যুদ্ধবন্দি বহনকারী বিমানটি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন : পুতিন
যুদ্ধবন্দি বহনকারী রাশিয়ার সামরিক বিমান যেটি ইউক্রেনের সীমান্তের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে, সেটি ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা ইচ্ছাকৃত বা ভুলবশত গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দাবি করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
উল্লেখ্য, গত বুধবারের ওই বিমান দুর্ঘটনায় ইউক্রেনের যুদ্ধবন্দি বেসামরিক এবং সেনাসহ ৭৪ জন নিহত হয়।
ঘটনার পরই রাশিয়ার বেলগোরোড অঞ্চলে ইলিউশিন ইল-৭৬ বিমানটি ভূপাতিত করার জন্য কিয়েভকে অভিযুক্ত করে মস্কো ।
তবে রয়টার্স জানিয়েছে, ওই অভিযোগের স্বপক্ষে এখনও কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করেনি মস্কো।
ওই দুর্ঘটনার পর প্রথম টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে শুক্রবার পুতিন বলেন, ‘আমি জানি না তারা এটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে করেছে, নাকি ভুল করে করেছে। তবে এটা স্পষ্ট যে, তারা এটা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাই হোক না কেন, যা ঘটেছে তা অপরাধ। অবহেলা বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যেকোনও ক্ষেত্রেই তা অপরাধ।’
এদিকে রাশিয়ার এই দাবির বিরোধিতা করে ইউক্রেন জানিয়েছে, তাদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল যে, ইউক্রেনের যুদ্ধবন্দি বহনকারী একটি বিমান সেই সময় রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম বেলগোরোড অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়বে। সুতরাং, ভুল করার প্রশ্নই আসে না।
কিয়েভ আরও জানিয়েছে, রাশিয়ার মিডিয়ায় প্রকাশিত ৬৫ ইউক্রেনীয়দের তালিকায়ও অসঙ্গতি রয়েছে।
রাশিয়ার শীর্ষ তদন্তকারী সংস্থা অনলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে যেটিতে দেখানো হয়েছে যে, যুদ্ধবন্দি ইউক্রেনের সেনারা বিমানে চড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ভিডিওটিতে কোনও শব্দ নেই এবং এটি কোনও অবস্থানও প্রকাশ করেনি। যে কারণে ইউক্রেনের নেটিজেনরা ভিডিওটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে পুতিন বলেছেন, ‘যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়েছে সেগুলো সম্ভবত সম্ভবত আমেরিকান বা ফরাসি। এসব তথ্য দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে।’
জবাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির একজন উপদেষ্টা বলেছেন, ‘পুতিনের মন্তব্য একটি ক্লাসিক বিভ্রান্তিকর প্রচারণার সমান।’
মাইখাইল পোডোলিয়াক বলেন, ‘রাশিয়ার লক্ষ্য ছিল কিয়েভের অংশীদারদের কাছ থেকে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষিত করার অধিকার কেড়ে নেওয়া।’
দুর্ঘটনার পর রাশিয়ার তদন্ত কমিটি জানিয়েছিল যে, ইউক্রেনীয়দের পরিচয় নথি এবং উল্কি করা শরীরের অংশ বিধ্বস্তের স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। জিনগত পরীক্ষার জন্য দহাংশগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ওই তদন্ত কমিটি জানিয়েছিল যে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে ইউক্রেন থেকে নিক্ষিপ্ত একটি ভূপৃষ্ঠ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা বিমানটিকে আঘাত করা হয়েছে।
ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিদের চিকিৎসার কাজ করে এমন একটি অফিসিয়াল গ্রুপকে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রধান কিরিলো বুদানভ বলেছেন, ‘বিমানটিতে কারা থাকতে পারে সে সম্পর্কে কিয়েভের কাছে কোনও বিশ্বাসযোগ্য এবং বিস্তারিত তথ্য ছিল না।’