ইতালির যে শহরে কোনো মসজিদ নেই
জুমার দিন। ইতালির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর মনফালকনের একটি পার্কিং লটে শত শত মুসল্লি জড়ো হয়েছেন জুমার নামাজ পড়তে। এই শত শত মুসল্লি শহরটিতে বসবাসরত মুসলিম জনসংখ্যার একটি অংশ মাত্র। গত নভেম্বরে শহরটির কট্টরপন্থি মেয়র মুসলিম কালচারাল সেন্টারের ভেতরে নামাজ পড়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
মনফালকনে বসবাসরত মুসলিমরা কোথায় নামাজের অনুমতি পাবেন, তা নির্ধারিত হবে এ মাসের শেষে আদালতে।
এখন তারা যে জায়গাটিতে নামাজ পড়ছেন তার মালিক প্রবাসী বাংলাদেশি রেজাউল হক। অন্যান্য মুসলিমদের মতো তিনিও নামাজ পড়ায় অসুবিধার বিষয়টিকে তিনি দেখেন কর্তৃপক্ষের হয়রানি হিসেবে।
২০০৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে পাড়ি জমিয়ে তিনি পেয়েছেন ইতালিয়ান নাগরিকত্ব। রেজাউল বলেন, ‘বলুন, আমার কোথায় যাওয়া উচিত? আমাকে কেন (নামাজ পড়তে) মনফালকনের বাইরে যেতে হবে? আমি এখানে থাকি, এখানে ট্যাক্স দিই!’
তার ক্ষোভ, ‘ক্যাথলিক, অর্থোডক্স, প্রোটেস্ট্যান্ট, ইহুদি সবার জন্য প্রার্থনালয় থাকতে পারলে, আমাদের জন্য কেন নয়?’
মিলান শহর থেকে ৪শ’ কিলোমিটার দূরের মনফালকন শহর। মনফালকনের ৩০ হাজার জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ প্রবাসী। যার বেশিরভাগই মুসলিম বাংলাদেশি।
নামাজের বিষয়ে এমন কড়াকড়ি প্রসঙ্গে শহরের মেয়র অ্যানা সিসিন্ট বলেন, নামাজের নিষেধাজ্ঞা বৈষম্যমূলক নয়, বরং শহরের পরিকল্পনা ও প্রবিধানগুলো কঠোরভাবে উপাসনালয় স্থাপনে সীমাবদ্ধ। একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে উপাসনার স্থান প্রদান করা তাদের কাজ নয়। আর মেয়র হিসেবে, আমি কারও বিরুদ্ধে নই, আমি বিরোধিতায় আমার সময় নষ্ট করতে পারি না, আমি এখানে আইন প্রয়োগ করতে এসেছি।
নগর পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ নামাজের জায়গার ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করে। উদারপন্থি একটি এলাকার মেয়র হিসেবে এর ব্যবস্থা করা তার দায়িত্ব নয় বলেও জানান অ্যানা।
তিনি মনে করেন, এমনিতেই বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা এবং উচ্চ জন্মহারের কারণে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে। যা মনফালকনের জন্য অনেক বেশি।
ইতালির অন্যতম প্রধান মুসলিম সংগঠন ইসলামিক রিলিজিয়াস কমিউনিটির প্রধান ইয়াহিয়া জানান, মেয়রের যুক্তির সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।