ভারতের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী আসন পেতে বাধা চীন

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে তিনটি দেশই (যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স) চলতি অধিবেশনে ভারতের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে সমর্থন করেছে। রাশিয়ার ঘোষিত অবস্থান ভারতকে নিরাপত্তা পরিষদে নেওয়ার পক্ষে। ফলে রইল বাকি পঞ্চম রাষ্ট্র সেই চীনের বাধা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কোনও নতুন রাষ্ট্রকে নিরাপত্তা পরিষদের অন্তর্ভুক্ত করতে বাধা দেওয়ার প্রশ্নে যে কোনও একটি রাষ্ট্রের ভেটোই যথেষ্ট।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত. ১৯৬২ সালের সীমান্ত যুদ্ধকে কেন্দ্র করে চীন-ভারত দুই দেশের ধারাবাহিক বিরোধ। বস্তুত দ্বিপক্ষীয় বিরোধের সূত্র ধরে সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চীন ও ভারতের মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্য লক্ষ করা যায়। দুই দেশ নিজ নিজ বৈশ্বিক স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা অক্ষুণ্ন রাখতে পরস্পরবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। ফলে মাঝেমধ্যেই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে স্পর্শকাতর ইস্যুগুলো উত্তপ্ত হয়ে পড়ে।

এই কারণে মনে করা হচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে চীন।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য দেওয়ার সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, নিরাপত্তা পরিষদকে আরও প্রতিনিধিত্বশীল করতে হবে। আমরা চাই কাউন্সিলে আফ্রিকা থেকে স্থায়ী সদস্য অন্তর্ভুক্ত হোক।পাশাপাশি ব্রাজিল, ভারত, জাপান ও জার্মানিকেও স্থায়ী সদস্য করা উচিত। সঙ্গে নির্বাচিত সদস্যদের জন্য আসনও বাড়ানো প্রয়োজন।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফ্রান্সের ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও ভারতের পক্ষে একই ধরনের যুক্তি তুলে ধরেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, আমাদের নিরাপত্তা পরিষদ অবরুদ্ধ... আসুন আমরা জাতিসংঘকে আরও কার্যকর করে তুলি, আরও প্রতিনিধিত্বশীল করি। সেই কারণেই ফ্রান্স নিরাপত্তা পরিষদ সম্প্রসারণের পক্ষে। জার্মানি, জাপান, ভারত ও ব্রাজ়িলের স্থায়ী সদস্য হওয়া উচিত, সেই সঙ্গে আফ্রিকা থেকে দু’টি দেশের প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত। কারা আসবে সে সিদ্ধান্ত তারাই নেবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বিষয়টি নিয়ে ভারতের হয়ে কথা বলেছিলেন।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ভারতকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য করার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানান।

ভারত দীর্ঘদিন ধরেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। ভারতের যুক্তি, ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট পরিষদ ২১ শতকের উদ্দেশ্যের জন্য উপযুক্ত নয় এবং সমসাময়িক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না।

বর্তমানে মাত্র পাঁচটি দেশ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং তাদের ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। এগুলো হলো—যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য। পাঁচ স্থায়ী সদস্য ছাড়াও এতে ১০টি অস্থায়ী সদস্য রয়েছে, যারা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভোটে দুই বছরের মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়। ভারত সর্বশেষ ২০২১-২২ সালে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হয়েছিল।