সমাজ সংস্কারে চলচ্চিত্র বিরাট অবদান রাখতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

  • কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমাজের অনেক অনিয়ম, উৎশৃঙ্খলতা দূর করতে চলচ্চিত্র বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।

বুধবার (২৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আপনারা যারা শিল্পী, কলাকুশলী যারাই আছেন তারা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন, আমাদের গণমানুষের যে আত্মত্যাগ এবং আমাদের এগিয়ে চলার পথ সেই পথটা যেন মানুষের কাছে আরও ভালোভাবে উপস্থাপন হয় এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ যেন সুন্দরভাবে এগিয়ে যেতে পারে আর আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বা নতুন প্রজন্ম তারা যেন নিজেদের জীবনকে আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে সেইভাবেই আপনারা শিল্পগুলোকে তৈরি করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করবেন । ভবিষ্যতকে উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে বা সমাজের অনেক অনিয়ম, উৎশৃঙ্খলতা দূর করতে চলচ্চিত্র বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্রের মধ্যে দিয়ে দেশ ও জাতির প্রতি মানুষের দায়িত্ববোধ বা মানুষের প্রতি ভালোবাসা, আন্তরিকতা, দায়বদ্ধতা সেটাও কিন্তু জাগ্রত করতে পারে। কাজেই সেদিক থেকে চলচ্চিত্রের অনেক অবদান রয়েছে।

চলচ্চিত্রের গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, চলচ্চিত্র আসলে আমাদের একটা জীবনেরই চিত্র, জীবনেরই প্রতিচ্ছবি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা দেখেছি বা আমরা যদি ইতিহাসও ঘেঁটে দেখি, আসলে চলচ্চিত্র যেমন আমাদের সমাজকে সংস্কার করতে পারে, সমাজ সংস্কারে এই চলচ্চিত্র বিরাট অবদান রাখতে পারে।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিনেমা মানুষের মনে দাগ কাটে, জীবন দর্শন এটাই প্রকাশ পায় বা সময়কালীন বিভিন্ন ইতিহাসের ধারাটা জানা যায়। এই চলচ্চিত্রের মধ্যে দিয়েই অনেক বার্তা পৌঁছে যায়। তাছাড়া ইতিহাসের বার্তা বাহক হিসেবেও কিন্তু চলচ্চিত্র, সেটা ইতিহাসকে ধরে রাখে। অনেক অজানাকে জানার সুযোগ করে দেয়। অনেক হারিয়ে যাওয়া ঘটনা সামনে নিয়ে আসে এবং যা জীবনের সঙ্গে মিশে যায়।

চলচ্চিত্রকে আধুনিকায়নে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তথ্য-প্রযুক্তির যুগ। আমাদের সিনেমা শিল্পটা অনেকটা এনালগ পদ্ধতিতেই থেকে গিয়েছিল। সেটাকে আমি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন করতে চাই।

পুরোনো সিনেমাগুলোকে নতুন আঙ্গিকে নির্মাণ করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের সহায়তার জন্য গঠিত ট্রাস্ট ফান্ডে বিত্তশালীদের বেশি করে টাকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

এ বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন যারা

এবার মোট ২৭টি বিভাগে ৩০টি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুই জনকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ সিনেমা হয়েছে চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত ‘বিশ্বসুন্দরী’ ও গাজী রাকায়েত পরিচালিত ‘গোর’।

এরমধ্যে ‘বিশ্বসুন্দরী’ থেকে চিত্রনায়ক সিয়াম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও ‘গোর’ থেকে চিত্রনায়িকা দীপান্বিতা মার্টিন হয়েছেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী। সর্বোচ্চ ১১টি পুরস্কার পেয়েছে সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘গোর’। আর একই সিনেমার জন্য ব্যক্তি হিসেবে সর্বোচ্চ ৪টি পুরস্কার পেলেন গাজী রাকায়েত।

আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করেছেন অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ। তবে যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পাওয়া বর্ষীয়ান অভিনেত্রী আনোয়ারা সশরীরে উপস্থিত হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করতে পারেননি। তার পক্ষে এটি গ্রহণ করেছেন তার মেয়ে অভিনেত্রী মুক্তি।

এছাড়াও যারা এ সম্মানজনক পুরস্কার পেলেন তারা হলেন-

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক - গাজী রাকায়েত হোসেন (গোর)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা - এম ফজলুর রহমান বাবু (বিশ্বসুন্দরী)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী -অপর্ণা ঘোষ (গণ্ডি)
শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতা - মো. সাহিদ হাসান মিশা সওদাগর (বীর)
শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী - মুগ্ধতা মোরশেদ ঋদ্ধি (গণ্ডি)
শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার- মো. শাহাদৎ হাসান বাধন (আড়ং)
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক - বেলাল খান (বিশ্বাস যদি যায়রে...)
শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক - প্রয়াত মো. সহিদুর রহামান (তুই কি আমার হবিরে...বিশ্বসুন্দরী)
শ্রেষ্ঠ গায়ক - মো. মাহমুদুল হক ইমরান (তুই কি আমার হবিরে...বিশ্বসুন্দরী)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা - দিলশাদ নাহার কণা (তুই কি আমার হবিরে...বিশ্বসুন্দরী) এবং সোমনূর মনির কোনাল (ভালোবাসার মানুষ তুমি... বীর)
শ্রেষ্ঠ গীতিকার - কবির বকুল (তুই কি আমার হবিরে...বিশ্বসুন্দরী)
শ্রেষ্ঠ সুরকার - মো. মাহমুদুল হক ইমরান (তুই কি আমার হবিরে...বিশ্বসুন্দরী)
শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার -গাজী রাকায়েত হোসেন (গোর)
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার-গাজী রাকায়েত হোসেন (গোর)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা- ফাখরুল আরেফীন খান (গণ্ডি)
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক - মো. শরিফুল ইসলাম (গোর)
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক- উত্তম কুমার গুহ (গোর)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক- পংকজ পালিত ও মো. মাহবুব উল্লাহ (নিয়াজ) [গোর]
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক- কাজী সেলিম আহমেদ (গোর)
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা- এনাম তারা বেগম (গোর)
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান- মোহাম্মদ আলী বাবুল