মুমিনের বাসাবাড়ি যেমন হবে



মাওলানা আবদুল আলিম, অতিথি লেখক, ইসলাম
একজন মুমিনের ঘরে অবশ্যই শরিয়ত পালনের পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে

একজন মুমিনের ঘরে অবশ্যই শরিয়ত পালনের পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে

  • Font increase
  • Font Decrease

একজন মুমিনের বাসাবাড়িতে ইবাদত, জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত থেকে শুরু করে ইবাদত-বন্দেগি পালনের আদর্শ-পরিবেশ থাকবে। কেননা, জিকির থেকে বিমুখ বাসাবাড়িকে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে আল্লাহর জিকির করে আর যে জিকির করে না, উভয়ের উদাহরণ মৃত ও জীবন্ত মানুষের মতো।’ -সহিহ বোখারি : ৬৪০৭

অর্থাৎ যারা আল্লাহর জিকির করে তারা জীবিত আর যারা আল্লাহর জিকির করে না তারা মৃতের মতো। কেননা যারা জীবিত তাদের সব কার্যকলাপ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্যই হয়, পক্ষান্তরে যারা মৃত তারা কোনো কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং জীবিত থেকেও আল্লাহর জিকির করেন না তারা মৃতের মতো।

পর্দা ও লজ্জাশীলতার পরিবেশ
একজন মুমিনের ঘরে অবশ্যই শরিয়ত পালনের পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে। বিশেষভাবে নামাজ ও হিজাবের উপযোগী পরিবেশ থাকতে হবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার স্মরণার্থে নামাজ কায়েম করো।’ -সুরা ত্বহা : ১৪

অনুরূপভাবে একজন মুমিনের ঘরে পর্দা ও লজ্জাশীলতার পরিবেশ থাকবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ -সুরা আহজাব : ৫৯

হিজাব পালনের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- নারীরা যথাসম্ভব ঘরে থাকবে। বিশেষ প্রয়োজনে বের হতে হলে শরীর ও সৌন্দর্য জিলবাব দ্বারা এমনভাবে ঢেকে রাখবে যাতে কোনোভাবেই পরপুরুষের সামনে প্রকাশ না পায়।

বাড়িতে দ্বীনি তালিমের ব্যবস্থা
একজন মুমিনের বাড়িতে দ্বীনি তালিম তথা কোরআন–সুন্নাহ, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা–মানহাজ, আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সিরাতসহ অন্যান্য জরুরিয়াতে দ্বীনের শিক্ষাদানের পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে। যেহেতু মানুষের প্রাথমিক শিক্ষাগার ও প্রশিক্ষণ স্থান হলো ঘর। তাই পিতামাতা যাতে সন্তানদের এবং স্বামী যাতে স্ত্রীকে হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে শেখায় এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে, ইসলাম সেদিকে তাদের দৃষ্টি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।’ -সুরা তাহরিম : ৬

বর্ণিত আয়াতের অর্থ হজরত আলী (রা.) এভাবে করেছেন, ‘তোমরা নিজেরা শেখো এবং পরিবারবর্গকে শেখাও সমস্ত কল্যাণময় রীতিনীতি এবং তাদের আদব শিক্ষা দাও এবং এসব কাজে অভ্যস্ত করে তোল।’ -আল্লামা শাওকানি, ফাতহুল কাদির : ৫/২৪৬

মেহমানদের যত্ন করা
মানুষ থাকলে তার আত্মীয়-স্বজন থাকবে। বাড়িতে মেহমানও আসবে। তাই মেহমানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহে রাখা জরুরি। প্রকৃত মুমিনের বাড়িতে অবশ্যই মেহমানদারির ব্যবস্থা থাকবে। সেই সঙ্গে আরেকটা বিষয়ের প্রতি তাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, তার দ্বারা তার প্রতিবেশিরা যেন কষ্ট না পায়। কেননা, হজরত রাসুলুল্লাহ (সাল.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানের সম্মান করে। -সহিহ বোখারি : ৬০১৮

ঘর একটু বড় হওয়া
মুমিনের বসবাসের ঘর প্রশস্ত ও বড়োসড়ো হওয়া উচিত। তবে অবশ্যই তা সামর্থানুপাতে হবে। কারণ তাতে ইবাদতের জায়গা, হিজাবের সুব্যবস্থা ও মেহমানদারীর সুযোগ থাকতে হবে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সৌভাগ্যের বিষয় চারটি- সতীসাধ্বী স্ত্রী, প্রশস্ত বাড়ি, সৎকর্মশীল প্রতিবেশী ও আরামদায়ক বাহন।’ -সহিহ আত তারগিব : ২/৬৮৮

ঘর নির্মাণে প্রতিযোগিতা ও অহংকার না করা
একজন মুমিন বাসাবাড়ি নির্মাণে অবশ্যই প্রতিযোগিতা ও অহংকার পরিহার করবে। বাড়িঘর, অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা কাম্য নয়। হজরত জিবরাইল (আ.) কেয়ামতের আলামত সম্পর্কে প্রশ্ন করলে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘দাসী তার আপন মুনিবকে প্রসব করবে, তুমি আরো দেখতে পাবে- নগ্নপদ বিবস্ত্র হতদরিদ্র মেষ রাখালেরা বড় বড় দালান-কোঠা নিয়ে গর্ব ও অহংকার করবে।’ -সহিহ মুসলিম : ৮

বিসমিল্লাহ বলে প্রবেশ করা
মুমিনের বৈশিষ্ট্য হলো, বাড়িতে প্রবেশের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। কেননা, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশকালে ও খাবার গ্রহণকালে আল্লাহর নাম স্মরণ করলে শয়তান (তার সঙ্গীদের) বলে, তোমাদের রাত্রি যাপন ও রাতের আহারের কোনো ব্যবস্থা (এ ঘরে) হলো না; কিন্তু কোনো ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশকালে আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়তান বলে, তোমরা রাত্রি যাপনের জায়গা পেয়ে গেলে। আহারের সময় আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়তান বলে, তোমাদের রাতের আহার ও শয্যা গ্রহণের ব্যবস্থা হয়ে গেল।’ -সহিহ মুসলিম : ২০১৮

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহর জিকির করে আর যে জিকির করে না, উভয়ের উদাহরণ মৃত ও জীবন্ত মানুষের মতো

 বাসা থেকে বের হওয়ার সময়ও বিসমিল্লাহ বলা
একজন মুমিন ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ও ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। কেননা, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কেউ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে, বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’, তবে তাকে বলা হয়- তুমি হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়েছো, (আল্লাহতায়ালা) তোমার জন্য যথেষ্ট, তুমি হেফাজত অবলম্বন করেছো (অনিষ্ট থেকে)। তাতে শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায়। -সুনানে তিরমিজি : ৩৪২৬

ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দেওয়া
একজন মুমিন ঘরে প্রবেশকালে সালাম দেবে। কেননা, সালাম দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তবে যখন তোমরা কোনো ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমরা পরস্পরের প্রতি সালাম করবে অভিবাদনস্বরূপ যা আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্ৰ।’ -সুরা আন নুর : ৬১

এই আয়াতের আলোকে, নিজ ঘরে অন্যের ঘরে প্রবেশের কিছু আদব বর্ণনা করা হয়েছে। তা হলো- ঘরে প্রবেশের সময় বাড়ির লোকদেরকে সালাম দেওয়া। মানুষ নিজের স্ত্রী-সন্তানদেরকে সালাম দেওয়াকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে। কিন্তু ইমানদার ব্যক্তির জন্য জরুরি আল্লাহর আদেশ পালন করে সালাম দেওয়া। নিজের স্ত্রী-সন্তানদের শান্তির দোয়া দেওয়া থেকে কেন বঞ্চিত রাখা হবে?

রাতে ও সন্ধ্যায় বাসায় এই বিষয়গুলো পালন করা
একজন মুমিন শয্যা গ্রহণের সময় দরজা বন্ধ করবে, আগুন (চুলা) নিভিয়ে নিবে ও খাবার পাত্র ঢেকে রাখবে। ঘুমানোর আগে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এ জাতীয় কিছু কাজ করতে বলেছেন, প্রত্যেক পরিবারের জন্য তা মেনে চলা জরুরি। কেননা এতে বহু উপকারিতা রয়েছে।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকে রাখো। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু অংশ অতিক্রম করলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পারো। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে, কমপক্ষে পাত্রগুলোর ওপর কোনো বস্তু আড়াআড়ি করে রেখে দিয়ো। আর (শয্যা গ্রহণের সময়) তোমরা তোমাদের প্রদীপগুলো নিভিয়ে দেবে।’ -সহিহ বোখারি : ৫৬২৩

   

হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়ল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে সরকার।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৪ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটা এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।

এ পর্যন্ত হজ পালনে ইচ্ছুক ৪ হাজার ৫৯৬ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার ১২৯ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৪৬৭ জন নিবন্ধন করেছেন। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে। সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হবে। বিশেষ হজ প্যাকেজের ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা খরচ হবে।

আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। প্রথম প্যাকেজের (সাধারণ) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা।

আরও পড়ুন- হজ পালনে বিধিনিষেধ কমছে, বাড়ছে নিবন্ধনের সময়

;

নুরানি বোর্ডের সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, পাসের হার ৮৭.৭৯%



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নুরানি বোর্ডের সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ

নুরানি বোর্ডের সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশব্যাপী একসঙ্গে শুরু হওয়া নুরানি তালীমুল কুরআন বোর্ড বাংলাদেশ (এন,টি,কিউ,বি) পরিচালিত ৩য় শ্রেণির ১৭তম সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুরস্থ নুরানি বোর্ডের নিজস্ব কার্যালয়ে ‘শায়খুল কুরআন অডিটোরিয়ামে’ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

নুরানি তালীমুল কুরআন বোর্ডের ম্যানেজার মো. হাসানুজ্জামানেরর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এবার ৪৯ হাজার ৪৯৬ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৪৩ হাজার ৪৫২ জন। পাসের হার ৮৭.৭৯%।

মেধা তালিকায় স্থান পেয়ে সেরা শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছে ১২ জন। মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছে- ঢাকার রওজাতুল কুরআন মাদ্রাসার মিম আক্তার। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে খুলনার পশ্চিম বানিয়াখামার দারুল কুরআন বহুমুখী মাদরাসার হাবিবা ইরহা। তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ১০ জন। ফেনীর জামিয়া রশীদিয়া দক্ষিণ শাখার সাইফুল ইসলাম, নোয়াখালীর হজরত ওমর ফারুক রা. মাদ্রাসার হাবিবুর রহমান, ঢাকার জামিয়া কুরআনিয়া নূরানী বালক-বালিকা মাদ্রাসার সুলতানা পারভীন, ফেনী আলীয়া (অনার্স) কামিল মাদ্রাসা নূরানী বিভাগের মো. শাবাজ, ফেনীর দারুল উলুম হস্তিমৃতা মাদ্রাসার মো.আরাফাত হোসেন মজুমদার, চট্টগ্রামের নিজামপুর মারকাযুল কুরআন মাদ্রাসার তাহসিন আহমেদ, ঢাকার মাদ্রাসা উলুমুল কুরআন আল মাদানীয়ার আহনাফ আহসান রাফাত, ফেনীর মুন্সিরহাট মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার মো. ইমরান হোসেন, খুলনার পশ্চিম বানিয়াখামার দারুল কুরআন বহুমুখী মাদ্রাসার ফারিহা জাবিন ইরা ও ঢাকার রওজাতুল কুরআন মাদ্রাসার মো. নাছিম মিয়া।

সারাদেশের মোট ৭৫২টি কেন্দ্রে এই সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

পরীক্ষা বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান মাওলানা কালিমুল্লাহ জামিল হুসাইন ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলেন, দেশব্যাপী তরুণ আলেমদের কাছে অনুরোধ করছি- একটি নীরব সাধনায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তা হচ্ছে-প্রতিটি গ্রামে, পাড়া-মহল্লায় নুরানি মাদ্রাসা, নুরানি স্কুল, নুরানি মক্তব ও ইসলামিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের প্রতিটি সন্তানের কাছে দ্বীন শেখাকে সহজ থেকে সহজতর করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তরুণ আলেমরা এগিয়ে এলে শায়খুল কুরআন আল্লামা কারী বেলায়েত হুসাইন (রহ.) প্রতিষ্ঠিত নুরানি তালিমুল কুরআন বোর্ড সব রকমের সহযোগিতা করবে। আগামীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিশুবান্ধব হোক এই প্রতাশাও করেন তিনি।

পরীক্ষা বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব মাওলানা ইসমাঈল বেলায়েত হুসাইন বলেন, শিশুরা কাঁচামাটির মতো। তাদের যেভাবে গড়ে তুলবেন তারা সেভাবেই গড়ে ওঠবে। আমরা দ্বীন ধর্ম ও মাতৃভূমির ভালোবাসায় সন্তানদের গড়ে তুলি। সুনাগরিক ও দেশপ্রেমিক প্রজন্ম গড়ে তুলতে কাজ করে নুরানি বোর্ড।

তিনি আরো বলেন, দেশব্যাপী নুরানি মাদ্রাসা ও ইসলামিক স্কুল পরিচালনার মাধ্যমে জাতিকে সুসন্তান উপহার দেওয়ার কাজটি নুরানি বোর্ড করে যাচ্ছে। আগামী দিনেও আমাদের এই ধারা চালু থাকবে- ইনশাআল্লাহ।

পরীক্ষা যথাযথভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে যারা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, যুগ্ম-মহাসচিব নুর আহমদ আল ফারুক ও আওয়ার ইসলাম সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব।

;

ইসরায়েল গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রাচীন ওমরি মসজিদ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গাজার ওমরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল, ছবি : সংগৃহীত

গাজার ওমরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজার প্রাচীনতম ওমরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। ইসরায়েলি বোমা হামলার পর ওমরি মসজিদটির কেবল মিনার দাঁড়িয়ে থাকে। আর বাকি সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। পঞ্চম শতক থেকে স্থানটি খ্রিস্টান বা মুসলিম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর নামে মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছিল।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ইসরায়েলি বাহিনী প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে শেষ করে দেয়। গাজা সিটির ওল্ড টাউনে অবস্থিত মসজিদটি ইতোপূর্বে কয়েকটি সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। একবার ভূমিকম্পেও ক্ষতির মুখে পড়েছিল। তবে প্রতিবারই একে নতুন করে নির্মাণ করা হয়।

১৪০০ বছরেরও আগে প্রতিষ্ঠিত হয় গাজায় অবস্থিত ওমরি মসজিদ। এটি আল-আকসা ও আহমেদ পাশা আল-জাজার মসজিদের পর ফিলিস্তিনের তৃতীয় বৃহত্তম ও প্রাচীন মসজিদ হিসেবে বিবেচিত। ওমর মুখতার স্ট্রিটের পূর্বে, ফিলিস্তিন স্কয়ারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে, গাজার প্রাচীন শহরের কেন্দ্রস্থলে দারাজ কোয়ার্টারে এর অবস্থান। কেউ কেউ মসজিদে আকসার সঙ্গে সাদৃশ্য থাকার কারণে এটিকে ‘ছোট আল-আকসা মসজিদ’ বলে ডাকে।

খলিফা হজরত ওমর বিন খাত্তাবের শাসনামলে ৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে ফিলিস্তিন বিজিত হয়। ফিলিস্তিন বিজয়কালে খলিফা ওমর ইবনে খাত্তাবের সম্মানে মসজিদের নাম দেওয়া হয় ‘আল-ওমরি।’ আর এটি গাজার অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ হওয়ায় ‘বড় মসজিদ’ হিসেবে পরিচিত। ১৩৫৫ সালে মুসলিম ভূগোলবিদ ইবনে বতুতা মসজিদটিকে তৎকালীন সময়ের ‘এক উত্তম জামে মসজিদ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

চার হাজার ১০০ বর্গমিটারের একটি এলাকায় (৪৪ হাজার বর্গফুট) মসজিদটি অবস্থিত। এর প্রাঙ্গণের আয়তন এক হাজার ১৯০ বর্গমিটার। মসজিদের পাঁচটি দরজা রয়েছে। সাধারণত বেশির ভাগ কাঠামো স্থানীয়ভাবে পরিচিত সামুদ্রিক বেলেপাথর কুরকার থেকে নির্মিত হয়।

মামলুক ও পরবর্তী সময়ে অটোমানরা ভবনের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সম্প্রসারিত করেছে। মসজিদ প্রাঙ্গণে মামলুক ও উসমানীয় যুগে কোরআন ও ধর্মীয় জ্ঞানদানের জন্য ব্যবহৃত চারটি কক্ষ ছিল।

উসমানীয় শাসনামলে মসজিদটি সম্প্রসারিত এবং বিভিন্ন স্থাপত্য সংযোজন করা হয়। এ মসজিদ মিনারের জন্য বিখ্যাত।

গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ‘শান্তির ঐতিহ্য’ ধ্বংস হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে ২ হাজার বছরের পুরনো সেন্ট পরফিরাস চার্চ। এছাড়া বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীন রোমান কবরস্থান ও জাদুঘরেও আঘাত হানে ইসরায়েল। হামাস কর্মকর্তারা ইসরায়েলের এ কাজকে ‘জঘন্য, বর্বর অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

;

হজ পালনে বিধিনিষেধ কমছে, বাড়ছে নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র কাবা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র কাবা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত তিন বছর হজযাত্রীর সংখ্যা সীমিত থাকলেও আসন্ন হজে তা সীমিত রাখবে না বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। থাকবে না কোনো বয়সসীমাও, উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে করোনা টিকার সনদের শর্ত। সহজ করা হচ্ছে ভিসা প্রক্রিয়া।

দেশটির হজ ও ওমরাবিষয়ক মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়া এসব কথা জানান। রাজধানী রিয়াদে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘হজযাত্রীর সংখ্যা করোনা মহামারির আগের সময়ের মতো করা হবে। এতে কোনো বয়সসীমা থাকবে না। আমরা স্বাভাবিক পরিস্থিতির হজ ব্যবস্থাপায় ফিরছি- ইনশাআল্লাহ।’

ইসলামে পাঁচটি ফরজের মধ্যে হজ একটি। সামর্থ্যবান মুসলিমদের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা ফরজ। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।

করোনার আগে ২০১৯ সালের হজে ২৫ লাখ মুসলমান অংশ নেন। পরের দুই বছর মহামারীর কারণে হজযাত্রীর সংখ্যা কমানো হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালে ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন পুরুষ ও নারী হজ পালন করেছেন। সে সময় হজযাত্রীদের বয়সসীমা ৬৫ বছরের নিচে সীমিত রাখা হয়। বাধ্যতামূলক করা হয় করোনার টিকা ও নেগেটিভ সনদ।

ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ পবিত্র হজের কার্যক্রম শুরু করেছে। সৌদি আরব হজের সেবাদানকারী কোম্পানীর নিবন্ধনে আবেদনপত্র আহ্বান করেছে।

বাংলাদেশে ১৫ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের হজের নিবন্ধন শুরু হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ নিবন্ধন শুরু করেছেন হজ পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা। নিবন্ধন প্রক্রিয়া রোববার (১০ ডিসেম্বর) শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আশানুরূপ নিবন্ধন না হওয়ায় সময় বাড়ানো হবে।

এ পর্যন্ত হজ পালনে ইচ্ছুক ৪ হাজার ৫৯৬ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার ১২৯ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৪৬৭ জন নিবন্ধন করেছেন। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ থেকে আগামী বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি কোটায় ১ লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন।

নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে। সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হবে। বিশেষ হজ প্যাকেজের ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা খরচ হবে।

আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। প্রথম প্যাকেজের (সাধারণ) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। দ্বিতীয় প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৮ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা।

;