পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া দামে তেল বিক্রি নয়, ডিক্রি জারি পুতিনের
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর চাপের মুখে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে পাল্টা রণকৌশল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ডিক্রি জারি করে ঘোষণা করেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর বেঁধে দেওয়া দামে যে তেল কোম্পানিগুলো তেল কিনতে চাইবে, ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের কাছে কোনও তেল বিক্রি করা হবে না।
ডিসেম্বর মাসের শুরুতে সমুদ্রপথে সরবরাহ রাশিয়ার তেলে নিষেধাজ্ঞা বসিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই সঙ্গে তারা জি-৭ জোটের দেশগুলো (কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, জাপান, ব্রিটেন, আমেরিকা) গোটা বিশ্বের জন্য তেল কেনার দর বেঁধে দিয়েছে ব্যারেল পিছু ৬০ ডলারে। সেই সিদ্ধান্তকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের ডিক্রি— যে বিদেশি ব্যক্তি এবং সংস্থা বেঁধে দেওয়া দরে তেল কিনতে চাইবে রাশিয়ার দরজা তাদের জন্য বন্ধ।
মস্কোর অভিযোগ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জি-৭ অপরিশোধিত তেলের (উরাল ক্রুড) যে দাম বেঁধেছে তা উৎপাদন খরচের থেকে ১২-১৫ ডলার কম। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলোর বাজার বন্ধ হওয়ায় রাশিয়ার তেল উৎপাদনকারীরা সংকটের মুখে। অর্থনীতিকে সচল রাখতে তেল তাদের বেচতেই হবে।তাই এশিয়ার মতো বিকল্প বাজারে খুঁটি শক্ত করতে অন্যান্য সরবরাহকারীদের থেকে বেশি ছাড় দিয়ে ক্রেতা টানা ছাড়া উপায় নেই। যার সুবিধা পাচ্ছে ভারতের মতো বিপুল তেল আমদানিকারী দেশ।
আমেরিকা ও ইউরোপের দাবি, দর বাঁধলে ও নিষেধাজ্ঞা চাপালে রাশিয়ার তেল বাজারে আসা পুরো বন্ধ হবে না। ফলে দামের স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। মস্কো অতিরিক্ত লাভের মুখ দেখবে না এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাতে সেই অর্থ ব্যবহার করতে পারবে না।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া সত্যিই রফতানি বন্ধ করলে অপরিশোধিত তেলের দাম মাত্রা ছাড়াতে পারে। যা নতুন করে তৈরি করবে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা। আরও মাথাচাড়া দিতে পারে মূল্যবৃদ্ধি। মস্কোও পরিস্থিতি বুঝে সেই পথেই হাঁটতে চাইছে।