হজের সময় পিরিয়ড শুরু হলে করণীয়

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হজের সময় পিরিয়ড শুরু হলে করণীয়, ছবি: সংগৃহীত

হজের সময় পিরিয়ড শুরু হলে করণীয়, ছবি: সংগৃহীত

কয়েকটি ক্ষেত্রে নারীদের হজের কার্যাবলি পুরুষ থেকে আলাদা। যেমন নারীরা ইহরাম অবস্থায় স্বাভাবিক পোশাক পরিধান করবেন। উচ্চ আওয়াজে তালবিয়া পড়বেন না। তাওয়াফের সময় রমল (তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে সজোরে বীরদর্পে চলা) করবেন না। সাঈর সময় (সাফা-মারওয়ায় দৌড়ানোর সময়) মিলাইনে আখদারাইন (সবুজ বাতিযুক্ত এলাকা) অতিক্রমকালে দৌড়াবেন না। মাথার চুল মুণ্ডন করবেন না, বরং চুলের আগার কিছু অংশ (এক ইঞ্চি পরিমাণ) কাটবেন।

ইহরাম অবস্থায় হায়েজ (মাসিক ঋতুস্রাব) ও নিফাস (প্রসবোত্তর স্রাব) হলে গোসল করার পর তাওয়াফ ছাড়া হজের অন্যান্য আমল সম্পন্ন করবেন। তবে (হায়েজ নিফাস থেকে) পবিত্র হওয়ার পর তাওয়াফ সম্পন্ন করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

হজপালনের জন্য পাঁচ দিনে পাঁচ স্থানে বেশ কিছু ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত আমল করতে হয়। নারী পুরুষ সবাইকে পবিত্র শরীরে এই আমলগুলো করতে হবে। আমল ছাড়া কোনো ইবাদত গ্রহণযোগ্য নয়। হজের আমলগুলো শুরু করার পর কোনো নারীর পিরিয়ড শুরু হলে তার করণীয় হলো-

হায়েজ (পিরিয়ড) অবস্থায় নারীরা শুধু তাওয়াফ ছাড়া হজের অন্যসব আমল পালন করতে পারবেন। হায়েজ ও নিফাসের সময় উকুফে আরাফাত (আরাফাতে অবস্থান) ও অকুফে মুজদালিফা (মুজদালিফায় রাতযাপন) করতে পারবেন, জামারাতে রমিয়ে জিমার বা শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে পারবেন। কিন্তু তাওয়াফে জিয়ারত বা ফরজ তাওয়াফ সুস্থ হওয়ার পর করবেন। হায়েজের কারণে তাওয়াফ বিলম্বিত হলে কোনো গোনাহ হবে না। সুতরাং এ নিয়ে দুশ্চিন্তা বা মনোক্ষুণ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বিজ্ঞাপন

যদি তার সফরের সময়কাল শেষ হয়ে আসে, কিন্তু পিরিয়ড বন্ধ না হয়, তাহলে সফরের শেষ দিকে ওই অবস্থায়ই উমরার তাওয়াফ করে নেবে। তারপর উমরার সাঈ করবে এবং চুল কেটে হালাল হয়ে যাবে। আর অপবিত্র অবস্থায় উমরার তাওয়াফ করার কারণে একটি দম দেবে। অর্থাৎ হারাম এলাকায় একটি ছাগল বা দুম্বা জবাই করবে।

আর হায়েজ বন্ধ হওয়ার আগেই ফেরত ফ্লাইটের তারিখ হয়ে গেলে ওষুধ খেয়ে হায়েজ বন্ধ করে তাওয়াফ করা যাবে। যদি শুরু থেকেই ওষুধ-বড়ি খেয়ে পিরিয়ড বন্ধ রেখে কেউ হজের সমস্ত কাজ করেন, তাতেও শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো আপত্তি নেই।

কোনো নারী ইচ্ছা করলে হজের কার্যাবলি সম্পাদনের সুবিধার্থে হজ চলাকালে ওষুধ বা ট্যাবলেট খেয়ে সাময়িকভাবে মাসিক (ঋতুস্রাব) বন্ধ রাখতে পারেন; যদি এতে শারীরিক কোনো সমস্যা না হয়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

সাধারণত বাংলাদেশের পরিবেশে ছেলেশিশুরা ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সে এবং মেয়েশিশুরা ১১ থেকে ১৩ বছর বয়সে সাবালক-সাবালিকা হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের ওপর হজসহ শরিয়তে কোনো বিধান ফরজ নয়।

স্রাব চলাকালীন তাওয়াফ নিষিদ্ধ। তাই পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগে পবিত্র হয়ে গেলে অবশ্যই এর ভেতরেই তাওয়াফ সেরে নিতে হবে। কিন্তু যদি ১২ তারিখ সূর্যাস্তের ভেতর পবিত্র না হয় তাহলে পবিত্র হওয়ামাত্র আদায় করে নেবে। এক্ষেত্রে বিলম্বের কারণে কোনো জরিমানা আসবে না।

নারীরা ইহরাম অবস্থায় হাত-মোজা ও পা-মোজা ব্যবহার করতে পারবে। তবে হাত মোজার ব্যাপারে দুই ধরনের দলিল বিদ্যমান থাকায় কেউ কেউ হাতমোজা পরিধান না করাকে উত্তম বলেছেন।

নারীর মাসিক ঋতুস্রাব ও সন্তান প্রসবোত্তর স্রাব ইত্যাদি থাকলেও ইহরাম বাঁধতে ও তালবিয়া পড়তে পারবে। হজের অন্যান্য কাজও করতে পারবে তবে এ অবস্থায় তাওয়াফ করা, নামাজ পড়া জায়েজ নয়।