ভালোবেসে ২০১০ সালে বিয়ে করেছিলেন বলিউড অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা। মাত্র দুই বছর পরই ভেঙে যায় সেই সংসার। সেই ভাঙনের মধ্যে মহাপ্রলয় হয়ে আসে ঘাতক ক্যানসার!
২০১২ সালে ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হন মনীষা। মরণঘাতী এই রোগ থেকে সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যা খুব কম। সেই সৌভাগ্যবানদের একজন মনীষা। দুই বছরের চিকিৎসায় জীবনে নতুন সুযোগ পান তিনি। কিন্তু সেই ক্যানসার তার কাছ থেকে চিরতরে কেড়ে নিয়েছে মা হওয়ার সামর্থ্য। গতকাল বিশ্ব মা দিবসেই সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা সামনে আনেন এই নায়িকা।
বিজ্ঞাপন
যদিও বিষয়টি নিয়ে এখন আর আক্ষেপ নেই মনীষার। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে কিছু অপূর্ণতা আছে। আসলে বড় হতে হতে আমরা অনেক বাস্তবতা মেনে নিই। এমন অনেক স্বপ্ন আছে, যেগুলো পূরণ হবে না জানি এবং সেটা মেনে নিয়েই সুখ খুঁজে নিতে হবে। মাতৃত্ব সেরকমই একটা স্বপ্ন। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া এবং মাতৃত্বের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলা আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল। কিন্তু মনকে বুঝিয়ে নিয়েছি আমি। নিজেকে বুঝিয়েছি, যা হবার হয়েছে; এখন বরং নিজের যা আছে, তা নিয়েই জীবন সাজানো শ্রেয়।’
মনীষা আরও বলেন, ‘আমি দত্তক নেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু পরে দেখলাম, আমি খুব দ্রুত দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে যাই, অনেক চাপ অনুভব করি। এসব দিক বিবেচনা করে দত্তক নেওয়ার চিন্তা বাদ দিয়েছি। আমার বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন, তাদের চোখের মণি আমি। তাদের কাছে আমিই গোটা পৃথিবী। এখন তাই প্রায়ই কাঠমাণ্ডু চলে যাই, তাদের সঙ্গে সময় কাটাই এবং এটা আমার ভীষণ ভালো লাগে।’
বিজ্ঞাপন
মনীষা এখন সঞ্জয়লীলা বানসালি পরিচালিত নেটফ্লিক্সের সিরিজ ‘হীরামান্ডি : দ্য ডায়মন্ড বাজার’-এ দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন।
কয়েকদিন ধরেই ঐশ্বরিয়া রায় ও অভিষেকে বচ্চনের ডিভোর্সের গুঞ্জন বেশ জোড়ালোভাবেই চলছে। শোবিজে রীতিমতো কাঁটাছেড়া হচ্ছে তাদের দুজনকে নিয়ে। তবে এ বিষয়ে দুজনের কেউই মুখ না খুললেও এবার সরব হয়েছেন ঐশ্বরিয়া।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে এক ভিডিও শেয়ার করেছেন ঐশ্বরিয়া রায়। জনপ্রিয় এ তারকা জুটির ভাঙন নিয়ে তুমুল আলোচনার মাঝে এই প্রথমবার কথা বলেছেন ঐশ্বরিয়া। তবে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও বার্তায় নিজের ডিভোর্স সম্পর্কে সরাসরি কিছু না বললেও সব মেয়েদের উদ্দেশ্যে হয়রানির প্রতিবাদে মাথা তুলে প্রতিবাদ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ভিডিওতে ঐশ্বরিয়াকে বলেন, ‘রাস্তায় হয়রানি, কীভাবে মোকাবিলা করবেন? চোখ নিচে নামিয়ে নিলে হবে না। বরং এদের চোখে চোখ রাখুন। মাথা উঁচু রাখুন। আপনার শরীর, আপনার মূল্য, কখনোই এগুলোর সঙ্গে আপস করবেন না। কখনো নিজেকে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করবন না। আপনার পোশাক, লিপস্টিককে দোষারোপ করবেন না ভুলেও! রাস্তায় হওয়া হয়রানি কখনোই আপনার দোষ নয়।’
মূলত আন্তর্জাতিক বিউটি ব্র্যান্ড ল’রিয়াল এর ব্র্যান্ড এম্বাসেডর হচ্ছেন ঐশ্বরিয়া রায়। L'Oréal Paris' Stand Up Against Street Harasment Training Program এর অংশ হিসেবে হয়রানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সব মেয়েদের উদ্দেশ্যে এ ভিডিও বার্তা দেন তিনি।
ঐশ্বরিয়ার এই ভিডিও বার্তা বলিপাড়ায় তাদের বিচ্ছেদের চর্চাকে আবারও নতুন মাত্রা দিয়েছে। নেটিজেনদের অনেকেই বলছেন এর মাধ্যমে ঐশ্বরিয়া হয়তো পরোক্ষভাবে নিজের সাথে হয়ে যাওয়া হয়রানির প্রতিবাদকেই ইঙ্গিত করেছেন। নিজের অভিজ্ঞতার থেকে যেকোন পরিস্থিতিতে মেয়েদের আত্মবিশ্বাসকে টিকিয়ে রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন।
২০০৭ সালে অভিষেক-ঐশ্বর্য গাঁটছড়া বাঁধেন। এরপর তাদের জীবনে আসে কন্যা আরাধ্যা। বলিউডে গুঞ্জন, অভিষেক-ঐশ্বর্য বিচ্ছেদ হওয়া নাকি শুধু সময়ের অপেক্ষা। ইতিমধ্যে আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে ফেলেছেন দু’জনে। কখনও সম্পত্তি ভাগের জেরে পারিবারিক অশান্তির কথা শোনা গিয়েছে। আবার কখনও বা নিমরত কৌরের সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ উঠেছে জুনিয়র বচ্চনের বিরুদ্ধে।
দেড়শ’ পর্বে বৈশাখী টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘হাবুর স্কলারশিপ’। প্রচার হবে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে। ধারাবাহিক এ নাটকটি নিয়মিতভাবে প্রচার হচ্ছে প্রতি মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতিবার। প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকেই এ ধারাবাহিকের প্রতি দর্শক চাহিদা ঈর্ষণীয়। ইউটিউবে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ-ই এর বড় প্রমাণ।
গত ঈদ উল ফিতর এবং ঈদুল আজহায় প্রচারিত সাত পর্বের বিশেষ ধারাবাহিক ‘হাবুর স্কলারশিপ’ নাটকের অভাবনীয় সাফল্যের পরই নির্মিত হয়েছে দীর্ঘ ধারাবাহিক হাবুর স্কলারশিপ। নাটক দু’টি, দুই ঈদেই ইউটিউবে প্রথম হয় এবং দর্শকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ তৈরি করে। দর্শকদের চাহিদার কথা চিন্তা করে তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দীর্ঘ ধারাবাহিক আকারে নাটকটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় বৈশাখী টেলিভিশন। এ নাটকের মাধ্যমেই জনপ্রিয় অভিনেতা রাশেদ সীমান্ত এই প্রথম কোনো দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছেন। বৈশাখী টিভির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক টিপু আলম মিলনের গল্পে, আহসান আলমগীরের চিত্রনাট্যে নাটকটি পরিচালনা করেছেন আল হাজেন। প্রযোজনা করেছে ‘মিড এন্টারপ্রাইজ’।
রাশেদ সীমান্ত ছাড়াও এ নাটকে আরও অভিনয় করেছেন- তানজিকা আমিন, অহনা রহমান, শফিক খান দিলু, নীলা ইসলাম, হায়দার আলী, ম. আ সালাম, বিনয় ভদ্র, সাইকা আহমেদসহ একঝাক নতুন মুখ। হাবুর স্কলারশিপ নাটকের শুটিং বাংলাদেশ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্যে চিত্রায়িত হয়েছে। গল্পের প্রয়োজনে কোনো ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাইরে পৃথিবীর বৃহৎ দুটি দেশে শুটিং এটাই সম্ভবত প্রথম।
নাটকের গল্পে দেখা যায়, গ্রামের অত্যন্ত সহজ সরল একটি ছেলে হাবু স্কলারশিপ পেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পড়ালেখা করতে যায় এবং সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ছেলেটি ফার্স্ট হয়। হাবু অস্ট্রেলিয়ায় যে পাঁচ বছর পড়ালেখা করে সেই সময় হাবুর যে কোনো বিপদে আপদে পাশে এসে দাঁড়ায় তারই আরেক বাংলাদেশি সহপাঠী মারজান। এনএসডবি¬উ ইউনিভার্সিটি হাবুকে অফার করে সে যেন অস্ট্রেলিায় থেকে ইউনিভার্সিটিতে ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে জয়েন করেন কিন্তু হাবু জানায় তিনি তার মেধা তার দেশের জন্যই কাজে লাগাতে চায়। সবকিছু উপেক্ষা করে হাবু দেশে ফিরে আসেন। আগের পর্বগুলো এভাবেই শেষ হয়। ঠিক এখান থেকেই শুরু- ‘হাবুর স্কলারশিপ’ ধারাবাহিক নাটকের গল্প। নানা ঘাত প্রতিঘাত আর প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলে নাটকের কাহিনী।
গল্পকার টিপু আলম মিলন বলেন, সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে হাবুর স্কলারশিপ নাটকটি দর্শক চাহিদা পূরণ করে এগিয়ে চলেছে জেনে ভালো লাগছে। নাটকে যেমন বিনোদন এবং হাস্যরস আছে তেমনি আছে সমাজ সচেতনতা। ঘুণে ধরা এ সমাজের নানা অসংগতি তুলে ধরাই নাটকের মূল প্রতিপাদ্য। ভালো নাটক হলে মানুষ যে এখনো দেখে তার প্রমাণ হাবুর স্কলারশিপ।
গত ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো নন্দিত সঙ্গীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা। ‘গানে গানে সায়ান’ নামে প্রায় আড়াই ঘণ্টার পরিবেশনায় সায়ানকে একবারের জন্যও চাইতে হলো না হাততালি, অনুরোধ করতে হলো না শান্ত থাকতে! দর্শক স্বতঃস্ফূর্তভাবেই প্রতিটি গান শেষে হলরুম ভরিয়ে দেন ভালোবাসাসমেত তালিতে আবার গান শুরু করতেই পিনপতন নীরবতা বজায় রাখেন। সে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হলো, যারা সেই অভিজ্ঞতা সঞ্চার করেছেন তারাই কেবল জানেন এই আত্মতৃপ্তির কথা।
একেই বলে আক্ষরিক অর্থে একক পরিবেশনা। তিনি শুধু একা গাইলেনই না, মাত্র তিনটি বাদ্যযন্ত্র একা বাজিয়েই শেষ করলেন পুরো শো।
জুলাই বিল্পবে সায়ান নতুন করে আলোচনায় আসেন। কারণ তার গানের কথা ও সুর বরাবরই সমাজিক নিপীড়নের কথা বলে, রাজনৈতিক অপক্ষমতার বিরুদ্ধাচরন করে।
সায়ানের একক গানের অনুষ্ঠানে গিয়ে অবাক না হয়ে উপায় ছিলো না। কারণ তাকে শুনতে যেমন এসেছে জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা, তেমনি এসেছেন সত্তরোর্ধ নারী-পুরুষ। শুধু তাই নয়, সায়ান যে প্রেম, ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতিও এতো জোরালোভাবে তার গানে উপস্থাপন করেন তাও নতুন করে জানা গেলো।
সায়ান সেদিন অনুষ্ঠান শুরু করেন কিছু কথা দিয়ে। তিনি জানান, তিন শ্রেণির মানুষকে তিনি ঘৃণা করেন। প্রথমত, যারা প্রকাশ্যে বা মনে মনে মানুষকে খাটো করে; দ্বিতীয়ত, যারা ধর্ষক কিংবা জীবনের যে কোন পর্যায়ে যৌন হেনস্তা করেছে এবং যারা যৌন হেনস্তা করতে দেখেও তার প্রতিবাদ করেনি; তৃতীয়ত, যারা মনে করেন যে একটি দেশে একটিই মাত্র দল থাকবে অর্থাৎ বহুত্ববাদকে যারা খারিজ করতে চায় তাদের।
অনুষ্ঠান ছিলো দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম সেশনে সায়ান তার চিরাচরিত প্রতিবাদের গানগুলো শোনান প্রায় ঘন্টা দেড়েক সময় ধরে। এরপর আরও পৌঁনে এক ঘণ্টা ছিলো তার গানে গানে প্রেমময় সত্তা’র প্রকাশ।
প্রথমেই গেয়ে ওঠেন ‘আমি মুসলমানের মেয়ে’ গানটি। এরপর সায়ান তার আশেপাশের সকল নারী এবং বিশ্বের তাবৎ নারীশক্তিকে উৎসর্গ করে গাইলেন ‘এই মেয়ে শোন’।
অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে সায়ানের গানের কথা, সুর আর গায়কীতে দর্শক বুদ হয়ে পড়েছেন। সায়ান এবার আর গাইলেন না। একটু কথা বলে উঠলেন। জানালেন একটি মজার কথা। তাকে নাকি অনেক মানুষ জিজ্ঞেস করে, তিনি ছেলে নাকি মেয়ে? তাদের উত্তর দিয়ে সায়ান বলেন, ‘আমি শতভাগ মেয়ে। যদি আবার জন্ম হয় যেন মেয়ে হয়েই জন্মাই। আর যদি তা না হয়, যেন মেয়েলি পুরুষ হয়ে জন্মাই! আমি আসলে পুরুষের বিপক্ষে নই, কিন্তু ব্যাটাগীরীর বিপক্ষে। ব্যাটাগীরী নিপাত যাক।’
এরপর সায়ান একে একে গেয়ে শোনান সমাজের বিভিন্ন আলোচিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে গান। তারমধ্যে একটি পাহাড়ি মেয়ে কল্পনা চাকমাকে নিয়ে লেখা। যে মেয়েটি শক্তি আর ক্ষমতাকে ভয় না করে পাহাড়ি মানুষের অধিকারের কথা বলেছিলো। একদিন তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সে আর কোনদিন ফিরে আসেনি, জীবিত অথবা মৃত। বেঁচে থাকলে সায়ানের বয়সীই হতেন, সেটিও জানালেন শিল্পী।
এরপর তিনি গেয়ে ওঠেন গার্মেন্টসকর্মী চম্পা খাতুনের গান। যে তার ন্যায্য পারিশ্রমিক চেয়ে পায়নি, তাকে পিটিয়ে মারা হয়।
সায়ান গাইতে ভোলেননি বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নিয়েও। তিনি বলেন, ‘‘আবরারকে মেরে হত্যাকারীরা রাস্তায় মিছিল দিয়েছিলো, ‘জয় বাংলা!’’ তাইতো তিনি বলেন, ‘স্লোগানের পবিত্রতা কথায় নয়, তার উদ্দেশ্যে থাকে।’
এরপর সায়ান গানে গানে শোনান ফিলিস্তিনির মানুষের শক্তি, স্বাধীনতার আহাজারি ও তাদের ওপর দমন-পীড়নের কথা। ‘আমি প্যালেস্টাইন’ নামের এই গানের মাধ্যমে সায়ান ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
এরপর ‘স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি’, ‘নষ্ট মুক্তিযোদ্ধা’, ‘রানীমা’, ‘মাটির সঙ্গে গাদ্দারি’, ‘এইবার কি যেন হবে, মন চায় নির্বাসনে যাই’, গানগুলোতে উঠে আসে নিকট অতীতে বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজনীতি, ক্ষমতা নিয়ে তার উপলব্ধির কথা।
প্রতিবাদী গানের সেশন শেষ করেন নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেন। সায়ানের ভাষ্য, ‘‘আমি নিরপেক্ষ নই। গা বাঁচিয়ে চলি না। আগে মাটির পক্ষে ছিলাম। জুলাই আন্দোলনে একটা পক্ষ নিয়েছিলাম প্রকাশ্যে। এই পুরো শো’টি আমি জুলাই বিল্পবের নামে উৎসর্গ করলাম।’’
১৫ মিনিটের চা পান বিরতির পর শুরু হয় ‘গানে গানে সায়ান’-এর দ্বিতীয় সেশন। এই সেশনে তিনি গাইলেন প্রেমের গান, বিরহের গান, মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনের গান, সর্বপরি মানুষের প্রেমময় আবেগ-অনুভূতির গান।
প্রথম গানটিতে ছিলো দীর্ঘ সম্পর্কে থাকতে থাকতে জমে ওঠা তিক্ততা, একঘেয়ামি কিংবা অভিমান ভুলে আবার এক হওয়ার বার্তা। ‘দুজনে সব ভুলে যাই’-এর পর সায়ান গাইলেন ‘এইখানে সুখ ছিলো একদিন’। গানটির কথা ও সুর এতোটাই হৃদয়গ্রাহী যে, সত্তরোর্ধ দর্শকের চোখও তখন ছলছল। সবাই গানটির সঙ্গে নিজের আবেগকে মিলিয়েমিলিয়ে ফেলেছে তখন।
পরিবেশ হালকা করতে সায়ান বললেন, ‘প্রেম হলো দো-ধারী তলোয়ার। প্রেমে পড়লেও কাটে, না পড়লেও কাটে।’ কথাটি শুনে দর্শক আবার হেসে কুটিকুটি। এই পরিবেশে সায়ান ধরেন তার পরের গান ‘ভাসিয়ে দেবো তোরে ও আমার প্রাণের বন্ধু ওরে’।
প্রেম প্রেম গন্ধ যখন অনুষ্ঠানস্থলে, সায়ান তখনই তার পরের গানে দেখালেন প্রেমের ভিন্ন রূপ! ‘লাটাই’ গানটিতে তিনি তুলে ধরলেন সেই সম্পর্কের গল্প যাতে একজন সবটাই নিয়ন্ত্রণ করে। যেন অন্যজন তার হাতের ঘুড়ি, লাটাই যেভাবে নাড়াবে সেভাবেই সে উড়তে বাধ্য!
শেষ গান ধরবেন, কিন্তু দর্শকের একের পর এক অনুরোধ আরও হাফ ডজন খানেক গানের। সব অনুরোধ শিল্পী রাখতে পারলেন না ঠিকই, কিন্তু কথা দিলেন পরের কোন অনুষ্ঠানে সেই গানগুলো শুনিয়ে দেবেন। এরপর দর্শকের অনুরোধ থেকেই একটা অতিরিক্ত গান ‘কিছুতো একটা তুমি বলো’। এই গানে প্রেমিক বা প্রেমিকা তার প্রেয়সীর কাছে আকুতি করে একটা কিছু বলার। সম্পর্কের মধ্যে কথা ফুরিয়ে গেলে তা কতোটা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে সেটা বোঝা যায় এই গানে। এজন্য সম্পর্কের পরিচর্যা করা খুবই জরুরী।
অনুষ্ঠানের শেষ গান হিসেবে তিনি আগেই ঠিক করে রেখেছেন তার বহুল জনিপ্রয় গান ‘এক হারিয়ে যাওয়া বন্ধু’কে। সেটিই গাইলেন, তার অনবদ্য গায়কীর সাথে সাথে দর্শক হারিয়ে গেলো ছেলেবেলার নস্টালজিয়ায়। আবার তার গানের সাথে সাথেই ফিরে এলো বর্তমানে। মনে পড়ে গেলো সেই সব প্রিয় বন্ধুদের, যারা একটা সময় আমাদের হৃদয় জুড়ে ছিলো, জীবন জুড়ে ছিলো। সত্যিই তো, কোন শত্রুরও যেন প্রাণের বন্ধু দূরে সরে না যায়!
দক্ষিণ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি। তামিল, তেলেগু ও মালয়ালম ভাষার সিনেমায় সমানতালে কাজ করেন। ২০১৮ সালে ‘মহানটী’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য জিতেছেন জাতীয় পুরস্কারও। তিনি কীর্তি সুরেশ। দক্ষিণী সিনেমা দেখেন, অথচ তাকে পছন্দ করেন না, এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মায়াবী চেহারার এ অভিনেত্রী যেমন রূপের মুগ্ধতা ছড়ান, তেমনি তার অভিনয়ের জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন সবাইকে।
এবার জানা গেল এ অভিনেত্রী বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলছেন। দীর্ঘদিনের প্রেমিক অ্যান্টনি থাত্তিলকে বিয়ে করছেন এ অভিনেত্রী। দুবাই-এর ব্যবসায়ী অ্যান্টনির সঙ্গে স্কুলে পড়াকালীন তাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেই বন্ধুত্ব পরবর্তীতে গড়ায় প্রেমে।
শোনা যাচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে গোয়াতে চার হাত এক হবে তাদের। পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে বিয়ে করবেন কীর্তি। ডিসেম্বরের ৯ তারিখ থেকেই শুরু হবে বিবাহ উৎসব। চলবে তিন দিন। ইন্ডাস্ট্রির জল্পনা, বিয়ের পর কীর্তিও দুবাই পাড়ি দেবেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও কিছু বলেননি কীর্তি।
ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কীর্তির বিয়েতে থালাপতি বিজয়, চিরঞ্জীবী, অ্যাটলি কুমার, ন্যানির মতো দক্ষিণী তারকারা উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি বলিউডের বরুণ ধাওয়ানও বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হবেন।
এদিকে, ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘থোরি’ সিনেমার হিন্দি রিমেক ‘বেবি জন’-এ বলিউড তারকা বরুণ ধাওয়ানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন কীর্তি। আর সেই সূত্রেই বরুণের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। সিনেমাটি আসছে বড়দিনে মুক্তি পাবে। এরইমধ্যে ছবিটির গান মুক্তি পেয়েছে। তাতে কণ্ঠ দিয়েছেন অভিনেতা ও গায়ক দিলজিৎ দোসাঞ্জ।