সিনেটর বব মেনেনডেজের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বব মেনেনডেজ। ছবি : সংগৃহীত

বব মেনেনডেজ। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সিনেটর বব মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।

ওই দুজনের বিরুদ্ধে মিশরকে সুবিধা পাইয়ে দিতে বৈদেশিক নীতিকে প্রভাবিত করাসহ বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কাজের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলেছেন প্রসিকিউটররা।

বিজ্ঞাপন

ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি অফিস শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রী নাদিনের বিরুদ্ধে নিউ জার্সির তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেছে।

ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি অফিস তাদের অভিযোগে বলেছে, ‘ওই ঘুষের মধ্যে নগদ অর্থ, স্বর্ণ, একটি বাড়ির বন্ধকের জন্য অর্থপ্রদান, একটি কাজের জন্য ক্ষতিপূরণ, একটি বিলাসবহুল যানবাহন এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস অন্তর্ভুক্ত ছিল।’

বিজ্ঞাপন

প্রসিকিউটররা বলেন, ওই সিনেটর দম্পতির বাড়িতে তল্লাশি করে সোনার বার এবং লুকানো নগদ ৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে।

ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেনেনডেজ এবং তার স্ত্রী তিনটি ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। সেগুলো হলো, ঘুষ নেওয়ার ষড়যন্ত্র, পরিষেবা জালিয়াতির ষড়যন্ত্র এবং সরকারি অধিকারের আড়ালে চাঁদাবাজি।

অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসার পরে এক বিবৃতিতে, মেনেনডেজ বলেছেন, তিনি মিথ্যা এবং অপপ্রচারের শিকার।

তিনি প্রসিকিউটরদেরকে তার এবং তার স্ত্রী সম্পর্কে মিথ্যা দাবির জন্য অভিযুক্ত করে বলেন, বিরোধীরা প্রথম প্রজন্মের ল্যাটিনো আমেরিকান, যারা মার্কিন আইনসভায় সততার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা মেনে নিতে পারে না।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অভিযোগকারীরা কংগ্রেসনাল অফিসের স্বাভাবিক কাজকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। এ ছাড়াও, তারা শুধুমাত্র আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা দাবি করে সন্তুষ্ট নয়, তারা আমার স্ত্রীকেও আক্রমণ করেছে।’

প্রভাবশালী ইউএস সিনেট কমিটির পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক প্রধান ৬৯ বছর বয়সি সিনেটর মেনেনডেজের বিরুদ্ধে এর আগেও নিউ জার্সিতে সরকারি সুবিধার বিনিময়ে একজন ধনী পৃষ্ঠপোষকের কাছ থেকে ব্যক্তিগত ফ্লাইট, প্রচারাভিযানে অবদান এবং অন্যান্য ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছিল।

২০০৬ সাল থেকে মার্কিন সিনেটে থাকা মেনেনডেজ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম সিনেটর হিসেবে দেখা হচ্ছে, যাকে দুটি ফৌজদারি অপরাধমূলক অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মেনেনডেজ প্রথম প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন যে, তিনি গত অক্টোবরে একটি নতুন ফেডারেল তদন্তের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

ঘুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রসিকিউটররা মেনেনডেজের নিউ জার্সির বাড়ি, একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ, নগদ প্রায় ৫ লাখ ৬৬ হাজার মার্কিন ডলার, স্বর্ণের বার এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করছেন৷

ব্যবসায়ী ওয়ায়েল হানা, হোসে উরিবে এবং ফ্রেড ডাইবসকেও ঘুষ প্রদানের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রসিকিউটররা বলেন, হানা, যিনি মূলত মিশর থেকে ২০১৮ সালে মেনেনডেজ এবং মিশরীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে নৈশভোজ এবং বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন। ওই বৈঠকে মিশরের কর্মকর্তারা মার্কিন সামরিক সহায়তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে সিনেটরকে চাপ দিয়েছিলেন।

মিশর ওই সময় মার্কিন সামরিক সাহায্যের বৃহত্তম প্রাপকদের মধ্যে একটি ছিল। কিন্তু, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ২০১৭ সালে দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্রের উন্নতি না করা পর্যন্ত ওই সাহায্য বাতিল করে।

প্রসিকিউটররা বলেন, ২০১৮ সালে একটি সভায় মেনেনডেজ হানাকে সাহায্যের অবস্থা সম্পর্কে অপ্রকাশ্য তথ্য জানান। তারপরে হানা একজন মিশরীয় কর্মকর্তাকে টেক্সট করেছিলেন যে, মিশরে ছোট অস্ত্র ও গোলাবারুদের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।

নৈতিকতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিটিজেনস ফর রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড এথিক্সের প্রেসিডেন্ট শুক্রবার এক বিবৃতিতে, মেনেনডেজের প্রতি পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।