২০১৯ সালে আফগানিস্তানে সাড়ে সাত হাজার বোমা নিক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের
২০১৯ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানে সাত হাজার ৪২৩ টি বোম নিক্ষেপ করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। যা গত দশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মার্কিন এয়ার ফোর্সের কেন্দ্রীয় কমান্ডের (এএফসিএএনটি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ পায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরগুলোর তুলনায় মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তানে অধিক সংখ্যক বোমা নিক্ষেপ করেছে। ২০১৯ সালে মার্কিন এয়ার ফোর্স বোমা নিক্ষেপ করেছে ৭ হাজার ৪২৩টি। যেখানে ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৩৬২টি।
প্রতিবেদনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কথাও উল্লেখ করা হয়। সেখানে বলা হয়, ২০০৯ সালে ওবামা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় চার হাজার ১৪৭টি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। আর ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে এর পরিমাণ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে বোমা নিক্ষেপের বিষয়ে বারবার জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এছাড়া বোমা বিস্ফোরণের ফলে হতাহতের ঘটনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।
গত বছর জাতিসংঘ তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০১৯ সালে প্রথম দিকে প্লেন হামলায় ৭১৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। যা অন্য বছরের তুলনায় ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ হেরাতে মার্কিন ড্রোন হামলায় ৬০ এর অধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত ও আহত হয়। আর চলতি সপ্তাহের রোববার আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় বালখ প্রদেশে সরকারি প্লেন হামলায় তিন শিশু সহ কমপক্ষে সাতজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। যার ফলে বিক্ষোভ করছে স্থানীয় জনগণ।
আফগানিস্তানে ন্যাটোর মিশন রেজলিউট সাপোর্টের এক মুখপাত্র একটি বিবৃতিতে জানান, আফগান বাহিনীর সমর্থনে একটি প্রতিরক্ষামূলক প্লেন হামলার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। আর এই অভিযানে মার্কিনীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই মুখপাত্র।
দীর্ঘদিন ধরে চলে তালেবানদের সঙ্গে যুদ্ধ করে আসছে আফগানিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। সংগঠনটির সঙ্গে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি করার কথা রয়েছে দেশ দুটির। দুপক্ষ আলোচনায় বসলেও হামলার ফলে চুক্তি করা সম্ভব যাচ্ছে না।
কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরাকে তাদের এক সূত্র জানিয়েছে, তালেবানরা মার্কিন বাহিনী এবং আফগান বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ কমিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে। তবে কোনো চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পূর্বেই যুক্তরাষ্ট্র গ্রুপটির কাছ থেকে যুদ্ধবিরতির দাবি করেছে।