তদন্তে ভয় পাই না: জাতিসংঘে মিয়ানমার



খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম,ঢাকা:
রোহিঙ্গাদের বাড়ি ঘর জ্বলছে, ছবি: সংগৃহীত

রোহিঙ্গাদের বাড়ি ঘর জ্বলছে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতিসংঘে মিয়ানমারের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি হ্যামওয়ে হ্যামওয়ে খেনি বলেছেন, মিয়ানমারের সম্মতি ও সহযোগিতা ছাড়া দেশটির সেনাবাহিনীর কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে কোনও ফলপ্রসূ ফল পাবে না।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের তদন্তকে ভয় পাই না। তবে মানবাধিকারের অজুহাতে বহু ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে মিয়ানমারের উপর অযৌক্তিক রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করার একাধিক অন্যায্য ও নির্লজ্জ প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করা ছাড়া আমাদের ভিন্ন কোনো উপায়ও নেই।

হ্যামওয়ে হ্যামওয়ে খেনি বুধবার (৯ অক্টোবর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের এক অধিবেশনে এসব মন্তব্য করেন।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘এই তদন্ত আরও কত বছর লাগবে তা আমরা জানি না।’

এদিকে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তের পরিবর্তে বাংলাদেশে থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করার জন্য জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

মিয়ানমারের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, অযথাই জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন (এফএফএম) সহ মিয়ানমারের তদন্তকারী সাতটি সংস্থার জন্য ৩৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। ২০২০ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫ মিলিয়ন ডলার খরচ ধরা হয়েছে, যা সংস্থাটির আইনি বিষয়ে মোট ব্যয়ের প্রায় ২৬ শতাংশ।

গত মাসে এফএফএম তাদের নথিগুলো মিয়ানমারের জন্য স্বতন্ত্র তদন্তকারী মেকানিজমকে (আইআইএম) হস্তান্তর করেছিল। যা দিয়ে সেনাবাহিনী দ্বারা রাখাইন মুসলমানদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত কাজে ব্যবহৃত হবে।

জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যত দিন আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে তত দিন দেশটিতে শান্তি ফিরবে না।

এই মিশনের নেতৃত্বে ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মারজুকি দারুসমান। সদস্য হিসেবে ছিলেন শ্রীলঙ্কার আইনজীবী নারী অধিকার বিশেষজ্ঞ রাধিকা কুমারস্বামী এবং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক মানবাধিকার কমিশনার ও দেশটির আইন সংস্কার কমিশনের সাবেক সদস্য ক্রিস্টোফার ডমিনিক সিডোটি।

জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী গণহত্যা চালাতে চেয়েছিল কেননা মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানরা ছিল ‘সুরক্ষিত জনগোষ্ঠী’। কিন্তু তাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনী হত্যা, শারীরিক অথবা মানসিক নিপীড়নসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত সব ধরনের অপরাধ সংঘটিত করেছে।

স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন প্রধান মারজুকি দারুসমান, সদস্য রাধিকা কুমারস্বামী, সদস্য ক্রিস্টোফার ডমিনিক সিডোটি, ছবি: সংগৃহীত

 

জাতিসংঘ মিশন অবিলম্বে তাই এ বিষয়ে অভিযুক্ত নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত ও বিচারের জন্য একটি উপযুক্ত প্রসিকিউটর কমিটি এবং আইনি আদালত গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বেশ কিছু সুপারিও তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং সিনিয়র পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি সুপারিশ করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় হামলার অভিযোগে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। এরপরই শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল। তাদের কথায় পাওয়া যায় নির্বিচার হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা মিয়ানমারের বাহিনীর ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করে আসছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার বলে আসছে, তাদের ওই লড়াই ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে, কোনো জাতিগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে নয়।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকারের ওই দাবি নাকচ করে দিয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রাথমিক রিপোর্টে তখন বলা হয়, রাখাইনে যে মাত্রার নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে, তার তুলনায় গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার মধ্যকার পার্থক্যটা খুবই স্পষ্ট।

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বলেছে, রাখাইনে যে ধরনের অপরাধ হয়েছে, আর যেভাবে তা ঘটানো হয়েছে, মাত্রা, ধরন এবং বিস্তৃতির দিক দিয়ে তা ‘গণহত্যার অভিপ্রায়কে’ অন্য কিছু হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টার সমতুল্য।

গত বছর গঠিত জাতিসংঘের এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্যরা বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা ৮৭৫ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নিয়ে, নথিপত্র, ভিডিও, ছবি এবং স্যাটেলাইট ইমেজ পর্যালোচনা করে তাদের রিপোর্ট তৈরি করেছেন।

রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের যে ধরন, তা শান ও কাচিন অঞ্চলে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর ওপর দমন পীড়নের ধরনের সাথে পুরোপুরি মিলে যায় বলেও তদন্তকারীরা দেখতে পান।

নির্যাতিত রোহিঙ্গা আর প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণের ভিত্তিতে তুলাতলি গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানের লোমহর্ষক বিবরণও ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে।

সেখানে দেখানো হয়েছে, পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করা রোহিঙ্গাদের কিভাবে ধাওয়া করে ধরা হচ্ছে, সৈন্যরা প্রথমে তাদের গুলি করছে, তাতেও মৃত্যু না হলে প্রত্যেকের গলা কেটে ফেলা হচ্ছে। তারপর তারা নজর দিচ্ছে নারী ও শিশুদের দিকে।

ওই গ্রামে শিশুদেরও কিভাবে গুলি করে মারা হয়েছে, মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে নদীতে বা আগুনে ছুড়ে ফেলা হয়েছে সেসব ভয়ঙ্কর বিবরণও এসেছে প্রতিবেদনে।

এই গণহত্যা শেষে মেয়েদের ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে গ্রামে। পালা করে ধর্ষণ করার পর কাউকে কাউকে হত্যা করা হয়েছে। বুড়ো, শিশু আর নির্যাতিত নারীদের ঘরের ভেতরে আটকে আগুন দেয়া হয়েছে বাড়িতে। রাখাইনের তুলাতলি গ্রামের এই বর্বরতাকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জঘন্যতম অপরাধের নজির হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এতে।

তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তানসহ অধিকাংশ দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) । তারা রাখাইনে নৃশংসতায় জড়িতদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানায়। কিন্তু রাশিয়া সরাসরি মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রতিবেদনের তথ্যের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আর চীন রাখাইন পরিস্থিতিকে জটিল হিসেবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশের সাথে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে উৎসাহিত করে।

   

স্বাতীর অভিযোগ, কেজরিওয়ালের বাসভবনে পুলিশ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন আম আদমি পার্টির (আপ) রাজ্যসভার সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল।

এনডিটিভি জানিয়েছে, তার দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত করতে কেজরিওয়ালের বাসভবনে পৌঁছেছে দিল্লি পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল। তদন্তের স্বার্থেই কেজরিওয়ালের বাসভবনে অভিযান চালিয়েছে দিল্লি পুলিশ।

স্বাতীর দাবি, গত সোমবার কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে গিয়েছিলেন তিনি। একটি ট্যাক্সি করে কেজরিওয়ালের বাসভবনে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ই তাকে শারীরিক হেনস্থা করেন বৈভব।

ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শোরগোল পড়ে যায় দিল্লিজুড়ে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দিল্লি পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন স্বাতী। সেদিন রাতেই তার মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়েছিল দিল্লির এইমসে।

পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে স্বাতী জানান, কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব তাকে চড় মেরেছেন। এমনকি, তার পেটে লাথিও মেরেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাতীর বাসায় গিয়ে তার বয়ান রেকর্ড করে পুলিশ।

শুক্রবার (১৭ মে) ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারায় নিজের অভিযোগে তুলে ধরেন স্বাতী।

এরপর শুক্রবার দুপুরেই কেজরিওয়ালের বাসভবনে হাজির হয় দিল্লি পুলিশের একটি দল।

সূত্রের খবর, বসার ঘরে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে তারা। এই ঘরেই তার সঙ্গে অভব্য আচরণ এবং মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বাতী।

পাশাপাশি, কেজরিওয়ালের বাসভবনের কর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। তাদের বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

স্বাতীর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই অস্বস্তিতে পড়েছে আপ। তার অভিযোগকে হাতিয়ার করে মাঠে নেমেছে বিজেপি।

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেই স্বাতীকে নিগ্রহের ঘটনার পর দুই দিন কেটে যাওয়া সত্ত্বেও, কেজরিওয়াল কেন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

ঘটনার দিন আপ নেতৃত্ব মুখ বন্ধ রাখলেও ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে ওই নিগ্রহের কথা স্বীকার করে বিবৃতি দেন দলের নেতা সঞ্জয় সিং। গত মঙ্গলবার স্বাতীর বাড়িতে যান তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন দিল্লি মহিলা কমিশনের সদস্য বন্দনা সিং।

এরপর সাংবাদিক সম্মেলন করে সঞ্জয় জানান, এই ঘটনায় পুরো দল স্বাতীর পাশে আছে। সেই বার্তা দিতেই স্বাতীর বাসভবনে গিয়েছিলেন সঞ্জয়।

পাশাপাশি তিনি জানান, বৈভব অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছেন স্বাতীর সঙ্গে। কেজরিওয়াল এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন।

;

ফের ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হামাস-ইসরায়েল চলমান উত্তেজনার মধ্যে আবারও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ছুড়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এ যাত্রায় গোষ্ঠীটি ৭৫টি রকেট ছুড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

শুক্রবার (১৭ মে) ইসরায়েলের গনমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। তবে কয়েক ডজন রকেট ইসরায়েল তাদের আয়রন ডোম দ্বারা প্রতিহত করেছে।

স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানায়, আপার গ্যালিলিতে রকেট হামলায় দুজন সামান্য আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহত দুজনের বয়সেই ৬০ বছরের কাছাকাছি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।

চলমান যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল লক্ষ্য করে হিজবুল্লাহ যেসব হামলা চালিয়েছে সেগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম বড় ছিল বলেও সংবাদমাধ্যমটি জানায়।

এমন হামলার পর গোলান হাইটস এবং লেবানন সীমান্তের কাছের বেশ কয়েকটি শহরে সাইরেন বেজে ওঠে।

;

জীবন্ত কবর দেয়ার ৪ দিন পর বৃদ্ধকে উদ্ধার



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ব ইউরোপের দেশ মলদোভায় ঘটলো এক আশ্চর্যজনক ঘটনা। দেশটিতে জীবন্ত অবস্থায় কবর দেওয়া এক বৃদ্ধকে চারদিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৭ মে) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মদপানের সময় এক কিশোরের সঙ্গে ৬২ বছরের এই বৃদ্ধের দ্বন্দ্ব হয়। এরপর সে ক্ষুব্ধ হয়ে লোকটিকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার পর মাটিচাপা দেয়। টানা চারদিন সেখানে আটকে থাকার পর তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের আগে প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। আর চিৎকার শুনেই পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করতে সমর্থ হন।

দেশটির পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, যে কবর থেকে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে ৭৪ বয়সী এক নারী হত্যার শিকার হয়েছেন। ওই হত্যার তদন্তে নেমেই পুলিশ তার সন্ধান পায়।

পুলিশ জানায়, যখন আমরা হত্যার রহস্য উদঘাটনে ওই বাড়িতে যাই, তখন পাশের একটি কবর থেকে সাহায্যের জন্য এক ব্যক্তির চিৎকার শুনতে পাই। পরে আমরা সেটি কোদাল দিয়ে খুঁড়ে একটি অস্থায়ী বেজমেন্টের সন্ধান পাই। তারপর সেখান থেকে আটকে থাকা বৃদ্ধকে টেনে বের করা হয়।

তারপর তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে পুলিশ। যেখানে উদ্ধারের পুরো ঘটনাটা দেখা যায়।

দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (১৩ মে)। উদ্ধারকৃত ব্যক্তি সচেতন অবস্থায় ছিল এবং তার ঘাড়ে ক্ষত ছিল।

পুলিশ পরে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মলদোভার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহর উস্তিয়ায় থেকে এক কিশোরকে (১৮) আটক করে।

পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে বিভ্রান্তিকর উত্তর দেয়। এতে পুলিশের সন্দেহ বেড়ে যাওয়ায় প্রমাণ খোঁজার জন্য তার বাড়িতে তল্লাশি চালায়।

পুলিশ ধারণা করছে রোববার বা সোমবার রাতে ৭৪ বয়সী বৃদ্ধ নারীকে ওই কিশোরই হত্যা করেছে।

ওই কিশোরকে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার জন্য রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। বলা হচ্ছে, এসব বিষয় প্রমাণিত হলে তাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সম্মুখীন হতে হবে।

;

মালয়েশিয়ার থানায় সন্দেহভাজন জেআই হামলায় দুই কর্মকর্তা নিহত



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ায় কট্টরপন্থী জেমাহ ইসলামিয়াহ (জেআই) গ্রুপের সদস্য বলে সন্দেহ করা এক ব্যক্তি দেশটির একটি থানায় হামলা চালিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য জোহরের উলু তিরাম শহরে শুক্রবার (১৭ মে) ভোরে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

মালয়েশিয়ার ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ রাজারুদ্দিন হোসেন নিউ স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকাকে বলেছেন, হামলার সময় ওই থানার কর্তব্যরত পুলিশ এক দম্পতির সঙ্গে দুই বছরের পুরনো একটি মামলা নিয়ে কথা বলছিলেন। এমন সময় সন্দেহভাজন ব্যক্তি ছুরি হাতে তাদের পেছনে এসে দাঁড়ায়।

সন্দেহভাজন ব্যক্তি এক অফিসারকে ছুরিকাঘাত করে তার সার্ভিস রিভলভারটি কেড়ে নেন। এরপর ওই রিভলভার দিয়ে আরেক অফিসারকে গুলি করেন।

রাজারুদিন বলেন, তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন যে, ছুরিকাঘাতে আহত পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে ওই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাজারুদিন মালয়েশিয়ার মিডিয়াকে বলেছেন, পুলিশ থানার থেকে অনেক দূরে সন্দেহভাজন ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জেআই-সম্পর্কিত অসংখ্য জিনিসপত্র খুঁজে পেয়েছে। তার পরিবারের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ আরও বলেছে, হামলাকারীর ৬২ বছর বয়সি বাবা একজন পরিচিত জেআই সদস্য।

মালয় মেইল নিউজ রাজারুদিনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, দেশটির সিঙ্গাপুরের সীমান্তবর্তী রাজ্যে বসবাসরত জেআই-এর অন্যান্য সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, জেমাহ ইসলামিয়াহ হলো আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট একটি গোষ্ঠী, যার লক্ষ্য ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে কট্টরপন্থী ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

২০০০ সালে জানা যায়, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া এবং ফিলিপাইনে জেআই-এর সদস্য রয়েছে।

২০০২ সালের অক্টোবরে বালিতে হামলাসহ একাধিক মারাত্মক বোমা হামলার পরিকল্পনা করেছে গোষ্ঠীটি।

মালয়েশিয়ায় গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতার নাম নুরদিন মুহাম্মাদ। নূরিন জোহরের বাসিন্দা এবং তিনি উলু তিরামে একটি ধর্মীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে জানা গেছে।

এই জেআইকে নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকায় রেখেছে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর।

;