ইন্টারনেটবিহীন সময়ে যা যা করেছেন তারকারা

  • মেহনাজ খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পূজা চেরী, সিয়াম আহমেদ, মোশাররফ করিম ও সুনেরাহ বিনতে কামাল

পূজা চেরী, সিয়াম আহমেদ, মোশাররফ করিম ও সুনেরাহ বিনতে কামাল

কোটা আন্দোলনের জেরে সম্প্রতি সপ্তাহখানেক ইন্টারনেটবিহীন কাটাতে হয়েছে পুরো দেশবাসীকে। তারমধ্যে ছিলো টানা কারফিউ। বর্তমানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট আসলেও ফেসবুক, ইন্সট্রাগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো অনেকটাই অকার্যকর হয়ে আছে! দেশের এই পরিস্থিতিতে কেমন কাটছে তারকাদের জীবন?

এ বিষয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, ‘শুধু কারফিউয়ের ৫দিন নয়, কোটা আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে বাসায় বেশিরভাগ সময় থাকতে হয়েছে। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে নিউজ কিংবা পরিস্তিতির বিষয় জানা যাচ্ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার যেন পুরো সব কিছুই থমকে গেয়েছিলো। প্রতিটা দিনই মনে হয়েছে কি হতে পারে অথবা পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে।’

বিজ্ঞাপন
সুনেরাহ বিনতে কামাল

তিনি আরও বলেন, ‘পুরো আন্দলোন থেকে শুরু করে ইন্টারনেট বন্ধের সময়টা আতঙ্কজনক ছিলো। এটা এমন সময়ও নয় যে পরিবারের সাথে মজা করে সময় কাটাবো কিংবা আনন্দের সাথে থাকবো। অব্যশই অনেক দিন পর পরিবারের সাথে সময় কাটিয়েছি। নিজেকেও সময় দিয়েছি। কারণ ইন্টারনেট না থাকায় পুরো সময়টা যেন কেমন অচল হয়ে গেয়েছিল। যেহেতু আমরা সব সময় ইন্টারনেট ব্যস্ত থাকি অনেকেই। আর আন্দোলনে পুরো বিষয় নিয়ে একটি লাইন বলবো, শুরুতে যদি বসে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়টা সমাধান করা হতো তাহলে অনেক মায়ের সন্তান আজ বেঁচে থাকতো। আশা করি এমন পরস্থিতি আর কখনো যেন বাংলাদেশে না ঘটে।’

জনপ্রিয় চলচ্চিত্র তারকা সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘একটা দমবন্ধ সময় পার করেছি। আমাদের প্রিয় দেশটার বয়স ৫০ পার হওয়ার পরও যদি এরকম সময় পার করতে হয় তাহলে এটা খুব দুঃখজনক। অন্য সবার মতো আমিও দ্রুত স্বাভাবিক সময়ে ফিরতে চাই।’

বিজ্ঞাপন
সিয়াম আহমেদ

এতদিন শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছিলেন সিয়াম আহমেদ। শেষ করেছেন আকাঙ্খিত ছবি ‘জংলি’র শুটিং। তাই বেশ কিছুদিন পরিবারকে খুব বেশি সময় দেয়া হয়নি। কারফিউ-এর সময়টাতে তাই সন্তানকে সময় দিয়েছেন সিয়াম আহমেদ। বলা যায় পুরোটা সময় কাটিয়েছেন পরিবারের সঙ্গেই।

জীবনের এই অস্বাভাবিক সময় নিয়ে দেশের অন্যতম মেধাবী অভিনেতা মোশারফ করিম বার্তা২৪কে বলেন, ‘আধুনিক সময়ে এসে দেশের এমন স্থবির অবস্থা একেবারেই কাম্য নয়। আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে। দেশ আবার আগের মতো সুন্দর ও স্বাভাবিক হবে।’এই অভিনেতা আরও বলেন, ‘কারফিউর এই সময়ে সব কাজ বন্ধ। বাসায় বসে বই পড়ে, টিভিতে খবর দেখে সময় কেটেছে।’

মোশাররফ করিম

তবে টানা ইন্টারনেট সংযোগ না থাকাটাকে ইতিবাচক হিসেবেও দেখছেন মোশাররফ করিম। তিনি বলেন, ‘এর একটা ইতিবাচক প্রভাবও পড়েছে। মানুষের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্ভরশীলতা কমে আসছে। জীবনকে নতুনভাবে উপলব্ধি করা হচ্ছে। অনেকেই বই পড়ায় ফিরে গিয়েছে।’

জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূজা চেরীর সঙ্গে যখন যোগাযোগ করা হয় তখনও দেশে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হয়নি। নেটহীন জীবন কেমন লাগছে জানতে চাইলে পূজা বলেন, ‘২০২৪ সালে এসে এক সপ্তাহ নেট ছাড়া থাকবে এটা কেউ ভেবেছিল। আমাদের এখন তো সকল যোগাযোগ ইন্টানেটনির্ভর, সেটাই নেই। তার উপর কারফিউয়ে কোথাও বের হওয়া যাচ্ছে না। ভাবুন কতটা অসহায় লাগছে।’

পূজা চেরী

কোটা আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে আজও সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা’র পর পুরোটা সময় কারফিউ রয়েছে।

ইন্টারনেটবিহীন সময় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। সময়টিকে দুর্যোগময় বলে অবিহিত করেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তিনি জানেন, এই সময়টাতে তিনি ঢাকায় নিজ বাসাতেই ছিলেন। তার ভাষায়, ‘এই কটা দিন একটা দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে ছিলাম। আমি কেন, পুরো দেশের মানুষই তাই ছিলো। এর আগে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিলো করোনার লকডাউনের সময়। তখন অবস্থা সোশ্যাল হ্যান্ডেল বন্ধ ছিলো না। ফলে এবার তারচেয়েও কঠিন অবস্থায় ছিলাম।’

চঞ্চলের মতে এখনও দুর্যোগ পুরোপুরি কাটেনি। তবে যত দ্রুত সেটি কেটে যায়, সেটাই সবার জন্য মঙ্গল বলে মনে করছেন অভিনেতা।

চঞ্চল চৌধুরী

তার ভাষায়, ‘দেখুন ইন্টারনেট তো শুধু ফেসবুক আর ইউটিউব দেখার জন্য না। ইন্টারনেট এখন আমাদের যোগাযোগ ও বাণিজ্যের অন্যতম মাধ্যম। অসংখ্য মানুষের রুটি-রুজির বিষয়। এটা এখন আমাদের জীবনযাত্রা খুবই দরকারি অনুষঙ্গ। ফলে এটা ছাড়া সময়টা খুবই কঠিন। আশা করছি, ইন্টারনেটসহ আমাদের জীবনযাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক হবে। আমরা দ্রুত কাজে ফিরতে পারবো।’