ফাইজারের টিকা দ.আফ্রিকার ধরন রোধে কম কার্যকর
বিশ্বে নতুন করে আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। এর মধ্যে ফাইজারের টিকা নিয়ে খারাপ খবর শুনালো ইসরায়েলের তেল আবিব ইউনিভার্সিটি ও ইসরায়েলের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ক্লালিৎ। খবর: আল-জাজিরা।
তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনাভাইরাসের ধরনের বিরুদ্ধে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা কম কার্যকর। শনিবার (১০ এপ্রিল) এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, দুই ডোজ টিকা নিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকান এই ধরনটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে ফাইজারের ভ্যাকসিন। যদিও এটা এখনও পরিষ্কার নয় যে এর ফলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কতটুকু হারায়।
শনিবার প্রকাশিত ওই গবেষণায় প্রায় ৪০০ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর ওপর চালানো হয়েছে। এই রোগীরা করোনার টিকার প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ বা তারও বেশি দিন পর তাদের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে গবেষকেরা পর্যালোচনা করেন। তাতে প্রাপ্ত ফলাফল আরও ৪০০ জন ব্যক্তির সঙ্গে মেলানো হয়। ওই ৪০০ ব্যক্তি করোনার টিকা নেননি।
এখানে দেখা যায়, ইসরায়েলে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ১ শতাংশের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকান এই ধরনটি (বি.১.৩৫১) পাওয়া গেছে। কিন্তু রোগীদের মধ্যে যারা এই ভ্যাকসিনের দুই ডোজ গ্রহণ করেছেন তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা ভ্যাকসিন না নেওয়া মানুষের থেকে ৮ গুণ বেশি। এর হার ৫ দশমিক ৪ বনাম শূন্য দশমিক ৭।
গবেষকরা বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকান এই ধরনের বিরুদ্ধে ফাইজারের ভ্যাকসিন খুব একটা কার্যকর না। করোনাভাইরাসের এই ধরনটি ব্রিটেনে প্রথম শনাক্ত হয়। ইসরায়েলে মূলত এই ধরনটি নিয়েই গবেষণা করা হয়।
গবেষক দলের প্রধান তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের আদি স্ট্রেন বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যারা দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা এবং যারা ভাকসিন নেননি তারাও একটা অনুপাতে আক্রান্ত। এর মানে ভ্যাকসিনের প্রতিরোধী ক্ষমতাও ভেঙে ফেলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকান ধরন।
যদিও গবেষকরা সতর্ক করেছেন যে, গবেষণায় খুবই কম সংখ্যক দক্ষিণ আফ্রিকান ধরনে আক্রান্তদের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। কারণ ইসরায়েলে এই ধরনের করোনায় আক্রান্তের খবর খুব একটা নেই।
তারা আরও বলেছেন, এর ফলে তারা এমন কোনো অনুমান করছেন না যে করোনার অন্যান্য ধরনের ওপর ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নেই। এটা কেবলমাত্র ওই সকল মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে যারা করোনা পজিটিভ, পুরো আক্রান্তের হারের ওপর নয়।
যদিও দাফতরিক সময়ের বাইরে এই ব্যাপারে ফাইজার-বায়োনটেকের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ১ এপ্রিল ফাইজার-বায়োনটেক জানায়, তাদের তৈরি টিকা করোনার বিরুদ্ধে ৯১ শতাংশ কার্যকর। এবং তারা ছয় মাসের ওপরে টিকার ট্রায়াল চালিয়ে এ মন্তব্য করে।