ব্রিটেনের অর্থনীতিতে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের অবদান প্রশংসনীয়

  • বজলুর রশিদ, প্রেসিডেন্ট, ইউকেবিসিসিআই, লন্ডন থেকে
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইউকেবিসিসিআই সেরা ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০১৯ অনুষ্ঠান, ছবি: সংগৃহীত

ইউকেবিসিসিআই সেরা ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০১৯ অনুষ্ঠান, ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটেনের অর্থনীতিতে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের অবদান প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেছেন লন্ডনে আয়োজিত ইউকেবিসিসিআই সেরা ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০১৯ অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা।

তৃতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এ ইউকেবিসিসিআই বিজনেস অ্যান্ড এন্টারপ্রেনার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। উৎসবমুখর আয়োজনে গত রোববার (৬ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ইউকেবিসিসিআই বিজনেস অ্যান্ড এন্টারপ্রেনার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৯।

বিগত ২০১৬ এবং ’১৭ সালের পর এবারের আয়োজন ছিল আরো বেশি অনুপ্রেরণার। এবারও এ পুরস্কার প্রদান আয়োজনের ভেন্যু ছিল সেন্ট্রাল লন্ডনের দ্য লন্ডন হিলটন অন পার্ক লেন। ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের সফলতার স্বীকৃতি স্বরূপ তৃতীয় বারের মতো এ আয়োজনে মোট ১২টি ক্যাটাগরিতে সফল ব্যবসায়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছে ব্রিটিনের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বকারী অন্যতম সংগঠন ইউকেবিসিসিআই।

বিজ্ঞাপন

আইটিভির ব্রডকাস্টার এবং প্রেজেন্টার শামীনা আলী খানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘ক্যাটারিং খাত ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন অর্থের যোগান দিচ্ছে ব্রিটেনের ইকোনমিতে। তবে ব্রিটেনের ৫ লাখ বাংলাদেশি এদেশের আইটি খাত থেকে শুরু করে, আমদানি, রফতানি, চিকিৎসা, রিটেইলসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের মেধা ও পরিশ্রমে দেশের জিডিপি প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এর পেছনের সেরাদের কৃতিত্ব গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরাই এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য।’

তিনি আরো বলেন, ‘ব্রিটেনে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের অর্জন তুলে ধরার পাশাপাশি তারা যেন আরো তাদের রোল মডেল খুঁজে নিতে পারে এবং উৎসাহ পায় তাই ইউকেবিসিসিআই এবারও ১২টি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাটাগরিতে সম্মাননা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংগঠনের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ বলেন, ‘ব্রিটিশ অর্থনীতিতে আমরা সাফল্যের চিহ্ন রেখেছি। তবে সময় এসেছে বাংলাদেশ এবং ব্রিটেনের মধ্যকার ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ানোর। বাংলাদেশ এখন সম্ভাবনাময় দেশ। আর তাই বাংলাদেশের সফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ব্রিটেনের সফল ব্যবসায়ীদের একই ছাতার নিচে নিয়ে আসার কাজটি করছে ইউকেবিসিসিআই। আর এতে করে দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিটেনের ক্ষমতাশীন কনজার্ভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান রাইট অনারেবল জেইমস ক্লেবারলি এমপি বলেন, ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা ব্রিটেনের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। আজকের সম্মাননা অনুষ্ঠানে সফল উদ্যোক্তারা প্রশংসার দাবিদার। আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট পরবর্তী সরকারের পলিসি যেন ব্যবসায়ীদের আরো উৎসাহিত করে সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। ইউকের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার লক্ষ্যে সরকার সব সময় উদগ্রীব এবং এবারও এর ব্যতিক্রম নয়।’

ইউকেবিসিসিআইয়ের মর্যাদাকর ‘আজীবন সম্মাননা’ পুরস্কার লাভ করেন অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, পাইওনিয়্যার ইন্স্যুরেন্স ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ মনজুর এলাহি।

তিনি তার বক্তব্যে ব্রিটেন ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনে ইউকেবিসিসিআই যে কাজ করছে তা প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেন।

তিনি আরো বলেন, ‘একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি মনে করেন, কঠোর পরিশ্রম, সততা, অধ্যবসায় ও নিষ্ঠা থাকলে মানুষ সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে খুব সহজেই।’

তিনি ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের সাফল্যের স্মারক দেখে অভিভূত। এসব সফল উদ্যোক্তাদের মেধা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে। আর তাই বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান তিনি।

এ ছাড়া ইউকেবিসিসিআই স্পেশাল রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ডস দেওয়া হয় বিলেতের প্রাচীনতম সাপ্তাহিক পত্রিকা জনমত এবং সংগঠনের চয়েস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় ইউকের অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল এসকে।

এছাড়া নতুন প্রজন্মের জন্য ইয়াং এন্টারপ্রেনার অব দ্য ইয়ার, ইন্সপারেশনাল বিজনেস লিডার অব দ্য ইয়ার, রেস্টুরেন্ট অফ দ্য ইয়ার, ফ্যামিলি বিজনেজ অফ দ্য ইয়ার, বিজনেজ ওমেন অফ দ্য ইয়ার, কন্ট্রিভিউশন টু দি ইন্ডাস্ট্রি, বেস্ট নিউ বিজনেজসহ ১২টি অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে তাদের সাফল্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম, বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এমপি রুশনারা আলী, পল স্কালি এমপি, লর্ড কারান বিলিমরিয়া, ইউকেবিসিসিআই ভাইস চেয়ারম্যান এম.এ. রউফ জেপি, ফাইনান্স ডাইরেক্টর নাজমুল ইসলাম নুর, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাফেয়ার্স ডাইরেক্টর, রহিমা মিয়াসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। পুরস্কার দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে শীর্ষ শিল্পীরা নাচ ও গান পরিবেশন করেন।