এমপি হওয়ার আশায় সব খোয়ালেন সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস
ভোট এলো, এলো ভোটদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি হওয়ার আশায় সব খোয়ালেন সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। রোববার ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪২৩৯ ভোটে পরাজিত হয়েছেন তিনি।
নির্বাচনে (বেলকুচি-এনায়েতপুর-চৌহালী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডল ৭৭ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক মন্ত্রী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ বিশ্বাস স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৩ হাজার ১৮৩ ভোট।
এদিকে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেছেন, তিনি মন্ত্রী হয়ে অনেক অপকর্ম ও দুঃশাসন করেছেন। এ কারণে সাধারণ মানুষ আজ নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।'
আব্দুল লতিফ বিশ্বাস ১৯৯৬-২০০১ ও ২০০৮-২০১৪ সালে দুই মেয়াদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি মহাজোট সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালে জেলা পরিষদের দুইবার প্রশাসক হন। পরে ২০১৬ ও ২০২১ সালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হন। ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন তিনি। পরবর্তীতে ২০২০ সালে জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে তাকে অব্যহত দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মন্ডল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডল।
পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য গত ২৮ গত নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দেন।
এদিকে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে মোট ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অবঃ) আল মামুন (কাঁচি) ২ হাজার দুইশত ভোট, জাতীয় পার্টি রফিকুল ইসলাম ডনু (লাঙ্গল) পেয়েছেন ২৬৯ ভোট, বিএনএমের আব্দুল হাকিম (নোঙ্গর) প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২১৩ ভোট ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নাজমুল হক পেয়েছেন গামছা প্রতীকে ১৩৩ ভোট।
সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে ১২৪ ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৬১। পুরুষ ২ লাখ ৪ হাজার ৩৮২ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৭৯ জন ।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের স্ত্রী সাবেক মেয়র আশানুর বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, 'একাদশ সংসদ নির্বাচনে মজিদ মণ্ডল অসুস্থ থাকায় ছেলে মমিন মণ্ডল মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, উন্নয়নের দিকে নজর না দেওয়া ও বিএনপি-জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'গতকাল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডল তার গার্মেন্টসে ৩৫ টি গাড়িতে লোকজন নিয়ে এসে সালাম ফকিরের বাড়িতে অবস্থান করেন। পরে মেঘুল্লা, আজগরা, আটারদাগ, তামাই, গোপালপুর, চানপুরসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে জাল ভোট প্রয়োগ করেছেন। জাল ভোটের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস হেরে গেছে।'