‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানে চঞ্চল-শাওন, পাইরেসির অভিযোগ

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানে চঞ্চল-শাওন

‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানে চঞ্চল-শাওন

ফেসবুক খুললেই টাইমলাইনে আসছে স্টেজে বসে বেশ আয়োজন করে গাইছেন মেহের আফরোজ শাওন ও চঞ্চল চৌধুরী। তাদের সাথে কোরাসও মেলাচ্ছে একটি দল। বেশ আয়োজনপূর্ণ গানটি শুনতে হুমড়ি খেয়ে ভিড় করছেন নেটিজেনরা। কমেন্টস-লাইকে দুইজনেরই কণ্ঠে মুগ্ধ দর্শকরা।

হ্যাঁ- ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ শিরোনামের গানটিতে নতুন করে কণ্ঠ দিয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও কণ্ঠশিল্পী, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) রাতে গানটি ইউটিউবে প্রকাশিত হয়, যা মুহূর্তের মধ্যেই নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। গানটি ফেসবুক ও ইউটিউবে মুক্তির পর  থেকে শ্রোতা-দর্শকদের প্রশংসায় ভাসছেন শাওন-চঞ্চল।

বিজ্ঞাপন

শাওন-চঞ্চলের কণ্ঠে গানটির সংগীতায়োজন করেছেন পার্থ বড়ুয়া। গানটির নতুন এ আয়োজনের জন্য পার্থ বড়ুয়ারও প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা।  

কিন্তু রাতে "আইপিডিসি আমাদের গান" ইউটিউব চ্যানেলের ভাইরাল হওয়া গানটি সকালেই কপি রাইট ক্লেইমের খপ্পরে পড়ে। দর্শকরা চঞ্চল চৌধুরীর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্টে গিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন।

এসময় চঞ্চল চৌধুরী তার ফেসবুকে দর্শকদের মন্তব্যের উত্তরে বলেন, খুব দুঃখজনক গানটিতে কেউ কপি রাইট ক্লেইম করেছেন। গানটি এখন ফেসবুকে পাবেন।

সরলপুর ব্যান্ডের কপি রাইট সনদ

পরে দর্শকদের ব্যাপক চাহিদার কারণে গানটি ফেসবুকে আপলোড করা হয়। তবে গানটি গেয়ে কপি রাইট আইনের মুখে পড়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত এই দুই অভিনেতা। চঞ্চল চৌধুরী তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানটির উৎস-লোকজ গান বললেও সরলপুর নামে একটি ব্যান্ড দল গানটির মূল সত্ত্ব তাদের বলে দাবি করেছে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর)সরলপুর ব্যান্ডের প্রধান ভোকাল মার্জিয়া তুরিন এক ফেসবুক লাইভে ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ গানটির সত্ত্ব তাদের বলে দাবি করেন। সেই সঙ্গে অনুমতি ছাড়া গানটি গাওয়ায় তিন জনপ্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্ব কপি রাইট আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে জানান তিনি।

সব ধরনের ডিজিটাল প্লাটফর্ম থেকে গানটি সরানোর আহ্বান জানিয়ে কানাডা প্রবাসী মার্জিয়া তুরিন বলেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য অনুমতি ছাড়া ‘যুবতী রাধে’ গানটি চঞ্চল চৌধুরী ও মেহের আফরোজ শাওন গেয়েছেন। তারা সংগৃহীত ও লোকজ গান বলে গানটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে। আমরা চাইব পার্থ বড়ুয়া, চঞ্চল চৌধুরী ও মেহের আফরোজ শাওন গানটি যেন সব প্লাটফর্ম থেকে সরিয়ে নেবেন। তা না হলে আমরা কপি রাইট আইনে ব্যবস্থা নেব। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেব।  

সরলপুর ব্যান্ডের দাবি, ২০০৮ সালে বকশিগঞ্জের এক বৃদ্ধ সাধুর কাছ থেকে গানটি নেয় সরলপুর ব্যান্ড। তবে পুরো গানটি পাওয়া যায়নি, ৩০ ভাগ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর ব্যান্ড দলের সদস্য আল আমিন এবং তপন বাকি সত্তর ভাগ গান রচনা করেন। পরে গানটির কম্পোজিশন করা হয়। এরপর গানটি ফোক ও রক ভার্সনে গাওয়ার চেষ্টা করে দলটি। ২০১২ সালে গানটি আমরা রেকর্ড করে, ওই সময় চ্যানেল নাইনে গানটি পরিবেশন করে ব্যান্ড দলটি।


গানটির বিষয়ে চঞ্চল চৌধুরী বার্তা২৪.কম’কে বলেন, আমি সাধারণত জানি, লালন সংগীত, লোকজ গানগুলো নানাভাবে মানুষ গেয়ে থাকে। সর্বত মঙ্গল রাধে গানটিও ইউটিউবে অনেক ভার্সনে আছে, অনেকেই গেয়েছেন। কই কোনটাও বন্ধ হয়নি। দেখেন আমিও মনপুরার অ্যালব্যাম বকুল ফুলসহ দুইটা লোকজগান গেয়েছি। ‘বকুলফুল’ গান প্রথম আমি রেকর্ড করেছি, এর আগে বাংলাদেশে কেউ করেনি। তাই বলে একটা লোকজগানকে আমার গান বলতে পারি না। কারণ লোকজ গানগুলোর নানা রিমিক্স ও ফিউশন হয়ে থাকে।

তিনি আরও বলেন, আমি সাধারণত কোন গান গাওয়ার আগে জানার চেষ্টা করি গানটা কার, কিন্তু এই গান সরলপুর ব্যান্ডের আমি কোথাও পাইনি। এরপরও বলব যখন অভিযোগ এসেছে যারা গানটার পাবলিশার তারা বিষয়টি দেখবেন।


এদিকে সরলপুর ব্যান্ডে পাইরেসির অভিযোগের পার্থ বড়ুয়া বার্তা২৪.কম’কে বলেন, এ বিষয়ে যারা গান প্রকাশ করেছে তারা বলবে। এই মুহূর্তে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না। 


এর আগে ২০১৮ সালে সংগীতশিল্পী সুমি মির্জা গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন।সেই গানটিও বেশ ভাইরাল হয়। ওই গানটি ইউটিউব চ্যানেল প্রকাশের পরপরই সরলপুর ব্যান্ড অভিযোগ করে, তাদের অনুমতি ছাড়া গানটি গেয়েছেন সুমি মির্জা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুমি তার গানটিতে সরলপুর ব্যান্ডের ক্রেডিট দেন।