ইউক্রেনে লেপার্ড–২ ট্যাংক পাঠাবে জার্মানি
রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনে লেপার্ড–২ ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। এমনকি অন্য কোনো দেশ পাঠালেও তারা বাধা দেবে না বলে জানিয়েছে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানি প্রথমে লেপার্ড–২ ট্যাংকগুলো ইউক্রেনে পাঠাতে অনুমতি দিতে চাচ্ছিল না। কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জার্মানির চ্যান্সেলর ১৪টি লেপার্ড-২ ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এদিকে পোল্যান্ডও ১৪টি লেপার্ড-২ ট্যাংক ইউক্রেনে পাঠানোর কথা জানিয়েছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যও একই সংখ্যক চ্যালেঞ্জার-২ ট্যাংক ইউক্রেনকে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ অনুসারে, অন্তত ১৬টি ইউরোপীয় ও ন্যাটো দেশের কাছে লেপার্ড–২ ট্যাংক রয়েছে।
লেপার্ড ২ ট্যাংক কী?
লেপার্ড ২ ট্যাংক হল বিশ্বের অন্যতম প্রথমসারির যুদ্ধ ট্যাংক। যা জার্মান সেনাবাহিনী এবং ১৬টি ইউরোপীয় দেশের সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে। পাশাপাশি, কানাডা, ইন্দোনেশিয়ার মত ইউরোপীয় নয়, এমন দেশগুলোও ব্যবহার করে এই ট্যাংক। আফগানিস্তান, কসোভো এবং সিরিয়ার লড়াইয়ে এই ট্যাংক ব্যবহার দেখেছে বিশ্ববাসী।
এর বিশেষত্ব
ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা চালিত এই যুদ্ধ ট্যাংকে নাইট-ভিশন ইকুইপমেন্ট এবং একটি লেজার রেঞ্জ ফাইন্ডার আছে। এর সাহায্যে লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব মাপা যায়। রুক্ষ ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় এই ট্যাংক চলমান লক্ষ্যের ওপর ভালোভাবে নজরদারি করতে সাহায্য করে। এই ট্যাংকের এরকম আরও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ডিজাইনও বিভিন্নরকম হয়।
কীভাবে এই ট্যাংক ইউক্রেনকে সাহায্য করবে?
এতদিন পর্যন্ত ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়েই যুদ্ধে সোভিয়েত যুগের ট্যাংক ব্যবহার করেছে। সেখানে লেপার্ড ২-এর মত আধুনিক যুদ্ধ ট্যাংক ব্যবহার হলে, তা ইউক্রেনকে যথেষ্ট সাহায্য করবে। ইউক্রেন সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মিত্রদের থেকে সামরিক সহায়তা চায়। দীর্ঘদিন ধরেই খোদ জেলেনস্কি তার মিত্র দেশগুলোর কাছে ট্যাংক দিয়ে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়ে আসছেন। তার মধ্যে রয়েছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা প্রতিরোধ ব্যবস্থা। দূরপাল্লার কামান থেকে রক্ষা করার মত যুদ্ধবিমানও চাইছেন জেলেনস্কি।
এই পরিস্থিতিতে লেপার্ড ২ পেলে রাশিয়ার হামলা প্রতিরোধে ইউক্রেনের লাভই হবে। রাশিয়া গ্রীষ্মকালে পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্ক প্রদেশের দুটি শহর দখল করেছিল। ইউক্রেন তার হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে চায়। শীতের শেষে বসন্তে তাই ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে বড় লড়াই হতে পারে। তবে, সবটাই নির্ভর করবে ইউক্রেনের কাছে কত অস্ত্র পৌঁছচ্ছে বা কী ধরনের উন্নতমানের অস্ত্র পৌঁছচ্ছে, তার ওপর।