১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল)। অফিস চলাকালীন সময়ে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধাপে ১৬০ উপজেলা ভোটে দুই হাজার ৫৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭৩০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৬২ জন। বাছাই-আপিল শেষ হওয়ায় বৈধ প্রার্থীদের কেউ নির্বাচন থেকে সরে যেতে চাইলে মঙ্গলবারই তার শেষ সময়।

এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি, যেখানে সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত রয়েছেন।

তফসিল অনুযায়ী, চূড়ান্ত প্রার্থীদের মাঝে রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ২ মে। আর ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।

নির্বাচন কমিশন এবার চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন করছে। প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮মে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৬ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দু’টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

  ভোট এলো, এলো ভোট

;

‘নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করলে, গুজব ছড়ালে রেহাই নেই’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করলে বা কোনো ধরনের গুজব ছড়ালে রেহাই নেই বলে সতর্ক করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি)ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

তিনি বলেন, আগামী ৮ মে চট্টগ্রামের সন্ধীপ, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আসন্ন উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উপহার দেওয়া হবে। নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে, অন্যথায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে। কেউ জাল ভোট দিতে আসলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টদের চ্যালেঞ্জ করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা আমরা দেব। গত সংসদ নির্বাচনে জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে জেলে পাঠানো হয়েছিল। জাল ভোট প্রদান, কেন্দ্র দখল বা অন্যান্য অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে কেউ কোনো ধরনের গুজব ছড়ালে ছাড় নেই। আমাদের দৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বলতে কিছু নেই। প্রার্থীরা যদি মনে করেন আছে, তাহলে তালিকা দিলে যাচাই-বাছাই করে দেখব, আশঙ্কার জায়গা থাকবে না।’

নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় পাশে থাকবে বলে প্রার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আইনের স্বপক্ষে থেকে যে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে সন্দ্বীপে নির্বাচনের আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলে জানান আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তবে অন্যান্য উপজেলার কেন্দ্রগুলোতে ভোটের দিন সকালে ভোট গ্রহণের আগে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিধিবিধান বা পরিপত্র মেনে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট কেন্দ্রে বা বাইরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যা যা করা দরকার তাই করব। কোনো অপশক্তির কাছে আমরা মাথা নত করব না।’

জেলা প্রশাসনের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহার বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে।’

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, ‘নির্বাচনে কেউ জয়ী হবে, কেউ পরাজিত হবে-এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সবাই আপনাদের পাশে আছে। নির্বাচনী এলাকায় অনুমতি ব্যতীত কোনো যানবাহন চলবে না। ভোটারদের কেন্দ্রে আনা-নেওয়ার জন্য যানবাহন ভাড়া করাও অবৈধ। আগামী ৮ মে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ৬ মে রাত ১২টায় বন্ধ হয়ে যাবে। কোনো পথসভা যাতে জনসভায় রূপ না নেয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘জাল ভোট, কেন্দ্র দখল বা অন্যান্য অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ নেই।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, ‘একজন প্রার্থীর পোস্টারের ওপর অন্য প্রার্থীর পোস্টার লাগানো যাবে না। নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও প্রার্থীরা বক্তব্য দেন।

  ভোট এলো, এলো ভোট

;

আচরণবিধি ভঙ্গ হলেই প্রার্থিতা বাতিল: ইসি হাবিব



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিন খান (অব.) বলেছেন, ‘ভোটকেন্দ্রে যদি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এটা একদম পরিষ্কার কথা।’

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে চুয়াডাঙ্গায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো প্রার্থীর যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে লিখিত আকারে রিটার্নিং তথ্য-প্রমাণ সহকারে অফিসারকে দেন। কেউ গন্ডগোল করছে ভিডিও করে ফেলেন, কেউ বাধা দিচ্ছে ভিডিও করে ফেলেন। যদি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এটা একদম পরিষ্কার কথা।

আহসান হাবিব খান বলেন, প্রত্যেক প্রার্থী আমাদের কাছে সমান। সেই প্রার্থী যদি একটা উঁচু দরের ব্যক্তির ভাই হয়, বোন হয় অথবা সেই প্রার্থী যদি একজন জেনারেল সাহেব হন, অথবা ওই প্রার্থী যদি একজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল হন, আমির-ফকির যেই হোক, আমাদের দৃষ্টিতে সকল প্রার্থীই সমান। আমরা ভালোকে ভালো বলব, খারাপকে খারাপ বলন। কোনো পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ আমাদের কারোর মাঝে পাবেন না।

তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা বেশি চেয়েছেন। আমরা বলেছি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগে, সব দিয়ে দেব। আমরা যে পর্যায়ে নির্বাচনটাকে নিয়ে গিয়েছি, সেখান থেকে কিন্তু আর নিচে নামব না, নামতে পারব না। দিন দিন কিন্তু আরও উপরের দিকে যেতে হবে। এটা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি, আপনার অঞ্চলের ভাবমূর্তি, জনগণের ভাবমূর্তি, বিদেশের কাছে দেশের ভাবমূর্তি।

ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেছেন- ইসি আহসান হাবিব।

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে সাংবাদিকদের কোনো অনুমতি লাগবে না। সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে যেতে পারবেন, ভিডিও করতে পারবেন। তবে লাইভ করতে হলে কক্ষের বাইরে বারান্দায় এসে করেন, কোনো অসুবিধা নেই। কারণ এই সাংবাদিকরাই কিন্তু আমাদের তৃতীয় চোখ-কান হিসেবে কাজ করছে।

ব্যালট পেপারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সিদ্ধান্তই নিয়েছি এখন থেকে যত নির্বাচন হবে, সব নির্বাচনে ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট যাবে।

প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব)।

  ভোট এলো, এলো ভোট

;