প্রবাসীদের প্রচেষ্টায় ঘড়ির কাঁটাও যেন ক্লান্ত হয়ে পড়ে!



পিকলু চক্রবর্তী, কাতার থেকে
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রবাস জীবনে পাড়ি জমাতে হবে অনেকে তা কল্পনাই করেন না। যেখানে অপরূপ সুন্দর বাংলাদেশের মাটির সঙ্গে মিশে আছে জীবন, যেখানে প্রকৃতির অপার লীলায় লুকিয়ে আছে প্রাণ। সেগুলো ছেড়ে মরুতে পাড়ি দেওয়া সত্যি বেদনাময়!

অনেকেই প্রবাসে আসার পর প্রথম দিকে ব্যাপারটা তাদের কাছে বনবাসের মত লাগে। আমার দেখা একজন প্রবাসী হিসেবে প্রতিদিনই নিত্য নতুন ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়, সঙ্গে সঙ্গে অভিজ্ঞতার ভান্ডারও বৃদ্ধি পেতে থাকে। প্রবাস জীবন শিখিয়ে দেয় কিভাবে আশেপাশে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুকেই এড়িয়ে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যেতে হয়। নিরাশার অতল গহীনে হারিয়ে যাওয়া ছেলে মেয়েগুলো চোখের নোনাজল আর শরীরের ঘামকে উপেক্ষা করে বলতে শিখেছে “আমি ভাল আছি মা” তোমরা ভাল আছ-তো? এমনকি অনেক অখাদ্যকে অমৃত সুধা মনে করে খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন। খাওয়ার পর মায়ের শাড়ির আচঁলে মুখ মোছা ছেলেগুলোও এখন ধুলোমাখা ঘামের শার্টেই মুখ মোছে।

ঘর থেকে বের হলেই যাদের বাইক কিংবা রিকশার প্রয়োজন হতো, তাদেরকে এখন স্বচক্র যানে বা দ্বিচক্র যানে পায়ে হেঁটেই পাড়ি দিতে হয় অনেকটা পথ। নরম বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়া ছেলেগুলো নরম বিছানার জায়গা কাঠের তক্তা দখল করে নিয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠাতে যাকে ডাকা ডাকির অন্ত থাকত না, প্রবাসী হবার কারণেই তাকে সূর্যি মামার আগেই জেগে উঠতে হয়। শরীর খারাপ’কে পেছনে ফেলে রোদ বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হয় কর্মস্থলে।

এক সময় বন্ধুদের নিয়ে অস্থির জীবন যাপনে অভ্যস্থ ছেলেদের অন্য এক অস্থিরতায় পেয়ে বসে! তা হলো বিদেশে আসার ধার দেনা ফেরত দেওয়ার অস্থিরতা। প্রতিটি টাকা খরচ করতে তাকে দু’বার ভাবতে হয়। যে ছেলেগুলো দেশে কোন কাজই করেনি, প্রবাসে তাদেরকে একটি শুক্রবার কিংবা রোববার কাজ বন্ধ দিলে হতাশা পেয়ে বসে। এই ভেবে যে এ মাসে টাকা কম আয় হবে। অথচ তাদেরকে নিতান্তই ভুলে যেতে হয় যে সপ্তাহের ৬ দিনই ভোর ৪ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়।

ছাত্র রাজনীতির মাঠে বীরদর্পে প্রদক্ষিণ করা ছেলেগুলোই রাজনীতির ভেদাভেদ ভুলে, প্রতিহিংসাকে পেছনে ফেলে “বাংলাদেশি” পরিচয়ে এগিয়ে চলে। বিপদে ভাই বন্ধুর মত পাশে দাঁড়ায়। যদিও সব বাঙালি এক নয়!

সারা দিন কাজের শেষে রাত জেগে পড়াশোনা করতেও তারা ক্লান্ত হয় না, মনে হয় এ যেন জীবনান্দনের মত ক্লান্ত হয়ে ছুটেই চলেছে তারা, ভোর হতেই বেড়িয়ে পড়ে কর্মস্থলে। প্রবাসীদের এমন প্রচেষ্টা দেখে ঘড়ির কাঁটাও যেন ক্লান্ত হয়ে পড়ে!

তবে দিন শেষে প্রবাসীদের জন্য খুব মজার একটি বিষয় হচ্ছে শত কষ্ট, ব্যস্ততার মাঝেও খুশি হতে খুব বেশি কিছু প্রয়োজন হয় না। দেশ ভাল আছে, দেশে সবাই ভাল আছে, পরিবার পরিজনের হাসি মাখা মুখ ও কণ্ঠস্বরই ভরিয়ে দেয় প্রবাসীদের ক্লান্ত প্রাণকে।

প্রবাসে চরিত্রগুলো ভিন্ন হতে পারে কিন্তু তাদের জীবন যুদ্ধ, গল্পকথা মোটামুটি একই রকম। প্রতিটি জীবনই প্রবাসে এসে বদলে যায়, সজ্জিত হয় সম্পূর্ণ এক নতুন ধাচে। প্রবাস জীবন শিখায় জীবনকে উপলব্ধি করতে, শত বাধা বিপত্তি উপক্ষা করে, মারামারি কাটাকাটি’কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মস্তিকের জোড়ে কি ভাবে এগিয়ে যেতে হয়।

তবে একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই! প্রবাসে যারা থাকেন তারা হাড়ে হাড়ে টের পান জীবন কাকে বলে। অথচ দেশ থেকে পরিবার পরিজন বন্ধু-বান্ধবসহ অনেকেই অনেক কিছু দাবি করেন! তবে দাবি থাকটা স্বাভাবিক এবং সেই দাবি মেটানোটা আহামরি কিছুই নয়! কিন্তু চিরন্তন সত্য হলো আপনারা চোখে না দেখলে বুঝবেন না প্রবাসীরা বুকে পাথর রেখে কি ভাবে আপনাদের চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে আবার কখনো কখনো হিমশিমও খেতে হচ্ছে! কারণ অধিকাংশ প্রবাসীদের রোজগারটা তাদের হিসেবের। তারা পারত পক্ষে টাকা খরচ করতে চান না, কেন চান তা ওপরের কথাগুলোর দিকে নজর দিলেই বোঝা যাবে। যে পরিবারের সদস্যরা ভাবেন আপনাদের বাবা, কাকা, মামা, ভাই, বিদেশ থাকেন আপনারা কাজ কর্ম না করে চুল স্পাইক করে, দামি পারফিউম মেখে, মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরাঘুরি করেন আপনারা বুঝবেন না এই টাকাগুলো কত কষ্ট, কত নোনাজল আর ঘামের বিনিময়ে উপার্জিত হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই এক রকম ঘটনা বেশি হয়। পরিবার একজন বিদেশ থাকেন তার ওপর ঝুলে থাকেন বাকি সবাই। আমি মনে করি আপনাদের দাবিটা যতটুকু থাকে তার থেকে বেশি ভালবাসা দেন প্রবাসীদের।

বাংলাদেশ থেকে যারা প্রবাসে এসে কাজ করছেন দেশের রেমিট্যান্স বাড়াচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকার তাদের কতটুকু মূল্যায়ন করে সেটা নিয়েও রয়েছে অনেক সংশয়! প্রবাসে ৫-৭ বছর কাজ করে যখন স্বদেশের টানে সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে যান। তখন এয়ারপোর্টে কত রকমের ঝামেলা পোহাতে হয় তা বলাই বাহুল্য আর যদি কম শিক্ষিত মানুষ হয় তা হলে তাঁর কি অবস্থা হয় তা নিশ্চয় আপনারা অনুমান করতে পারেন। এখানেই শেষ নয় কষ্টের রোজগার দিয়ে যখন পরিবার পরিজনদের জন্য কিছু জিনিসপত্র নিয়ে আসেন সেগুলো নিয়েও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় প্রতারণার শিকার হতে হয়। প্রশ্নটা হচ্ছে এই মানুষগুলোই দেশে ভাল কিছু করার সুযোগ না পেয়ে স্বদেশ ছেড়ে বিদেশ পাড়ি জমান, এবং যেখানে বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে বিশাল অংকের আয়। তা হলে কেন তাদেরকে এত ঝামেলা ও প্রতারণার শিকার হতে হয়। বরং বাংলাদেশ সরকারের উচিত ছিল এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ভালবাসার মালা পড়িয়ে গ্রহণ করা।

বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশ্যে বলব আপনারা কি জানেন মধ্যপ্রাচ্যে এই যোদ্ধারা মরুর বুকে ৪২ থেকে ৫০ ডিগ্রী তাপে সবুজ ঘাস ফলানোর কষ্ট, উঁচু উঁচু দালান তৈরি করার কষ্ট। হাড় কাঁপানো শীতে যোদ্ধারা কি ভাবে কাজ করে যায়। প্রবাসীরা নীরবে নিভৃতে স্বদেশকে ভালোবেসে বিদেশে কাজ করে যাচ্ছেন।

আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৩ বাংলাদেশির যাবজ্জীবন, ৫৪ জনকে জেল



সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে
আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৩ বাংলাদেশির যাবজ্জীবন

আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৩ বাংলাদেশির যাবজ্জীবন

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) একদল বাংলাদেশি প্রবাসী বিক্ষোভ মিছিলের ঘটনায় তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) আদালত। একই সঙ্গে আরও ৫৪ জনকে ১০ এবং ১১ বছরের জেল দেয়া হয়েছে।

সোমবার (২২ জুলাই) আবুধাবি ফেডারেল আপিল আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। কর্তৃপক্ষের বরাতে এই খবর দিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম খালিজ টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার মাঝে নিজ দেশের সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে ইউএই’তে বিক্ষোভের ডাক দেয়া এবং দাঙ্গা উসকে দেয়ার অভিযোগে ওই তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে।

গত সোমবার (২২ জুলাই) আবু ধাবি ফেডারেল আপিল আদালত রায় ঘোষণা করে এবং এই বহিরাগতদের অবৈধ জমায়েতের জন্য শাস্তি দেয়া হয়। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের স্বদেশের সরকারকে চাপ দেওয়ার লক্ষ্যে বিক্ষোভের আহ্বান ও উসকানি দেওয়ার জন্য ৩ অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড জারি করা হয়েছিল।

আদালত আরও ৫৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং একজন আসামিকে অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ ও সমাবেশে অংশগ্রহণের দায়ে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এর আগে, ইউএই’র অ্যাটর্নি-জেনারেল চ্যান্সেলর ডাঃ হামাদ সাইফ আল শামসি অবিলম্বে ওই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন এবং সন্দেহভাজনদের একটি ‘জরুরি বিচার’র জন্য রেফার করেন।

অভিযুক্তরা এই ঘটনার ভিজ্যুয়াল এবং অডিও ক্লিপগুলিও ধারণ করে ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এ বিষয়ে প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা বিদেশের মাটিতে বসে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়। যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা (আজ বুধবার) সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলব। আশা করি দ্রুতই এই সংকটের সমাধান হয়ে যাবে।

;

লন্ডনে চট্টগ্রামের 'মেজ্জান', এ যেন বাঙালির মিলনমেলা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মেজবান বা মেজ্জান চট্টগ্রামের ঐতিহ্য। চট্টগ্রামের মানুষ অতিথিপরায়ণ। নানা উপলক্ষে অতিথি আপ্যায়নে মেজবানির আয়োজন এখন চট্টগ্রামের একটি সংস্কৃতির অংশ। দেশব্যাপী এ মেজবানের খ্যাতি রয়েছে। মেজবান এখন দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও বেশ জনপ্রিয়।

জাঁকজমক চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান ও মিলন মেলা হয়ে গেলো লন্ডনে । পরবাসে সাদা ভাত, ৭ গরুর মাংস আর ডালের এই ভোজ আয়োজন যে কতটা উৎসবমুখর হয়ে উঠতে পারে তারও প্রমাণ মিলল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান আয়োজনে।

স্থানীয় সময় রোববার পূর্ব লন্ডনের মেফেয়ার হলে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে মেজবানি খাবারের পাশাপাশি ছিল মন মাতানো সাংস্কৃতিক আয়োজন। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর প্রতিনিধিত্বকারী ও বাংলাদেশীদের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন ‘গ্রেটার চট্টগ্রাম অ্যাসোসিয়েশন ইউকে’ (জিসিএ) পঞ্চমবারের মতো বিশাল এই আয়োজন করে। এই সংগঠনটি প্রথম বিলাতে তথা প্রবাসে মেজবানকে বিশাল আংগিকে ও ভিন্ন আমেজে পরিচিত করেছে।

বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অনেক কিছুই ঠাঁই করে নিয়েছে সুদূর যুক্তরাজ্যে। পিঠা উৎসব, বৈশাখী মেলা কিংবা বাঙালির বিয়ের মতো জমজমাট আয়োজন এখন নিয়মিত দেখা যায় সেখানে। তিন হাজার মানুষ মেজবানে অংশ নেয় এবারের মেজবানে। এদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এই মিলন মেলা।


সংগঠনের ট্রেজারার মাসুদুর রহমানের উপস্হাপনায় অনুষ্ঠান শুরু হয় কোরান তেলাওয়াত, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের বর্তমান কার্যকরী কমিচির প্রেসিডেন্ট আখতারুল আলম এবং সেক্রেটারি ওসমান মাহমুদ ফয়সাল। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী, ১০৪ বছর বয়স্ক চ্যারিটি ফান্ড রেইজার দবিরুল ইসলাম চৌধুরী, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ট্রাষ্টি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন, চ্যানেল এস'র ফাউন্ডার মাহি জলিল, বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষে ইসমাঈল হোসেন, সাবেক সভাপতি ইসহাক চৌধুরী, ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন, সিপ্লাসটিভির আলমগীর অপু, কাউন্সিলর সৈয়দ ফিরোজ গনী, আই অন টিভির পরিচালক আতাউল্লাহ ফারুক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত মাহমুদ টিপু, সলিসিটর জাগির আলম প্রমুখ।

এ সময় মঞ্চে নানা পর্বের সঞ্চালনায় ছিলেন মোহাম্মদ কায়সার, মাসুদুর রহমান, শহিদুল ইসলাম সাগর, নূরুন্নবী আলী, শহিদুল ইসলাম সাগর, ডা. মিফতাহুল জান্নাত। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সার্বিক ব্যবস্হাপনায় ছিলেন মীর রাশেদ আহমেদ, শওকত মাহমুদ টিপু, আরশাদ মালেক, আলী রেজা, রাজ্জাকুল হায়দার বাপ্পী, হাসান আনোয়ার, ব্যারিস্টার শওকত আলী, টিংকু চৌধুরী, অনুপম সাহা, আবু রায়হান শাকিল, লুতফুন নাহার লীনা, আসমা আলম, ফয়সাল আনোয়ার, শেখ নাছের, ইব্রাহিম জাহান, মোরশেদ, মোহাম্মদ ইসলাম, ফসি উদ্দিন প্রমুখ।


আয়োজনটি চট্টগ্রামবাসীর হলেও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অন্য অঞ্চলের বাংলাদেশিরাও এতে অংশ নেয়। লন্ডনের আশপাশের শহরসহ স্কটল্যান্ড, ম্যানচেস্টার, বার্মিংহামের মতো দূরের শহরগুলো থেকেও চট্টগ্রামবাসী অনেকে ছুটে আসেন ঐতিহ্যবাহী এ আয়োজনে যোগ দিতে। আয়োজকরা বলেন, এবারের মেজবানে কয়েক হাজার লোকের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। মেফেয়ার হলে খাবার পরিবেশনের কক্ষের পেছনের দরজায় ভোজনপ্রেমীদের দীর্ঘ লাইন। এক ব্যাচ খেয়ে সামনের দরজা দিয়ে বের হচ্ছেন। আর পেছন দরজা দিয়ে ঢুকছেন আরেক ব্যাচ। মেজবানের চিরাচরিত টেবিল দখলের দৃশ্যও এখানে বাদ যায়নি। পরিবার-পরিজন নিয়ে একসঙ্গে বসতে টেবিল দখলের প্রচেষ্টাও ছিল লক্ষণীয়।

দিনব্যাপী মেজবানি খাবারের পাশাপাশি চলে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাসী আঞ্চলিক গান, নাচ ও নানা ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন , হিমাংশু গোস্বামী , পাঞ্জাবিওয়ালা খ্যাত শিরিন জাওয়াত , আতিক হাসান , লাবণী বড়ুয়া , এম এ মোস্তফা , তাহমিনা শিপু , আই অন বাংলা স্কুল , পার্পল নাইট ব্যান্ডের জাওয়াদ, রুবেল, জয়, নাবিল , আয়ুস সাহাসহ স্থানীয় শিল্পীবরা। কৌতুক পরিবেশন করেন মিরাকাল কমেডিয়ান আরমন ।

বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী বলেন, মেজবানের খাবার বিশ্বের সেরা খাবার। তিনি চট্টগ্রামের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেন, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চট্টগ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক যোগযোগ বৃদ্ধির জন্যই এই মেজবানের আয়োজন। চট্টগ্রামবাসীসহ অন্যান্য জেলার লোকদের মধ্যে এবারের মেজবান যে সাড়া ফেলেছে, তাতে ভিড় সামলাতে হয়তো ভবিষ্যতে খোলা কোনো মাঠে এই আয়োজন করতে হবে।

;

মালয়েশিয়ায় যৌন বিনোদনকেন্দ্রে বাংলাদেশি নারী-পুরুষ আটক



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
মালয়েশিয়ায় যৌন বিনোদনকেন্দ্রে বাংলাদেশি নারী-পুরুষ আটক

মালয়েশিয়ায় যৌন বিনোদনকেন্দ্রে বাংলাদেশি নারী-পুরুষ আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের ক্লাং ভ্যালির একটি যৌন বিনোদন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ৭৫ জনকে আটক করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ১১ জন বাংলাদেশি নারী এবং ৮ জন বাংলাদেশি পুরুষ। বিদেশি যৌন কর্মীদের এটি একটি বড় সিন্ডিকেট বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ।

মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসোহ বলেন, গত শুক্রবার বেলা ২টায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুত্রজায়া হেডকোয়ার্টারের একটি বিশেষ দল এই অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানের আগে দুই সপ্তাহ ধরে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানো হয় এবং স্থানীয়দের থেকে তথ্য নেয়া হয়।

অভিযানে মোট ৫৭ জন নারীকে আটক করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে ৩২ জন ইন্দোনেশিয়ান, ১১ জন বাংলাদেশি, ৮ জন ভিয়েতনামিজ এবং ৬ জন ভারতীয়।

এছাড়াও অভিযানে ১০ জন পুরুষ আটক হয়েছেন। যাদের বয়স ১৭ থেকে ৪৬ এর মধ্যে। যার মধ্যে রয়েছেন ৭ জন বাংলাদেশি, ২ জন মিয়ানমারের নাগরিক এবং একজন ইন্দোনেশিয়ান।

অভিযানে ৭ জন স্থানীয় পুরুষ এবং একজন নারীকে আটক করা হয়। যাদের বয়স ২৩ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।

অভিযানে আটক ১৩ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী এবং ৪ জন ভিয়েতনামিজ নারীর কাছে বৈধ পাসপোর্ট পাওয়া যায়। এছাড়া ২ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী এবং একজন ভিয়েতনামিজ নারীর ভিসার মেয়ার পূর্ণ হয়েছে।

বাকি কারো কাছেই মালয়েশিয়া থাকার বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

অভিযানে একটি মোবাইল ফোন, ১৫টি ইন্দোনেশিয়ান পাসপোর্ট, পাঁচটি ভিয়েতনামিজ পাসপোর্ট, ১ হাজার ৭৫০ রিঙ্গিত নগদ, একটি কম্পিউটার এবং ১০টি গ্রাহক বই জব্দ করা হয়েছে।

;

মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক খাদ্য ও পানীয় মেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক খাদ্য ও পানীয় মেলায় দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। ২-৪ জুলাই দুই দিনব্যাপী মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের মাইটেক কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত 'ফুড অ্যান্ড ড্রিংকস মালয়েশিয়া বাই সিয়াল’ নামে এ মেলায় বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে। মেলায় বাংলাদেশসহ ২২টি দেশ অংশগ্রণ করে এবং ৩৩০টি বুথ এবং একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক লাউঞ্জে পণ্য প্রদর্শন করা হয়।

মেলার উদ্বোধন করেন মালয়েশিয়ার প্ল্যান্টেশন অ্যান্ড কমোডিটিস বিষয়ক উপমন্ত্রী দাতুক চ্যান ফুং হিন। বাংলাদেশ হাইকমিশনের তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানি প্রাণ ফুডস লিমিটেড। ⁠মেলায় নির্ধারিত বুথের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক লাউঞ্জে অন্য ৭টি দেশের (কানাডা, ইউক্রেন, ভিয়েতনাম, ব্রিটেন এবং আয়ারল্যান্ড, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া) সাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয় পণ্য প্রদর্শন করা হয়।

উদ্বোধনের দিন আন্তর্জাতিক লাউঞ্জ এর বাংলাদেশ কর্নার এবং বাংলাদেশি পণ্যের বুথ পরিদর্শন করেন প্ল্যান্টেশন এবং কমোডিটিস বিষয়ক উপমন্ত্রী দাতুক চ্যান ফুং হিন এবং সাবাহ রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন মন্ত্রী দাতুক ফুং জিন ঝে।

সমাপনী দিন বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই ) মেলা এবং বাংলাদেশী স্টল পরিদর্শন করেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।

এসময় হাইকমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে হাইকমিশন বাংলাদেশের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণসহ অন্যান্য পরিকল্পনা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ⁠রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য বেশি করে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’ অনুসরণের ধারাবাহিকতায় এ ধরনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে।

পরিদর্শনের সময় আয়োজক কোম্পানি কমেক্সপোসিয়াম এশিয়া পেসিফিক এর পরিচালক হেনরি তান, একই কোম্পানির এসিস্টেন্ট মার্কেটিং ম্যানেজার কিয়েন এনজি ও স্মৃতিকা সিভানেসসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রবাসী সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

মালয়েশিয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ও মাইসেব, ম্যাট্রেড, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়, পিকেএনএস, মালয়েশিয়া বিজনেস গ্রুপ, সাবাহ এমআইপিই,মালয়েশিয়া কোকো বোর্ড ও মালয়েশিয়া স্পাইস বোর্ডের সহায়তায় আয়োজিত বিশ্বের ব্র্যান্ড এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের অংশ হিসেবে এ মেলার আয়োজন করা হয়। বিশ্বব্যাপী বাজার অন্বেষণে শিল্প উদ্যোক্তা ও অর্থনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ, ব্যবসায়িক সমঝোতা, উদ্ভাবনী সমাধানে ব্যবসাকে শক্তিশালী করতে প্রতি বছর এ বাণিজ্য সম্মেলন ও মেলার আয়োজন করা হয়।

;