ভূমিকম্প: তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার মানুষের সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে ঘুম ভাঙে। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে বলে বিবিসি ও এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল- জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ধসে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। এ ঘটনায় তুরস্কে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটি ৮৪ বছরের মধ্যে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প দেখেনি।
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত তুরস্কে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৪৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ৮১০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে।
এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শত শত মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা ওই এলাকার বিভিন্ন শহর ও শহরে ধ্বংসাবশেষের স্তূপে অভিযান চালাচ্ছেন। ফলে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরে। ভূমিকম্পের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান একে ১৯৩৯ সালের পর সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তুরস্কের ১০টি শহর ও প্রদেশের স্কুল এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি হাতায়, মারাশ এবং আন্তেপের বিমানবন্দরগুলো বন্ধ বা আংশিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রচণ্ড শীতের মধ্যে তুষারে ঢাকা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হয়। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে, এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপে বহু মানুষ আটকা পড়েছে বলেও খবর আসছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, দেশটির দক্ষিণ-পূর্বের বেশ কয়েকটি শহরের ভবন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমাচ্ছিলেন।