বগুড়ার দুই সাংসদসহ জামানত হারালেন ৪৫ প্রার্থী
ভোট এলো, এলো ভোটদ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার ৭টি সংসদীয় আসনে অংশ নিয়েছিলেন ৫৮ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে দু’জন সংসদ সদস্যসহ ৪৫জনই তাদের জামানত হারিয়েছেন।
বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) ও বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের দুই সাংসদ ছাড়াও এরমধ্যে রয়েছেন আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম।
বগুড়ার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান জানিয়েছেন, প্রতিটি আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগ ভোট না পেলে তার জামানত ফিরে পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেই হিসেবে বগুড়ায় ৫৮জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ১৩জন তাদের জামানতের টাকা ফেরত পাবেন। অবশিষ্ট ৪৫জন প্রার্থীর জামানত ফেরৎ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
জেলা নির্বাচন অফিসের সূত্র মতে, বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ১ লাখ ২১ হাজার ৭৮৩। এর ৮ ভাগের এক ভাগ ভোটের পরিমাণ ১৫ হাজার ২২৩। এই আসনের ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ৩ জন জামানতের টাকা ফেরত পাওয়ার মতো ভোট পেয়েছেন। অন্য যে ৭ জন জামানত হারালেন তারা হলেন- তৃণমূল বিএনপি’র এনএম আবু জিহাদ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের আনোয়ার হোসেন, জাতীয় পার্টির গোলাম মোস্তফা বাবু, বাংলাদেশ খেলাফত অন্দোলনর নজরুল ইসলাম, জাসদের হাসান আকবর আফজাল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক বিএনপি নেতা শোকরানা ও ইয়াছির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ।
বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ৮৯ হাজার ২৩৭। এর ৮ ভাগের এক ভাগ ভোটের পরিমাণ ১১ হাজার ১৫৫। এই আসনের ৭জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ২জন জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়ার মতো ভোট পেয়েছেন। অন্য যে ৫জন জামানত হারালেন তারা হলেন- তৃণমূল বিএনপি’র বজলুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মুনছুর রহমান শেখ, বিএনএফ’র বরকত উল্লাহ, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আকরাম হোসেন ও আল ফারাবী মো. নূরুল ইসলাম।
বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ১ লাখ ২১ হাজার ৩৯। এর ৮ ভাগের এক ভাগ ভোটের পরিমাণ ১৫ হাজার ১৩০। এই আসনের ১২জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ২জন জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়ার মতো ভোট পেয়েছেন। অন্য যে ১০জন জামানত হারালেন তারা হলেন- এই আসনের বর্তমান সাংসদ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী নূরুল ইসলাম তালুকদার, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আফরিনা পারভীন, তৃণমূল বিএনপির আব্দুল মোত্তালেব, জাসদের আব্দুল মালেক সরকার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের তাজ উদ্দিন মণ্ডল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের রফিকুল ইসলাম সরদার, স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন, জাকারিয়া হোসেন, নজরুল ইসলাম ও ফেরদৌস স্বাধীন ফিরোজ।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ৯৬ হাজার ৬০৯। এর ৮ ভাগের এক ভাগ ভোটের পরিমাণ ১২ হাজার ৭৬। এই আসনের ৬জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ২জন জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়ার মতো ভোট পেয়েছেন। অন্য যে ৪জন জামানত হারালেন তারা হলেন- আলোচিত ইউটিউবার ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম, জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল, গণতন্ত্রী পার্টির মনজুরুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মোশফিকুর রহমান।
বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ২ লাখ ১২ হাজার ৫৬৬। এর ৮ ভাগের এক ভাগ ভোটের পরিমাণ ২৬ হাজার ৫৭১। এই আসনের ৫জন প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র বিজয়ী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়ার মতো ভোট পেয়েছেন। অন্য যে ৪জন জামানত হারালেন তারা হলেন- বিএনএফ’র আলী আসলাম হোসেন রাসেল, ইসলামী ঐক্যজোটের নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মামুনার রশিদ ও জাসদের রাসেল মাহমুদ।
বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ৮৯ হাজার ৮৮৬। এর ৮ ভাগের এক ভাগ ভোটের পরিমাণ ১১ হাজার ২৩৬। এই আসনে ৫জন প্রার্থীর মধ্যে ২জন জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়ার মতো ভোট পেয়েছেন। অন্য যে ৩জন জামানত হারালেন তারা হলেন- জাতীয় পার্টির আজিজ আহম্মেদ রুবেল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শহিদুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মদ মিঠু।
বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫১। এর ৮ ভাগের এক ভাগ ভোটের পরিমাণ ১৪ হাজার ৫৬। এই আসনের ১৩জন প্রার্থীর মধ্যে শুধুমাত্র বিজয়ী প্রার্থী আওয়ামী লীগের ডা. মোস্তফা আলম নান্নু জামানতের টাকা ফেরৎ পাওয়ার মতো ভোট পেয়েছেন।
অন্য যে ১২জন জামানত হারালেন তারা হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবলু, জাতীয় পার্টির এটিএম আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মেহেরুল আলম মিশু, জাসদের আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় পার্টির(জেপি) আব্দুল মজিদ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের এনামুল হক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফজলুল হক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মো. রনি, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক বিএনপি নেতা সরকার বাদল, নজরুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন ও নজরুল ইসলাম মিলন।