হিজড়াদের হজের বিধান

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

চেহারা ও আচার-আচরণের দিক থেকে পুরুষ হিজড়ারা পুরুষদের মতো এবং নারী হিজড়ারা নারীদের মতো হজব্রত পালন করবেন। হজ আদায়কালে ছেলে হিজড়াকে পুরুষদের মতো ইহরাম পরতে হবে এবং মেয়ে হিজড়ারা মহিলাদের মতো নারীসুলভ স্বাভাবিক পোশাকেই ইহরামের নিয়ত করবেন। তবে এ ক্ষেত্রে একজন মাহরাম পুরুষ বেছে নিতে হবে এবং নারীদের মতোই হজের সব নিয়ম-কানুন তিনি পালন করবেন।

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে সৎকর্ম করবে, সে পুরুষ বা নারী যদি সে বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ -সুরা মুমিন: ৪০

বিজ্ঞাপন

ইসলামি বিধানে রয়েছে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ। এই কল্যাণের বিধান সব মানুষের জন্য। হিজড়ারাও এই হুকুমের বাইরে নয়। মুসলিম শরিয়া আইন অনুযায়ী হিজড়ারা মা-বাবার সম্পত্তির ভাগ পাবে। তাদের বঞ্চিত করা আইনের বরখেলাপ।

তবে তারা উত্তরাধিকার সম্পদে নারী হিসেবে পাবে নাকি পুরুষ হিসেবে পাবে, তা-ও শরিয়ায় নিশ্চিত করা আছে। যে হিজড়া নারী বা পুরুষ প্রকৃতির, সে নারী বা পুরুষের মানদণ্ডেই উত্তরাধিকার সম্পদ পাবে, আর যে নারী নাকি পুরুষ, এর কোনোটিই চিহ্নিত করা যায় না, সে তার প্রস্রাবের পথের অবস্থা অনুযায়ী ভাগ পাবে। ইবাদত-বন্দেগির ক্ষেত্রেও এই মূলনীতি অনুসরণ করা হবে। এ বিধানের আলোকেই তারা হজের যাবতীয় কার্যাদি সম্পাদন করবেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের বেশির ভাগ হিজড়া মুসলিম। কারণ মুসলিম অধ্যুষিত এ দেশের কোনো না কোনো মুসলিম পিতা-মাতার ঘরেই তাদের জন্ম হয়েছে। তাই জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামী রীতি-নীতিই তাকে মেনে চলতে হবে।

ইসলাম হিজড়াদের পূর্ণাঙ্গ মানুষ মনে করে। পবিত্র কোরআন-হাদিসে অঙ্গ ও আকৃতির ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করা হয়নি। আল্লাহতায়ালার কাছে সব ত্রুটিহীন অথবা ত্রুটিপূর্ণ মানুষই সমান এবং হাশরের ময়দানে সব ধরনের মানুষই জিজ্ঞাসিত হবে। সে জন্য নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ সবকিছু পালন করাই হিজড়াদের জন্য ফরজ।

হিজড়া নারী-পুরুষ পরস্পর বিয়ে করতে পারবে। তবে শর্ত থাকবে, সহবাসে তাদের সক্ষম হতে হবে। কোনো প্রকৃত হিজড়ার স্তনে যদি দুধ আসে, তা কাউকে পান করানো দ্বারা বৈবাহিক নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

আমাদের সমাজে হিজড়াদের সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা নেই। হিজড়ারা নিজেদের অবস্থান ও পরিচয় সম্পর্কে সচেতন নয়। তারা মানুষ এবং মর্যাদাশীল মানুষ। তাদের মধ্যে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মেহনত করা প্রয়োজন। মসজিদের খতিবরাও খুতবাপূর্ববর্তী বয়ানে হিজড়াদের প্রসঙ্গ আনলে ভালো হয়, যাতে সাধারণ মানুষ ও হিজড়াদের মধ্যকার দূরত্ব ঘুচে যায়।