The first day of Trump's fraud trial is an important step
ট্রাম্পের জালিয়াতি বিচারের প্রথম দিনেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
যুক্তরাষ্ট্রে প্রসিকিউটর এবং ডিফেন্ডাররা ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার ব্যবসার কার্যকলাপের উপর একটি সিভিল জালিয়াতির বিচারে তাদের প্রাথমিক বিবৃতি আদালতে পেশ করেন। গতকাল সোমবার (২ অক্টোবর) ম্যানহাটনের আদালতে ট্রাম্পের দীর্ঘকালীন হিসাবরক্ষক ডোনাল্ড বেন্ডারের সাক্ষ্য গ্রহণ দিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়।
সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন নিউইয়র্কের রাষ্ট্রীয় আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস। তিনি ট্রাম্পের শাস্তি হিসেবে কমপক্ষে ২৫০ মিলিয়ন ডলার জরিমানার দাবি করেন। ট্রাম্প এবং তার ছেলে ডোনাল্ড জুনিয়র এবং এরিকের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে ব্যবসা চালানো থেকে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার দাবি করেন। ট্রাম্প এবং ট্রাম্প সংস্থার বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের বাণিজ্যিক রিয়েল এস্টেট নিষেধাজ্ঞা চাইছেন তিনি।
গতকালের শুনানিতে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের আইনজীবী কেভিন ওয়ালেস বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে ট্রাম্প ১০০ কোটি ডলারের বেশি সম্পদ উপার্জন করেন। এদিন আদালতে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে শুনানি চলে। শুনানির বিরতিতে বাইরে এসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। এমনকি দুর্নীতির মামলাকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
এর আগে নিউইয়র্কের স্থানীয় আদালতের বিচারপতি আর্থার এনগোরোন বলেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো জালিয়াতি করে তাদের সম্পদের মূল্য বাড়িয়েছেন। জালিয়াতির অভিযোগ এনে নিউইয়র্কের ম্যানহাটান শহরের একটি আদালতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর পারিবারিক ব্যবসার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিটিয়া জেমস। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মামলাটি দায়ের করা হয়। গতকাল এই বিবৃতির মাধ্যমে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়েছে। মামলায় হারলে নিউইয়র্কে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ মামলায় বিচার শুরুর আগে বিচারপতি আর্থার এনগোরোন কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। তিনি বর্ণনা দেন কীভাবে ট্রাম্প, তাঁর ছেলে ডোনাল্ড জুনিয়র ও এরিক, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন এবং অন্যান্য আসামিরা ব্যবসায়িক সুবিধা পেতে সম্পদের মূল্য বাড়িয়েছেন।
অন্যদিকে জেমসের দাবি, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জালিয়াতি করে তার সম্পদের মূল্য বাড়িয়েছেন। ট্রাম্পের সম্পদের মূল্য বাড়ানোর বিষয়ে আগে যা ধারণা করা হয়েছে, সম্পদের মূল্য তার চেয়ে অনেক বেশি বাড়িয়ে দেখিয়েছেন ট্রাম্প।তাকে তার রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য সম্পর্কে মিথ্যা বলে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি উপার্জন করার অভিযোগ এনেছিলেন। তাদের মূল্যায়নে দেখা গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তার মোট সম্পদ বাড়িয়েছেন। ট্রাম্প ৮১ কোটি ২০ লাখ ডলার থেকে ২২০ কোটি ডলার পর্যন্ত সম্পদ অতিরিক্ত দেখিয়েছেন বলে জানান তিনি।
এর পরপরই ট্রাম্প জেমসের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। তাকে দুর্নীতিবাজ সম্বোধন করে তার বিরুদ্ধে আনা লজ্জাজনক বিচার মামলার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প নিউইয়র্কের বিচারক আর্থার এনগোরনেরও সমালোচনা করেন। উল্লেখ্য সিবিল জালিয়াতির এই বিচারের তত্ত্বাবধান করছেন এনগোরন।
ট্রাম্পের দীর্ঘকালীন হিসাবরক্ষক এবং ট্যাক্স পরামর্শক ডোনাল্ড বেন্ডার ট্রাম্পের ট্যাক্স অনুশীলন সম্পর্কে সাক্ষ্য দেন। প্রায় এক দশক ধরে প্রতি বছর তার ট্যাক্স রিটার্ন পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন তিনি। ট্রাম্পের আইনজীবীরা বেন্ডারের সাক্ষ্যের জন্য আপত্তি জারি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিচারক এনগোরন তা প্রত্যাখ্যান করেন।
জেমসের দায়েরকৃত এই মামলাটি ট্রাম্পের ব্যবসায়িক অনুশীলনের উপর ফোকাস করবে। ট্রাম্প এবং তার ব্যবসা, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন, নিজেদের সমৃদ্ধ করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের মূল্য স্ফীত করেছে কিনা তার সত্যতা তদন্ত করবে।
এদিকে ট্রাম্প তাকে এবং তার কোম্পানির পদক্ষেপগুলোকে রক্ষা করতে মামলায় সাক্ষ্য দিতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন। তবে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পকে জরিমানা দিতে এবং ব্যবসার লাইসেন্স হারাতে বাধ্য করা হতে পারে।
উল্লেখ্য ট্রাম্পের সম্পদ ও সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ নিয়েও ক্রমাগত প্রশ্ন বিচারে আবারও উঠে আসে। বিচারক এনগোরন পূর্বে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে ট্রাম্প তার অসংখ্য সম্পত্তির মূল্যকে ব্যাপকভাবে বাড়াবাড়ি করেছেন। আগস্টে জেমসের আদালতে দায়ের করা তথ্যে বলা হয়েছে যে ট্রাম্প মিথ্যাভাবে বলেছিলেন যে তার মোট মূল্য ৬ দশমিক ১ বিলিয়ন ছিল। মূলত এর পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন।