চতুর্দেশীয় অক্ষের (কোয়াড) বৈঠকে যোগ দিতে তিন দিনের আমেরিকা সফরের জন্য রওনা হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে থাকবেন কোয়াডের অন্য সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানেরাও। এই সফরে মোদী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে শান্তি প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলির মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় থাকবেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় এ খবর জানানো হয়।
কোয়াডের সদস্য দেশের সংখ্যা চার। ভারত ছাড়াও কোয়াডে রয়েছে আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া। এ বছর কোয়াডের চতুর্থ বৈঠক আয়োজন করেছে আমেরিকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সফরের আগে মোদী বলেছেন, ‘আমার সহকর্মী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিস এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, সংহতি এবং অগ্রগতির কথা চিন্তা করে, এমন চার সমদর্শী দেশের সংগঠন হিসাবে কোয়াড উঠে এসেছে। বাইডেনের সঙ্গে আমার বৈঠকে আমেরিকা এবং ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আমি আশা করছি।’
নিজের শহর উইলমিংটনে কোয়াডের বৈঠক আয়োজন করেছেন বাইডেন। ওই বৈঠক ছাড়াও আমেরিকায় তিন দিনে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে মোদীর। তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকায় ভারতীয় প্রবাসীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি। সেই সঙ্গে সে দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও দেখা হবে আমার। তারাই দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্কে স্বচ্ছতা প্রদান করেন।’
উল্লেখ্য, আগামী নভেম্বরেই আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ডেমোক্রাটিক দলের তরফে এ বছর প্রার্থী হয়েছেন আমেরিকার বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস। অন্য দিকে, রিপাবলিকান প্রার্থী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার এমন একটি রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণের মুখে মোদীর সফরের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। তাদের মতে, আমেরিকায় গিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে শান্তি প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলির মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় থাকবেন মোদী। সেই সঙ্গে পশ্চিম এবং মধ্য এশিয়ার সংঘাত নিরসনের বিষয়েও তিনি আলোচনা করতে পারেন। কোয়াডের বৈঠকে অন্যতম গুরুত্ব হয়ে উঠতে পারে সমুদ্রে চিনের আধিপত্যের মোকাবিলার প্রসঙ্গটি। সব মিলিয়ে মোদীর ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বরের আমেরিকা সফরকে গুরুত্ব সহকারেই দেখছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় ইব্রাহিম আকিল নামে হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডারসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালায়েছে। এতে ১২ জন নিহত ও ৬৬ জন আহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে ইব্রাহিম আকিল ছাড়া বাকি ১১ জনের ১০ জনই হিজবুল্লাহর বিভিন্ন পর্যায়ের কমান্ডার বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার আকিলক নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করলেও হিজবুল্লাহ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য জানায়নি।
নিহত আকিল হিজবুল্লাহর ‘রাদওয়ান বাহিনীর’ জ্যেষ্ঠ নেতা ছিলেন বলে জানা গেছে। হামলার সময় তিনি হিজবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে ছিলেন।
নিহত আকিল ১৯৮০ এর দশকে হিজবুল্লাহতে যোগ দেন। তিনি লেবাননের বাইরে অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে দুইটি ভবন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন অনেকেই। লেবাননের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা আহত ও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়াদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন।
লেবাননের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগে নগরীর দক্ষিণ শহরতলিতে ইরান-সমর্থিত ঘণবসতিপূর্ণ দাহেহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে লেবাননে সম্বলিত পেজার এবং ওয়াকিটকি বিস্ফোরণে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও কয়েক হাজার নাগরিক। এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হিজবুল্লাহ। যদিও ইসরায়েল তা অস্বীকার করেছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক কাহিনীর বোমা হামলায় আরও ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার সকাল গাজা জুড়ে অব্যাহত ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় শিশুিসহ কমপক্ষে আরও ৩৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এরমধ্যে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের মেসবাহ এলাকায় দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় চালায়, এতে তিন শিশুসহ অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এছাড়া, পশ্চিম তীরের কাবাতিয়াতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ফলে সর্বোচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে শিশুদের। চরম অবস্থা পার করছে তারা। একদিকে খাদ্য, পানি ও বিদ্যুৎ সংকট, অন্যদিকে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। ফলে অপুষ্টিতে ভুগছে হাজার হাজার শিশু।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪১ হাজার ২৭২ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯৫ হাজার ৫৫১ জন। এছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
অন্যদিকে হামাসের হামলায় এ পর্যন্ত ইসরায়েলের এক হাজার ১৩৯ জন নাগরিক নিহত হয়েছে। এছাড়াও ২০০ জনের বেশি মানুষ বন্দি রয়েছে।
ভারতের কাশ্মীরে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত বাস দুর্ঘটনায় ৩ বিএসএফ জওয়ান নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৩২ জন জওয়ান।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) জম্মু ও কাশ্মীরের বুদগাম জেলায় একটি পাহাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত বাসটিতে মোট ৩৫ জন বিএসএফ জওয়ান ছিল। বাসটি মধ্য কাশ্মীরের ব্রেল ওয়াটারহেল এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং তাদের জরুরি চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় একজন বেসামরিক চালকও আহত হয়েছেন।