অন্য এক উচ্চতায় মৌসুমী

  • কামরুজ্জামান মিলু, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মৌসুমী

মৌসুমী

ঢাকাই চলচ্চিত্রের উজ্জল এক নাম। উজ্জ্বল এক নক্ষত্র তিনি। বলছি আরিফা পারভিন জামান মৌসুমীর কথা। দর্শকের নিকট তিনি মৌসুমী নামেই পরিচিত। সেই ১৯৯৩ সালে বড়পর্দায় তাঁর যাত্রা শুরু। প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের বিপরীতে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবি দিয়ে শুরু। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয় নি। কেটে গেছে সফলভাবে ৩০ বছর। দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা দিয়েছেন তিনি। বহুমাত্রিক চরিত্রে তিনি আলো ছড়িয়েছেন রুপালি পর্দায়। পেয়েছেন কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। অন্য এক উচ্চতায় নিজেকে নিয়ে গেছেন ঢাকাই সিনেমার প্রিয়দর্শিনী মৌসুমী। বর্তমানে তিনি আমেরিকায় অবস্থান করছেন। আটলান্টায় ছোট বোন ইরিন জামানের সঙ্গে থাকেন তাঁর মা। মায়ের শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। সেই খবর শুনে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। দেশে ফিরে শিগগিরই আবার কাজ শুরু করবেন তিনি। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে মৌসুমীর বিপরীতে নায়ক হিসেবে ওমর সানী, ইলিয়াস কাঞ্চন, বাপ্পারাজ, জাহিদ হাসান, অমিত হাসান, রুবেল, মান্না, আমিন খান, ফেরদৌস, রিয়াজ, শাকিল খান ও শাকিব খানসহ ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় তারকারা অভিনয় করেছেন।

সিনেমার পাশাপাশি টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনেও সফলতা পেয়েছেন। পরিচালক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ ঘটেছে মৌসুমীর। নির্মাণেও তিনি নিজের নামের সৌরভ ছড়িয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

মৌসুমী ‘মেঘলা আকাশ’ সিনেমার জন্য ২০০১ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হাতে নেন। এরপর ২০১৩ সালে ‘দেবদাস’ ও ২০১৪ সালে ‘তারকাঁটা’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেন।

অভিনয়ের বাইরে ‘মৌসুমী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ এবং ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। মৌসুমী জানান, সময় কত দ্রুত চলে যায়। অনেকটা বছর কেটে গেল। প্রযোজক, পরিচালক, সাংবাদিক সবার প্রতি আমি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ। আমার বাবা, মা দুই বোন স্নিগ্ধা, ইরিন সব সময় আমার পাশে থেকেছে। ভালোবাসায়, সুখে দুঃখে পাশে আছেন আমার স্বামী ওমর সানী। তার দিকনির্দেশনা এবং অভিভাবকত্বের কারণেই আমাদের পরিবার আজ সুখী পরিবার। দর্শকের প্রতিও রইল অপরিসীম ভালোবাসা, শ্রদ্ধা। তিনি আরও জানিয়েছেন, এ মুহূর্তে দেশে ফিরছেন না। আরও কিছুদিন মায়ের সঙ্গে কাটিয়ে তবে দেশে ফেরার ইচ্ছা তার। দর্শকের ভালোবাসায় তিন দশকে পৌছে গেছেন মৌসুমী। এজন্য বার্তা ২৪.কমের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন প্রিয়দর্শিনী মৌসুমীকে ।

বিজ্ঞাপন

উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেড হিন্দি ‘সানাম বেওয়াফা’, ‘দিল’ ও ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’–এর কপিরাইট নিয়ে সোহানুর রহমান সোহানের কাছে আসে এর যেকোনো একটির রিমেক করার জন্য। উপযুক্ত নায়ক-নায়িকা খুঁজে না পেয়ে সম্পূর্ণ নতুন মুখ দিয়ে ছবি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। নায়িকা হিসেবে মৌসুমীকে নির্বাচন করেন। নায়ক হিসেবে প্রথমে তৌকীর আহমেদ ও পরে আদিল হোসেন নোবেলকে প্রস্তাব দিলে তাঁরা ফিরিয়ে দেন। তখন নায়ক আলমগীরের সাবেক স্ত্রী খোশনুর আলমগীর ‘ইমন’ নামের এক ছেলের সন্ধান দেন। প্রথম দেখাতেই তাঁকে পছন্দ করেন পরিচালক এবং ‘সনম বেওয়াফা’ রিমেকের জন্য প্রস্তাব দেন। কিন্তু ইমন ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’-এর জন্য পীড়াপীড়ি করেন। এ ছবি তিনি ২৬ বার দেখেছেন। শেষ পর্যন্ত পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন ও ইমনের নাম পরিবর্তন করে সালমান শাহ রাখা হয়। পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব আসে এ সিনেমায় মৌসুমীকে নায়িকা হিসেবে নেবার জন্য । এরপর বেশ কয়েকটি মিটিং শেষে সব চূড়ান্ত হয়। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখেছেন সোহানুর রহমান সোহান ও সংলাপ লিখেছেন আশীষ কুমার লোহ। প্রযোজক সুকুমার রঞ্জন ঘোষের আনন্দমেলা সিনেমা লিমিটেডের ব্যানারে নির্মিত হয় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। ছবিতে সালমান-মৌসুমী ছাড়া আরও অভিনয় করেন রাজিব, আহমেদ শরীফ, আবুল হায়াত, খালেদা আক্তার কল্পনা, মিঠু, ডন, জাহানারা আহমেদ, অমল বোসসহ অনেকে। চলচ্চিত্রটি ১৯৯৩ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায়।