আসছে যশ, ছাপিয়ে যেতে পারে আম্ফানকেও

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কলকাতা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল। পশ্চিমবঙ্গে ‘আম্ফান’ এর ক্ষত এখনও শুকায়নি। কয়েকদিন আগেই সাইক্লোন ‘তকতে’ ভারতের পশ্চিম উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে গুজরাট, মুম্বাই। এরই মধ্যে বাংলার দিকে এগিয়ে আসছে বিধ্বংসী সাইক্লোন ‘যশ’। উত্তর আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ সোমবার (২৪ মে) এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেটি শক্তি বাড়িয়ে পরিণত হবে তীব্র মাত্রার বা তার থেকেও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে। আর যা এগিয়ে আসবে বাংলার দিকেই। অন্তত তেমনই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর। আগামী ২৬ মে, সেটি পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার বেগে। ২৫ মে থেকে ঝোড়ো হাওয়া এবং ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও দেওয়া হয়েছে। গত বছর ২০ মে পশ্চিমবঙ্গকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ার আগে তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার। সেদিক থেকে ‘যশ’ আম্ফানকেও ছাপিয়ে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের মূল অভিমুখ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল। আগামী ২৬ মে, বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ ও তার সংলগ্ন বাংলাদেশ এবং উত্তর ওড়িশা উপকূলে এটি আছড়ে পড়তে চলেছে। শনিবার নিম্নচাপ তৈরি হয়ে গিয়েছে। এদিন অর্থাৎ রোববার (২৩ মে) সকালে সেটি শক্তি বাড়িয়ে গভীর থেকে অতি গভীর নিম্নচাপের আকার নেবে। সোমবার সেই অতি গভীর নিম্নচাপ আরও শক্তি সঞ্চয় করে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এ পরিণত হবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সেটি আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে আকার নেবে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের।

তার জেরে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই উত্তর ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং সংলগ্ন বাংলাদেশ উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিপাত শুরু হবে। ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। তারপর সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা আরও বাড়বে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থলটি উপকূলের কোন এলাকা দিয়ে স্থলভূমিতে প্রবেশ করবে তা এখনও অব্দি জানা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

সাধারণত পশ্চিমবঙ্গ এ ধরনের ঝড়ের খুব একটা সম্মুখে পড়েনি। তবে গতবার শিক্ষা দিয়েছে আম্ফান। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর মোকাবিলায় আগাম প্রশাসনিক প্রস্তুতি একপ্রকার সেরে ফেলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের প্রশাসন। তবে রাজ্যের সাধারণ মানুষের এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, আম্ফানের থেকেও কি বিধ্বংসী হবে যশ? আবহাওয়াগত বিচারে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৬ কিলোমিটার অতিক্রম করলেই সেটিকে অতি তীব্র তকমা দেওয়া হয়ে থাকে। আর ঘণ্টায় ১১৮ কিলোমিটার গতিবেগ পার করলেই সেটিকে বলা হয় খুব তীব্র ঘূর্ণিঝড়। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর এখনও যা ইঙ্গিত দিচ্ছে তাতে স্পষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’এবং ‘আম্ফান’এর সমকক্ষ হতে চলেছে।