যে ঘটনা ভুলতে পারছেন না তিন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সোহেল রানা, আবুল হায়াত ও সৈয়দ আব্দুল হাদী

সোহেল রানা, আবুল হায়াত ও সৈয়দ আব্দুল হাদী

দেশে গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা অস্থিরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই। বাদ যাননি সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষেরাও। আজ গোটা দেশ যখন অস্থির সময় পেরিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছেন তখন দেশর প্রখ্যাত তিন শিল্পী ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন গণমাধ্যমে। কোন ঘটনা তাদের অন্তর থেকে সরাতে পারছেন সে কথা জানিয়েছেন।

জনপ্রিয় অভিনেতা আবুল হায়াতের বিল্ডিংয়ের একটা ছেলে মারা গেছে এই আন্দোলনে, নাম ফারহান ফাইয়াজ। তিনি এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। জ্যেষ্ঠ এই অভিনেতা-নির্মাতা বলেন, ‘১৮ জুলাই আমি কেঁদেছি। মৃত্যুর খবরে আমার কান্না থামাতে পারছিলাম না। বাচ্চাগুলোর একটার পর একটা মৃত্যুর খবর আসছিল, কিছুতেই কান্না আটকে রাখতে পারিনি। আমি অসুস্থ, এখন বেশির ভাগ সময় বাসায় থাকি, কোথাও বের হই না—আমি তো ভাবতেই পারি না, ছোট ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে এমনটা হতে পারে!’

বিজ্ঞাপন
কোটা আন্দোলনে অকালপ্রয়াত ফারহান ফাইয়াজ

জ্যেষ্ঠ সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদীও বিষণ্ণ প্রতিক্রিয়া জানান গত কয়েকদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে। তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্যটি এসে ভিড় করে বার বার। হৃদয় কেঁদে ওঠে, ঘুম চলে যায়। মাথার ভেতর প্রশ্ন এসে পীড়া দেয়, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও এই দৃশ্য দেখতে হলো? আমার দীর্ঘ জীবনে একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া এমন মৃত্যুর মিছিল তো দেখিনি। এটা তো আমেরিকার গৃহযুদ্ধও নয় বা ফরাসি বিপ্লব নয়। সন্দেহ নেই দেশের প্রতিটি সংবেদনশীল মানুষের অন্তরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সন্তান হারানো প্রত্যেক পিতা–মাতার প্রতিটি অশ্রুফোঁটার মূল্য দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ, সমাজের সর্বক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাসের প্রতিফলনই পারে এই মূল্য পরিশোধ করতে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত প্রযোজক-অভিনেতা-নির্মাতা সোহেল রানা আবু সাঈদ হত্যার বিচার চান তিনি। তার ভাষায়, ‘অনেক জায়গায় না হলেও একটা বিষয় আমরা এবার খেয়াল করেছি, তা হলো রংপুরে আবু সাঈদ নামে যে যুবকটি মারা গেছেন, তার পেছনে কোনও লোকজন ছিলো না। তিনি খোলা হাতে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যুবকটি পুলিশকে ক্ষোভের সুরে বলেছিলেন–আমাকে গুলি করো। তখন একজন দারোগা তাকে গুলি করলেন! তাকে তো জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র দেওয়া হয়েছিল। ওই দারোগাকে জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার। দেশে তো আইন আছে। সাঈদের বিষয়টি তদন্ত করার কিছু নেই। এটি তো প্রকাশ্যে হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন
কোটা আন্দোলনে অকালপ্রয়াত আবু সাঈদ

এদিকে কোটা আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আজ (২৪ জুলাই) থেকে খুলছে অফিস-আদালত-কারখানা। তবে কারফিউ বহাল রয়েছে। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে আজ বুধবার এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার কারফিউ বহাল থাকবে। তবে এ দুদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।