যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ আত্মহত্যার রেকর্ড

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সংগৃহীত প্রতীকী ছবি

সংগৃহীত প্রতীকী ছবি

সদ্য প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক আত্মহত্যার ঘটনা রেকর্ড করা করেছে। ২০২২ সালে সেদেশে ৪৯ হাজরেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) নতুন তথ্য পোস্ট করেছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যা খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যা ২০০০ সালের শুরু থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত বেড়েছে এবং ২০২২ সালে আত্মহত্যার জাতীয় হার ১৯৪১ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।

কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম বছর ২০১৯ সালে আত্মহত্যার হার কিছুটা কমে এবং ২০২০ সালে আরেকটু কমে আসে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু, ২০২১ সালে, আত্মহত্যার ঘটনা বেড়ে যায় ৪ শতাংশ। নতুন তথ্য অনুসারে ২০২২ সালে সংখ্যাটি লাফিয়ে ৪৯ হাজার ৪৪৯ জনে দাঁড়ায়, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি।

সিডিসি তথ্য বলছে, ২০২২ সালে মোট আত্মহত্যার সংখ্যার প্রায় ৭৯ শতাংশই পুরুষ।

যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্য সচিব জেভিয়ের বেসেররা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘১০ জনের মধ্যে নয় জন আমেরিকান বিশ্বাস করেন যে, আমেরিকা একটি মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, অনেক লোক এখনও বিশ্বাস করে যে, সাহায্য চাওয়া দুর্বলতার লক্ষণ।

ফ্লোরিডার ৪৫ বছর বয়সি ক্রিস্টিনা উইলবার, যার ছেলে গত বছর নিজেকে গুলি করে হত্যা করেছিল, তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘কোনও একটা ভুল হচ্ছে। আমার ছেলের মরা উচিত হয়নি। আমাদের এই প্রবণতার বিরুদ্ধে কিছু করতে সক্ষম হতে হবে। এমন কিছু করতে হবে যা আমরা এখন করছি না।’

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধির নেপথ্যে বিষণ্নতার উচ্চ হার এবং মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার সীমিত প্রাপ্যতাসহ নানা কারণ থাকতে পারে।

আমেরিকান ফাউন্ডেশন ফর সুইসাইড প্রিভেনশনের রিসার্চের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জিল হারকাভি-ফ্রাইডম্যান বলেছেন, বন্দুকের ক্রমবর্ধমান প্রাপ্যতাই আত্নহত্যার প্রধান কারণ।

সাম্প্রতি জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির বিশ্লেষণে ২০২২ সালের প্রাথমিক তথ্য ব্যবহার করে গণনা করে দেখা গেছে, দেশটিতে বন্দুকের গুলিতে আত্মহত্যার হার গত বছর সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। এ ছাড়াও গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন যে, প্রথমবারের মতো কালো কিশোরদের মধ্যে গুলিতে আত্মহত্যার হার সাদা কিশোরদের হারকে ছাড়িয়ে গেছে।

হার্কাভি-ফ্রাইডম্যান বলেন, ‘আমি জানি না আপনি আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে কথা না বলে আত্মহত্যা সম্পর্কে কথা বলতে পারবেন কিনা।’

সিডিসি জানিয়েছে, আত্মহত্যার সবচেয়ে বড় বৃদ্ধি বয়স্কদের মধ্যে দেখা গেছে। ৪৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সি মানুষের মধ্যে মৃত্যু প্রায় ৭ শতাংশ বেড়েছে এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের লোকেদের মধ্যে ওই প্রবণতা ৮ শতাংশেরও বেশি।

অনেক মধ্যবয়সি এবং বয়স্ক মানুষ চাকরি হারানো বা জীবনসঙ্গী হারানোর মতো সমস্যার সম্মুখীন হন। সিডিসির প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডেব্রা হাউরি বলেছেন, তাদের সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কলঙ্ক এবং অন্যান্য বাধা দূর করা গুরুত্বপূর্ণ।

সিডিসি কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই ভয়াবহ পরিসংখ্যান সত্ত্বেও ২০২২ সালে ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সিদের মধ্যে আত্মহত্যার পরিমাণ ৮ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলোর প্রতি মনোযোগ দেওয়ার কারণে হতে পারে।