প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পকেই দেখতে চান নিকি হ্যালি
দীর্ঘ সময় ধরে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সাউথ ক্যারোলাইনার সাবেক গভর্নর নিকি হ্যালি। অবশেষে, এই দুজনের লড়াই শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
নিকি হ্যালি বলেছেন, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকেই ভোট দেবেন তিনি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের সঙ্গেই দলীয় প্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছিলেন হ্যালি। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সরে যেতে হয়েছে।
রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন ট্রাম্পের আমলে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত নিকি হ্যালি। এ জন্য সাবেক নিয়োগদাতা ট্রাম্পের সঙ্গে লড়াইয়ে নামতে হয়েছিল তাকে।
দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে (প্রাইমারি) ট্রাম্পের সামনে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে টিকেও ছিলেন। অবশেষে গত মার্চে সরে দাঁড়ান তিনি।
এরপর বুধবার প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে নিকি হ্যালি বলেন, ‘ট্রাম্প নিখুঁত প্রার্থী নন। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন বিপর্যয়কর।’
নিজ দলের মধ্যে যারা ট্রাম্পকে সমর্থন করেন না, তারা নিকি হ্যালিকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য সমর্থন জুগিয়েছিলেন। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে রিপাবলিকান প্রাইমারিগুলোয় ভালো ফল করতে ব্যর্থ হন তিনি।
ওয়াশিংটনে চিন্তক প্রতিষ্ঠান হাডসন ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে রক্ষণশীলদের সামনে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প-বাইডেন দুজনেরই সমালোচনা করেন নিকি হ্যালি।
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে একটি পরাজয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন বাইডেন। ইউক্রেনে যুদ্ধ ঠেকাতে তিনি কিছুই করেননি। এমনকি সম্প্রতি ইসরায়েলকে নেকড়ের মুখে ছুড়ে দিয়েছেন।’
নিকি হ্যালি বলেন, ‘একজন ভোটার হিসেবে আমি তাকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে চাই, যিনি আমাদের মিত্রদের সঙ্গে থাকবেন, সীমান্তকে সুরক্ষিত করবেন, পুঁজিবাদ ও স্বাধীনতাকে সমর্থন করবেন। যিনি বুঝতে পারবেন, আমাদের বেশি বেশি নয় বরং কম ঋণ দরকার, এমন একজনকেই প্রেসিডেন্ট দেখতে চাই।’
মাশহাদে সমাহিত করা হবে ইব্রাহিম রাইসিকে
ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) পবিত্র শহর মাশহাদে সমাহিত করা হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান এবং অন্য ছয়জনের সঙ্গে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন রাইসি।
দাফন উপলক্ষ্যে রাইসির কফিনটি বৃহস্পতিবার সকালে উত্তর-পূর্ব ইরানের মাশহাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে, ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বিরজান্দে রাইসির শোক মিছিলে হাজার হাজার লোক অংশ নিয়েছে।
রাইসির কফিন বহনকারী বিমানটি তার নিজ শহর মাশহাদে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। সেখানে রাইসিকে সোনার গম্বুজ বিশিষ্ট ইমাম রেজা মাজারে সমাহিত করা হবে, যা ইরানের পবিত্রতম ইসলামিক স্থান। এটি নবম শতাব্দীর ইমাম আলী আল-রেজার বিশ্রামস্থল।
৬৩ বছর বয়সি রাইসিকে ব্যাপকভাবে ৮৫ বছর বয়সি সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনেইয়ের স্থলাভিষিক্ত প্রার্থী হিসেবে দেখা হয়েছিল, যিনি ইরানে চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী।
অন্যদিকে, তেহরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমিরাবদুল্লাহিয়ানকে স্মরণে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যেখানে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাঘেরি কানি তাকে একজন শহীদ হিসাবে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘আমিরাবদুল্লাহিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিপ্লবী প্রকৃতির নিশ্চয়তা দিয়েছেন।’
আমিরাবদুল্লাহিয়ানকে তেহরানের দক্ষিণে শাহ আবদোলাজিম মাজারে সমাহিত করা হবে, যেখানে ইরানের উল্লেখযোগ্য রাজনীতিবিদ এবং শিল্পীদের সমাধিস্থ করা হয়ে থাকে।
ফিলিস্তিনের একতরফা স্বীকৃতির বিরুদ্ধে বাইডেন
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের একতরফা স্বীকৃতির বিরোধিতা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার (২২ মে) এ তথ্য রয়টার্সকে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের নারী মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেছেন, ‘বাইডেন তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারজুড়ে দ্বি-তত্ত্ব রাষ্ট্রের শক্তিশালী সমর্থক।
তবে বাইডেন মনে করেন, দলগুলোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব, একতরফা স্বীকৃতির মাধ্যমে নয়।’
তবে, অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন তার মন্তব্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে তিনটি ইউরোপীয় দেশের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা সরাসরি উল্লেখ করেননি।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে বাইডেন এই বিরোধীতা করেছেন।
উল্লেখ্য, ইউরোপের এই তিনটি দেশই যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচিত।
এদিকে বাইডেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নিয়ে এগিয়ে যেতে ইসরায়েলকে চাপ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
যদিও ওয়াশিংটন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সাম্প্রতিক একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে বলেছে, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমেই কেবল স্বীকৃতির বিষয়টি আসতে পারে।’
নারী সেনাদের আটক করার ভিডিও প্রকাশ করল ইসরায়েল
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার সময় একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে ইসরায়েলের পাঁচজন নারী সেনাকে আটক করার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, জিম্মি হিসেবে আটক এসব সেনার পরিবার অনুমতি দেওয়ার পরে বুধবার (২২ মে) ইসরায়েলের একটি প্রচারণা দল এ ভিডিও প্রকাশ করে।
তিন মিনিটের ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা গেছে, জিম্মি নারী সেনারা মাটিতে বসে আছেন। তাদের কারো কারো মুখে রক্ত এবং হাত পেছনে শক্ত করে বাঁধা। দক্ষিণ ইসরায়েলের নাহাল ওজ ঘাঁটি থেকে তাদের বন্দী করা হয়।
জিম্মি ও নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত ফ্যামিলি ফোরামের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ফুটেজ হামাসের ক্যামেরায় ধারণ করা দুই ঘন্টার ভিডিও থেকে নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ভিডিওতে তাদের অপহরণের সময়কার হিংসাত্মক, অপমানজনক ও আতংকজনক আচরণের বিষয়গুলো ফুটে উঠেছে।
ফুটেজের শেষ দিকে দেখা গেছে এসব নারী সেনাকে হামাস একটি সামরিক জিপে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ইসরায়েল দাবি করেছে, ওই সামরিক ঘাঁটিতে হামাসের হামলায় ৫০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৫ জন নারী সেনা রয়েছেন।
ওই সামরিক ঘাঁটিতে হামলার সময় হামাস সাত নারী সেনাকে জিম্মি হিসেবে আটক করে। এদের মধ্যে একজনকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সময় ছেড়ে দেওয়া হয় এবং অপর একজনের লাশ উদ্ধার করে ইসরায়েলকে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে হামাস বলেছে, ওই ভিডিও ফুটেজে কারসাজি করা হয়েছে, যাতে মিথ্যে অভিযোগ এবং প্রতিরোধের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করা যায়।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনী সংগঠন হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক বড়ো ধরনের হামলা চালায়। এ সময়ে তারা প্রায় এক হাজার ১৭০ ইসরায়েলিকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে।
এখনও হামাসের কাছে ১২৪ জন জিম্মি হিসেবে আটক রয়েছে বলে ধারণা করছে ইসরায়েল।
হামাসের হামলার পরে গাজায় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনও চলছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত এ হামলায় ৩৫ হাজার ৭০৯ ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।