নাইজারের অভ্যুত্থানের সুযোগ নিচ্ছে ওয়াগনার : ব্লিঙ্কেন

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বিবিসিকে বলেছেন, নাইজারে চলমান অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিচ্ছে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা গ্রুপ ওয়াগনার।

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশটি শাসনভার হাতে নিয়েছে জান্তা সরকার।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি এমন তথ্য পাওয়া গেছে যে, অভ্যুত্থান নেতারা ওয়াগনারের কাছ থেকে সাহায্য চেয়েছেন।

ওয়াগনার সেনারা বর্তমানে নাইজারের প্রতিবেশী দেশ মালিতে রয়েছেন বলেও জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

ব্লিঙ্কেন বলেন, রাশিয়া বা ওয়াগনার নাইজারের অভ্যুত্থানে প্ররোচিত করেছে বলে তিনি মনে করেন না।

ব্লিঙ্কেন বিবিসির ফোকাস অন আফ্রিকা প্রোগ্রামকে বলেছেন, সাহেল অঞ্চলের কিছু অংশে এই গ্রুপটির নিজেকে প্রকাশ করা নিয়ে চিন্তিত যুক্তরাষ্ট্র।

ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমি মনে করি নাইজারে যা ঘটেছে এবং যা ঘটছে তা রাশিয়া বা ওয়াগনার দ্বারা প্ররোচিত হয়নি। তবে, তারা এটির সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ওয়াগনার গ্রুপ প্রতিটি জায়গায় ধ্বংস, শোষণ এবং হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। তাই আফ্রিকা অঞ্চলের নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে।’

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (সিএআর) এবং মালিসহ অফ্রিকার দেশগুলোতে ওয়াগনারের হাজার হাজার যোদ্ধা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। সেখানে গ্রুপটির লাভজনক ব্যবসায়িক স্বার্থ রয়েছে।

তবে, গ্রুপটি সব সময় রাশিয়ার কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককেও শক্তিশালী করে থাকে।

গ্রুপটির যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আফ্রিকার কয়েকটি দেশে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

তা সত্ত্বেও গুঞ্জণ রয়েছে যে, নাইজারের সেনাবাহিনী ওয়াগনারকে সহায়তার জন্য বলেছে। কারণ, দেশটি সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার মুখে দাঁড়িয়ে আছে।

পশ্চিম আফ্রিকার ১৫টি রাষ্ট্রের বাণিজ্য ব্লক ইকোওয়াস নাইজারের জান্তা নেতাদের পদত্যাগ এবং প্রেসিডেন্ট বাজুমকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য গত রবিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিল।

এই সময়সীমা উপেক্ষা করায় পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক করার কথা রয়েছে ইকোওয়াসের।

এদিকে, সোমবার (৭ আগস্ট) মার্কিন উপ-সচিব ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড অভ্যুত্থান নেতাদের সঙ্গে কঠিন এবং খোলামেলা আলোচনা করেছেন।

বর্তমানে বন্দী বাজুম আফ্রিকাতে ওয়াগনারের প্রভাব সম্পর্কে তার উদ্বেগের কথাও বলেছেন।

ওয়াশিংটন পোস্টে গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি লেখায় বাজুম লিখেছেন, ‘অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রকারী এবং তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের আমন্ত্রণে পুরো মধ্য সাহেল অঞ্চলটি ওয়াগনার গ্রুপের মাধ্যমে রাশিয়ার প্রভাবে পড়তে পারে, যার নৃশংস সন্ত্রাসবাদ ইউক্রেনে সম্পূর্ণরূপে প্রদর্শিত হয়েছে।’

ওয়াগনার যোদ্ধারা নাইজারে প্রবেশ করেছে কিনা তা বর্তমানে স্পষ্ট নয়। তবে বিশিষ্ট ওয়াগনারঅধিভুক্ত টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন সোমবার বলেছে, তাদের প্রায় ১,৫০০ যোদ্ধাকে সম্প্রতি আফ্রিকায় পাঠানো হয়েছে।

ওয়াগনার নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) টেলিগ্রামে আপলোড করা একটি ভয়েস বার্তায় জান্তাকে তাদের আমন্ত্রণ জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বদা ভালোর পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে এবং যারা তাদের সার্বভৌমত্বের জন্য এবং তাদের জনগণের অধিকারের জন্য লড়াই করে তাদের পক্ষে।’

নাইজার একটি সাবেক ফরাসি উপনিবেশ এবং অভ্যুত্থান দেশটিতে ফ্রান্সবিরোধী এবং রাশিয়াপন্থী অনুভূতির একটি তরঙ্গের দিকে পরিচালিত করেছে৷

অন্যদিকে, জান্তা দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী আলী মহামান লামিন জেইনকে অভ্যুত্থানের পর দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।

এর মাধ্যমে জেইন অভ্যুত্থানের সময় ইউরোপে থাকা মহামাদু ওহৌমাউদুউয়ের স্থলাভিষিক্ত হন।