গাজা দখল হবে ইসরায়েলের ‘বড় ভুল’: বাইডেন
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা দখল হবে ইসরায়েলের একটি ‘বড় ভুল’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান ঠিক আছে বলে মনে করেন তিনি।
স্থানীয় সময় রোববার (১৫ অক্টোবর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন একথা বলেন। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামাস নিমূর্লে গাজায় স্থল অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সময় বাইডেন এ মন্তব্য করলেন।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, গাজায় যা ঘটেছে, আমার দৃষ্টিতে, তা হল হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযান। আর হামাস ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। তবে আমি মনে করি ইসরায়েলের জন্য গাজা দখল করা হবে একটি বড় ভুল সিদ্ধান্ত।
বাইডেন বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধের নিয়ম মেনে চলবে। এবং গাজার জনগণের জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধের সরবরাহ ঠিক থাকবে।
তিনি বলেন, হামাসকে অবশ্যই সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে হবে। তবে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পথ হওয়া দরকার। পথটি হলো দুই-রাষ্ট্র সমাধান। যা কয়েক দশক ধরে মার্কিন নীতি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালিয়ে বিশ্বকে চমকে দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর পর পরই হামাস নিমূর্লে গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালানোর বিষয়ে হামাস বলছে, অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে হামলা এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ক্রমবর্ধমান সহিংসতার প্রতিশোধ হিসেবে এই অভিযান চালিয়েছে তারা।
গত একসপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা উপত্যকায় হামাসের লক্ষ্যবস্তুগুলোর বিরুদ্ধে অপারেশন সোর্ডস অব আয়রন শুরু করেছে। হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্ত ঘিরে প্রস্তুত ইসরায়েলের শত শত ট্যাংক। মোতায়েন করা হয়েছে ভারী সামরিক সরঞ্জাম। এর মধ্য দিয়ে পুরোদস্তুর স্থল হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। চলছে সমুদ্রপথে হামলার প্রস্তুতিও। এরই মধ্যে অব্যাহত আছে আকাশপথে যুদ্ধবিমান থেকে বোমাবর্ষণ। সঙ্গে রক্তাক্ত–বিধ্বস্ত ছোট উপত্যকাটিতে একের পর এক প্রবেশ করছে ইসরায়েলের নজরদারি ড্রোন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৬৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে। যা ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের চেয়েও বেশি।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। শিশুসহ অন্তত ১৫৫ জনকে হামাস বন্দী করে গাজায় নিয়ে গেছে বলে দাবি ইসরায়েলের। মিশর ও সিরিয়ার সঙ্গে ১৯৭৩ সালের সংঘর্ষের পর এটি ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু।