নিজ চোখে দেখুন তারকাজীবনের অন্দরমহল
শুরু থেকেই আলোচনায় ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। একে তো ছবিটির মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর দেশি দর্শকের কাছে ফিরছেন গুণী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেই সঙ্গে জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাও মাতৃত্বকালীন বিরতি কাটিয়ে প্রথম এই ছবিতেই অভিনয় করেছেন। বাড়তি প্রাপ্তি নির্মাতা ফারুকীর প্রথমবারের মতো অভিনয় দেখা। সেই সঙ্গে প্রচার প্রচারণার জন্য এক ধরনের আগ্রহ। সবমিলিয়ে একটি কাজ মানুষের কাছে পৌঁছাতে এর বেশি আর কী লাগে?
কিন্তু ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ এর থেকেও বড় কিছু, এর থেকেও স্পেশ্যাল কিছু। গতকাল ৩০ নভেম্বর ছবিটির প্রিমিয়ার শোয়ের আয়োজন করে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চরকি। একইসঙ্গে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটি দর্শকের জন্য চরকিতে অবমুক্ত করে ছবিটি। বড় পর্দায় ছবিটি দেখার পর একরাশ হাহাকার নিয়ে ঘরে ফিরতে হয়।
আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তারকাজীবনের অন্দরমহল নিজ চোখে দেখার এমন সুযোগ আর হয়নি। সফল তারকা দম্পতি হিসেবে ফারুকী তিশার যে জনপ্রিয়তা, ভক্তদের চোখে তাদের নিয়ে যে কৌতুহল তার অনেকটাই এই ছবির মাধ্যমে দেখতে পাওয়া যাবে।
মূদ্রার এপিঠ-ওপিঠ সবটাই উল্টে পাল্টে দেখিয়েছেন ফারুকী। সমাজের একাধিক বিষয়কে তিনি তুলে ধরেছেন খুবই হৃদয়গ্রাহী করে। একজন তারকার হাই অ্যাম্বিশন যেমন আছে, তেমনি আছে নিজের জীবনের সঙ্গে স্যাক্রিফাইজের গল্প। স্বামী-স্ত্রীর ইকুয়েশন যেমন আছে, তেমনি আছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ তারকাদের কোন চোখে দেখে সেই বিষয়গুলো। ব্যক্তিজীবন ছাড়িয়ে ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ এক সময় হয়ে ওঠে সমাজ, রাজনীতি ও ক্ষমতাবৈষম্যের ছবি। পুরোটা দেখার পর মনে হয় এটি সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের আবেগ, অনুভূতি, প্রেম, মায়া, বিসর্জন আর প্রত্যাশাহীনতার ছবি।
ফারুকীর প্রথম অভিনয়, কিন্তু তিনি সেটি বুঝতে দেননি। নিজের চরিত্রে তিশা অসম্ভব শক্তিশালী। ডলি জহুর, ডিপজল, ইরেশ জাকের, শরাফ আহমেদ জীবন, রিফাত চৌধুরী- প্রত্যেকে দারুণ সাবলিল। গল্প লিখেছেন ফারুকী-তিশা মিলেমিশে। এজন্যই হয়তো দুজনের চরিত্রের ভারসাম্য আরও সুষম হয়েছে।
প্রিমিয়ার শোতে উপস্থিত অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, আনিসুল হক, আফজাল হোসেন, চঞ্চল চৌধুরী, শিহাব শাহিন, আশফাক নিপুণ, এলিটা করিম, নাদিয়া আহমেদ, আদনান আল রাজীব, মেহজাবীন চৌধুরী, সাবিলা নূর, তাসনিয়া ফারিণ, সারিকা সাবরিন, শবনম ফারিয়া, তাসনুভা তিশা, হৃদি শেখ, সুনেরাহ বিনতে কামাল, রায়হান রাফী, আহমেদ জামান শাওকী, আরিক আনাম খান, রুকাইয়া জাহান চমকসহ অনেক তারকাশিল্পী ছবিটির খুব প্রশংসা করেন।
চরকিতে ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’-প্রজেক্টে জনপ্রিয় ১২ জন নির্মাতা ভালোবাসার গল্প নিয়ে ১২টি চরকি অরিজিনাল ফিল্ম বানাচ্ছেন। এই পুরো প্রজেক্টের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি নিজে নির্মাণ করেছেন দুটি সিনেমা ‘অটোবায়োগ্রাফি’ ও ‘মনোগামী’।
তিশা বলেন, ‘এই সিনেমা নিয়ে যদি আরও কিছু বলতে হয় তাহলে আমি ছোট্ট করে বলবো এই সিনেমাটা হচ্ছে সকল সন্তানের প্রতি তার মা বাবার অনুভূতির উপহার।’
পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বেশ ফুরফুরে মেজাজের একজন। তবে সিনেমায় প্রথমাবার অভিনয় নিয়ে আছেন মিশ্র মনোভাবে। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন তো কাজ করছি। কখনো ভাবি নাই অভিনয় করবো। সেটাও করা হয়ে গেলো। ফলে এক ধরনের সংকোচ ভাবতো আছেই। একই সাথে উত্তেজনাও কাজ করছে। নিজেদের জীবন ছেঁনে গল্প বের করার মধ্যে একটা ভালনারেবিলিটি আছে। কিন্তু হৃদয় খুঁড়ে বেদনা বের করে আনাইতো শিল্পীর কাজ।’