ফিরছেন হাজিরা, এ পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু
পবিত্র হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে গত দুই দিনে দেশে ফিরেছেন তিন হাজার ৯২০ জন বাংলাদেশি হাজি। প্রতিদিনই হাজিদের নিয়ে জেদ্দা ও মদিনা থেকে একাধিক ফ্লাইট আসছে। অন্যদিকে হজে গিয়ে এ পর্যন্ত ৩৫ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২২ জুন) হজ পোর্টালে আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এবার বাংলাদেশ থেকে সর্বমোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন। সর্বশেষ যশোরের অভয়নগরের মো. শহিদুল ইসলাম (৪৯) নামে একজন হজযাত্রী মারা গেছেন।
বাংলাদেশ থেকে বয়স্ক ব্যক্তিরাই বেশি হজে যান। তরুণ বয়সে হজে যাওয়ার প্রবণতা খুবই কম। অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে তরুণ বয়সেই হজে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। বয়স্করা হজে যাওয়ায় প্রতিবছরেই বার্ধক্যজনিত কারণে হজে গিয়ে বাংলাদেশি হাজিদের মৃত্যু হয়। এ বছর হজে গিয়ে ৩৫ বাংলাদেশির মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ্ব ৩০ জন, পঞ্চাশের নিচে ৫ জন।
হজে গিয়ে মারা যাওয়া ৩৫ বাংলাদেশির মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী। এর মধ্যে মক্কায় মারা গেছেন ২৮ জন, মদিনায় ৪ জন, মিনায় দুইজন ও জেদ্দায় একজন।
হজ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর হজে গিয়ে গত ১৫ মে প্রথম মারা যান নেত্রকোণার কেন্দুয়ার মো. আসাদুজ্জামান (৫৭)। এরপর ১৮ মে মারা যান ভোলা সদরের মো. মোস্তোফা (৮৯), ২১ মে মারা যান কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর মো. লুৎফর রহমান (৬৫), ২৩ মে মারা যান ঢাকার নবাবগঞ্জের মো. মুর্তাজুর রহমান খান (৬৫), ২৩ মে চট্টগ্রামের ফতেপুরের মো. ইদ্রিস (৬৪), ২৫ মে মারা যান ঢাকার কদমতলীর মো. শাজাহান (৪৮), ২৬ মে কুমিল্লার কোতোয়ালীর মো. আলি ইমাম ভূঁইয়া (৬৫) ও কক্সবাজারের মহেশখালীর জামাল উদ্দিন (৬৯) ও ৩১ মে মারা যান কক্সবাজারের রামুর মো. নুরুল আলম (৬১)।
এ ছাড়া গত ২ জুন মারা যান কক্সবাজারের চকরিয়ার মাকসুদ আহমেদ (৬১), ৫ জুন মারা যান ফরিদপুরের নগরকান্দার মমতাজ বেগম (৬৩), ৬ জুন ঢাকার খিলগাঁওয়ের এসকে আরিফুল ইসলাম (৫৭), ৯ জুন গাইবান্ধার সাঘাটার মো. সোলাইমান (৭৩), ১০ জুন রংপুরের পীরগঞ্জের মো. সাহাজুত আলী (৫৫), রংপুরের তারাগঞ্জের মো. গোলাম কুদ্দুস (৫৫), ১২ জুন কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মো. সোলায়মান (৭৭) ও কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার সুফিয়া আকতার খাতুন (৬২), ১৩ জুন বগুড়ার সোনাতলীর মো. রেজাউল করিম মণ্ডল (৬১), ১৬ জুন টাঙ্গাইল সদরের মো. আলমগীর হোসেন খান (৭৩), ঢাকার মোহাম্মদপুরের রওশন আরা বেগম (৭২), বংশালের মো. মনির হোসেন (৫৯) ও ঝিনাইদহের কোট চাঁদপুরের সাফিয়া বেগম (৮৭), ১৭ জুন নোয়াখালীর সেনবাগের মো. মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৮) ও পিরোজপুরের নেসারাবাদের নার্গিস (৬০), ১৮ জুন ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের মো. তোফাজ্জল হক (৭০), নরসিংদীর রায়পুরার মো. সিদ্দিকুর রহমান (৪৮) ও ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকজার মো. আমিরুল ইসলাম (৬৫), ১৯ জুন কিশোরগঞ্জ সদরের ফরিদা ইয়াসমিন (৫৩) ও নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টের মো. জহিরুল ইসলাম (৭৩), ২০ জুন মাদারীপুরের শিবচরের মো. ইদিস খান (৬৬), ঢাকার বাড্ডার উম্মে কুলসুম (৪৭), বরিশালের হিজলার মো. আবু বকর সিদ্দিক (৫৯) ও ঝালকাঠির রাজাপুরের নূর মোহাম্মদ তালুকদার (৬৮), ২১ জুন যশোরের অভয়নগরের মো. শহিদুল ইসলাম (৪৯) ও চট্টগ্রামের রাউজানের এএসএম নুরুদ্দিন চৌধুরী (৭২)।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে যদি মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে তার মরদেহ সেখানেই দাফন করা হয়। মৃতদেহ নিজ দেশে নিতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না।
হজের সফরে মৃত্যু নিয়ে নবী কারিম (সা.) সুসংবাদ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হলো, এরপর মৃত্যুবরণ করলো, কেয়ামত পর্যন্ত তার জন্য হজের সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি উমরার উদ্দেশ্যে বের হলো, আর সে অবস্থায় তার মৃত্যু হলো, কেয়ামত পর্যন্ত তার জন্য উমরার সওয়াব লেখা হবে।’ -মুসনাদে আবু ইয়ালা : ৬৩৫৭