উট দিবস পালন করলো সৌদি আরব



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সৌদি আরবে আনুমানিক ১৮ লাখ উট রয়েছে, ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে আনুমানিক ১৮ লাখ উট রয়েছে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উট সৌদি আরবসহ আরব উপদ্বীপের বিস্তীর্ণ মরুভূমির সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিভিন্ন প্রজাতির উট সংরক্ষণে দেশটি নানাবিধ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শনিবার (২২ জুন) বিশ্ব উট দিবস উদযাপন করেছে সৌদি আরব।

উট দিবস পালন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকায় উট দৌড় ও মেলার আয়োজন করা হয়।

এর আগে ২০২৪ সালকে উটের বছর হিসেবে ঘোষণা দেয় দেশটি। আরব উপদ্বীপের মানুষের জীবনযাত্রায় উটের আর্থ-সামাজিক গুরুত্ব তুলে ধরতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। গত বছরের শেষ দিকে দেশটির মন্ত্রীদের কাউন্সিলে তা অনুমোদন পায়। গত ৩ জানুয়ারি সৌদি আরবের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নতুন বছরের লোগো, উটের ভিজ্যুয়াল ছবিসহ ব্র্যান্ড নির্দেশিকা ম্যানুয়াল প্রকাশ করে।

২০২০ সালে জাতিসংঘ এ বছরকে আন্তর্জাতিক উটের বছর হিসেবে নির্ধারণ করে। বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা, মরুকরণ প্রতিরোধ, ভূমির অবক্ষয় ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি বন্ধ করা, খাদ্য নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সুপারিশে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ উটের বছর উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।

সৌদি আরবের সংস্কৃতি মন্ত্রী প্রিন্স বদর বিন আবদুল্লাহ বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন উদ্যোগ ও আয়োজনের মাধ্যমে ২০২৪ সালকে উটের বছর হিসেবে উদযাপন করা হবে। সৌদি আরবের আত্মপরিচয়ের সঙ্গে উটের গভীর সংযোগ তুলে ধরে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই প্রাণীর গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।

ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর তথ্য অনুসারে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক উট থাকা দেশগুলো হলো পাকিস্তান, আমিরাত ও সৌদি আরব। সৌদি আরবের পরিবেশ, পানি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান মতে, দেশটিতে আনুমানিক ১৮ লাখ উট রয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৫০ বিলিয়ন রিয়াল। অবশ্য এই পরিসংখ্যানের বাইরেও ছয় থেকে সাত লাখ উট রয়েছে।

বিনোদন, খেলাধুলা, খাবারসহ জীবনযাত্রার সব ক্ষেত্রে এই প্রাণীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সভ্যতা নির্মাণে উট অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ভূমিকা রাখছে।

যেভাবে নবীজি (সা.) জাদু মুক্ত হন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ক্যালিগ্রাফি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, ছবি: সংগৃহীত

ক্যালিগ্রাফি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী কারিম (সা.) (জাদুগ্রস্ত হওয়ার পর) এত এত দিন এমন অবস্থায় অতিবাহিত করছিলেন যে, তার খেয়াল হতো যেন তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছেন, অথচ তিনি মিলিত হননি। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, অতঃপর তিনি আমাকে বললেন, হে আয়েশা! আমি যে ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম, সে বিষয়ে আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। (আমি স্বপ্নে দেখলাম) আমার কাছে দুজন লোক এলো। একজন বসল আমার পায়ের কাছে এবং আরেকজন মাথার কাছে।

পায়ের কাছে বসা ব্যক্তি মাথার কাছে বসা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করল, এ ব্যক্তির অবস্থা কী? সে বলল, তাকে জাদু করা হয়েছে। সে আবার জিজ্ঞাসা করল, তাকে কে জাদু করেছে? সে বলল, লাবিদ বিন আসাম। সে আবার জিজ্ঞাসা করল, কিসের মধ্যে? সে বলল, নর খেজুরগাছের খোসার ভেতরে তার চিরুনির এক টুকরা ও আঁচড়ানো চুল ঢুকিয়ে দিয়ে ‘জারওয়ান’ কূপের মধ্যে একটা পাথরের নিচে রেখেছে। এরপর নবী কারিম (সা.) সেখানে গিয়ে দেখে বললেন, এই সেই কূপ যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে।

সেখানের খেজুরগাছের মাথাগুলো যেন শয়তানের মাথা এবং সে কূপের পানি যেন মেহেদি ভেজা পানি। এরপর নবী কারিম (সা.)-এর হুকুমে তা কূপ থেকে বের করা হলো।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, তখন আমি বললাম। হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কেন এটি প্রকাশ করলেন না? নবী কারিম (সা.) বললেন, আল্লাহ তো আমাকে আরোগ্য করে দিয়েছেন, আর আমি মানুষের কাছে কারো দুষ্কর্ম ছড়িয়ে দেওয়া পছন্দ করি না।

হরজত আয়েশা (রা.) বলেন, লাবিদ বিন আসাম ছিল ইহুদিদের মিত্র বনু জুরাইকের এক ব্যক্তি। -সহিহ বোখারি : ৬০৬৩

হাদিস গবেষকরা বলেন, নবী কারিম (রা.)-কে যে জাদু করেছিল তার প্রভাব ছিল শারীরিক। আল্লাহতায়ালা তার অন্তরকে জাদুর প্রভাবমুক্ত রেখেছিলেন। শারীরিক দুর্বলতার কারণেই কখনো কখনো তার খেয়াল ছুটে যেত। আলোচ্য হাদিসে জাদু করার যে পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে অন্য হাদিসে এর কিছুটা ব্যতিক্রম বর্ণনা পাওয়া যায়।

তবে উভয় বর্ণনার মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। সুনানে নাসায়ির বর্ণনায় এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কূপের ভেতর থেকে জাদুর উপকরণগুলো বের করলেন, তখন তার ভেতর একটি সুতা পাওয়া গেল, যাতে ১১টি গিঁট ছিল। হজরত জিবরাইল (আ.) সুরা নাস ও ফালাকের একেকটি আয়াত পড়ছিলেন এবং একেকটি গিঁট খুলে যাচ্ছিল। সবগুলো গিঁট খুলে যাওয়ার পর হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সুস্থবোধ করতে শুরু করেন।

আলোচ্য হাদিসের মুসলমানের জন্য কয়েকটি শিক্ষা রয়েছে। যেমন-
১. চিকিৎসার মাধ্যমে জাদু-টোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হতে পারে।
২. কোনো উপকার লাভের চেয়ে ফেতনা-ফাসাদ থেকে বেঁচে থাকা বেশি আবশ্যক।
৩. বিপদ-আপদে ধৈর্যধারণ মুমিনের করণীয়।
৪. অধিক পরিমাণ দোয়া পাঠ জাদু থেকে বেঁচে থাকার উপায়।
৫. এই ঘটনা নবীজি (সা.)-এর মুজেজাস্বরূপ।
৬. উপায়-অবলম্বন গ্রহণ করা তাকওয়ার পরিপন্থী নয়।
৭. মুমিন নিজের স্বার্থের ওপর সামগ্রিক স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে।

;

হাব সভাপতি তসলিমকে সম্মাননা স্মারক দিল সৌদি সরকার



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাব সভাপতি তসলিমকে শুভেচ্ছা সম্মাননা স্মারক তুলে দিচ্ছেন সৌদি উপমন্ত্রী, ছবি: সংগৃহীত

হাব সভাপতি তসলিমকে শুভেচ্ছা সম্মাননা স্মারক তুলে দিচ্ছেন সৌদি উপমন্ত্রী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতস্বরূপ সৌদি সরকার হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমকে বিশেষ সম্মাননা জানিয়েছে।

সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড. আল হাসান আল মানাখরা হাব সভাপতিকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন। এ সময় সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের ডিজি ড. বদর আল সোলায়মানি উপস্থিত ছিলেন।

সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সৌদি উপমন্ত্রী বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ও সৌদি আরবে হাব সভাপতির ভূমিকার প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের হজে সৌদি মোয়াল্লিমদের সেবা প্রদানে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে, তা জানতে চান; দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন।

চলতি বছরের হজে কংকর নিক্ষেপের জন্য জামারাতে প্রবেশের সময় অব্যবস্থাপনাসহ কিছু সৌদি মোয়াল্লিমের গাফিলতির বিষয়ে সৌদি উপমন্ত্রীকে হাব সভাপতি অবহিত করেন। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে ড. আল হাসান আল মানাখরা বলেন, আগামী (২০২৫) হজের বিষয়ে একটি রোডম্যাপ শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। এ সময় তিনি আল্লাহর মেহমানদের কল্যাণে আগামীতে একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন এবং হাজিদের কষ্ট লাঘবে কি কি করা যায়- এ বিষয়ে হাব সভাপতির মতামত ও পরামর্শ প্রত্যাশা করেন।

সম্মাননা গ্রহণ শেষে হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ই-হজ ব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশের হজযাত্রী ও হজ এজেন্সিগুলোর কষ্ট লাঘব হয়েছে। আগে হজযাত্রীদের বাড়ি ভাড়ার চুক্তি ও হজ ভিসার বারকোডের জন্য এজেন্সিকে মক্কার মোয়াসসাসায় দিনের পর দিন লাইনে দাঁড়িয়ে অমানবিক কষ্ট করতে হতো। সৌদি সরকারের ই-হজ ব্যবস্থাপনা চালুর পর এখন আর এমন ভোগান্তি নাই- বলে হাব সভাপতি উল্লেখ করেন।

হাব সভাপতি সৌদি সরকারের ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনা, মোয়াল্লেম সিলেকশন, বাড়ি ভাড়া, ট্রান্সপোর্ট, পেমেন্ট ও ই-ভিসা ইত্যাদি সহজ করার জন্য সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশি হজযাত্রীদের কল্যাণে ই-হজ ব্যবস্থাপনা চালু করেছেন। এর মাধ্যমে হজ ব্যবস্থাপনার বাংলাদেশ পর্বও সহজ হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজযাত্রীদের কল্যাণে সার্বক্ষণিক হজ কার্যক্রম ব্যক্তিগতভাবে তদারকি করেন বলে সৌদি উপমন্ত্রীকে হাব সভাপতি অবহিত করেন।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম তার বক্তব্যে ২০২৪ সালের হজে সার্বিক সহযোগিতা, বিশেষ করে সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরও হজ ভিসা ইস্যু চালু রাখার জন্য সৌদি হজ ও উমরা উপমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি মহামান্য সৌদি বাদশাহ, ক্রাউন প্রিন্স, হজ ও উমরাহ মন্ত্রী, ভাইস মিনিস্টারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতার বার্তা পৌঁছাতে উপমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উল্লেখে করে হাব সভাপতি বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলানের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং হাবকে সম্মানিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

;

জাদুটোনা থেকে বাঁচতে যেসব আমল করবেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জাদুটোনা থেকে বাঁচতে যেসব আমল করবেন, ছবি: সংগৃহীত

জাদুটোনা থেকে বাঁচতে যেসব আমল করবেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানুষ মানুষকে নানাভাবে কষ্ট দেয়। কেউ সরাসরি ক্ষতি করে, কেউ পরোক্ষভাবে। পরোক্ষ ক্ষতির ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রমূলক নানা চেষ্টা-তদবির, জাদু-টোনা অন্যতম। জাদুটোনা থেকে বেঁচে থাকতে বিভিন্ন আমলের পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে ইসলামে।

যদি জানা যায় যে, জাদুকর কিছু চুল, ব্যবহৃত কাপড়ের কোনো অংশ নির্দিষ্ট কোনো স্থানে অথবা চিরুনির মধ্যে অথবা অন্যকোনো স্থানে রেখে দিয়েছে। তাহলে তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে, যাতে জাদুর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।

এ ছাড়া জাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। ঝাড়ফুঁকের পদ্ধতি হচ্ছে- জাদুতে আক্রান্ত রোগীর ওপর অথবা কোনো একটি পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সুরা আরাফ, সুরা ইউনুস, সুরা ত্বহার জাদুবিষয়ক আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দেওয়া। পরে সেই পানি গায়ে ছিটানো ও একটু একটু পান করা। এগুলোর সঙ্গে সুরা কাফিরুন, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়ে রোগীর জন্য দোয়া করা।

সাহাবি হজরত আনাস বিন মালেক (রা.) বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়ফুঁক করতেন। দোয়াটি হলো-

اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বান নাসি উজহিবাল বাসি, ইশফিহি ওয়া আনতাশ-শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফায়ুকা শিফায়ান লা ইউগাদিরু সাকামা।

অর্থ : হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী। আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী- আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দিন যেন কোনো রোগ না থাকে। -সহিহ বোখারি : ৫৭৪২

হজরত জিবরাইল (আ.) আল্লাহর নবী (সা.)-কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন- সেটাও পড়া যেতে পারে। সে দোয়াটি হচ্ছে-

بِسْمِ الله أرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللهُ يَشْفِيكَ، بِسمِ اللهِ أَرْقِيكَ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আরক্বিকা মিন কুল্লি শাইয়িন ইয়ুযিকা মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিকা বিসমিল্লাহি আরক্বিকা।

অর্থ : আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। -সহিহ মুসলিম : ২১৮৬

আরও পড়ুন

ইসলামে জাদু কেন নিষিদ্ধ

দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ দেওয়া। এ ছাড়া সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁ দেওয়া।

যে দোয়াগুলো উল্লেখ করা হলো, এগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর জাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি ওই পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে প্রয়োজনমতো একবার বা একাধিক বার গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী কারিম (সা.) নিম্নোক্ত দোয়ার মাধ্যমে হজরত হাসান ও হোসাইন (রা.)-এর জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন, এই দোয়ার মাধ্যমে তোমাদের পিতা (ইবরাহিম আ.) ইসমাঈল ও ইসহাকের জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। দোয়াটি হলো-

উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়তানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।

অর্থ : আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করছি। -সহিহ বোখারি : ৩৩৭১

হজরত উসমান বিন আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার এই দোয়া পড়বে, আল্লাহ তাকে সব ধরনের বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবেন। অন্য বর্ণনায় আছে, আল্লাহতায়ালা তাকে সব ধরনের রোগব্যাধি থেকে হেফাজত করবেন। -জামে তিরমিজি : ৩৩৮৮

;

ইসলামে জাদু কেন নিষিদ্ধ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইসলামি শরিয়তে জাদুবিদ্যার চর্চা নিষিদ্ধ, কোলাজ: বার্তা২৪.কম

ইসলামি শরিয়তে জাদুবিদ্যার চর্চা নিষিদ্ধ, কোলাজ: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবীতে জাদুবিদ্যার চর্চা হয়ে আসলেও এটা কখনো সভ্যতা-সংস্কৃতির মূলধারার কাজ বলে বিবেচিত হয়নি। বরং জাদু মানুষের ভেতরে আশা ও আস্থার পরিবর্তে ভয়ই বেশি সৃষ্টি করেছে। ইসলামি শরিয়তে জাদুবিদ্যার চর্চা নিষিদ্ধ। ইসলাম জাদুচর্চাকারীদের জন্য ইহকাল ও পরকালে কঠোর শাস্তি ঘোষণা করেছে।

কোরআন ও হাদিসের ভাষ্য মতে, জাদুবিদ্যার মূল উৎস শয়তান ও দুষ্টু জিন। তারাই মানব সমাজে জাদুবিদ্যার প্রসার ঘটিয়েছিল। জাদুকরদের সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আরো এই যে কতিপয় মানুষ কতক জিনের শরণাপন্ন হতো, ফলে তারা জিনদের অহংকার বাড়িয়ে দিত।’ -সুরা জিন : ৬

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, লোকজন নবী কারিম (সা.)-কে জ্যোতিষদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করল (যারা তৎকালীন যুগে জাদুও চর্চা করত)। তিনি বললেন, তারা মূলত কিছুই নয়। তারা জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল! কখনো কখনো তারা তো এমন কিছু কথাও বলে ফেলে যা সত্য হয়। এতে নবী কারিম (সা.) বললেন, এসব কথা সত্য। জিনরা এসব কথা প্রথম শোনে, (মনে রেখে) পরে এদের দোসরদের কানে মুরগির মতো করকর ধ্বনিতে নিক্ষেপ করে দেয়। এরপর এসব জ্যোতিষী সামান্য সত্যের সঙ্গে শত মিথ্যার মিশ্রণ ঘটায়। -সহিহ বোখারি : ৭৫৬১

আলেমরা বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন যে, জাদু শেখা, শেখানো এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রাখা হারাম। আল্লামা ইবনে কুদামা (রহ.) লেখেন, নিশ্চয়ই জাদু শেখা এবং তা শেখানো হারাম। এই বিষয়ে আলেমদের কোনো মতভিন্নতা নেই। -আল মুগনি : ১০/১০৬

ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক ও ইমাম আহমদ (রহ.)-সহ বেশিরভাগ ইমামের মতে জাদুবিদ্যা চর্চা করা কুফরি। তারা নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা দলিল পেশ করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সোলায়মান কুফরি করেনি, কিন্তু শয়তানগুলো কুফরি করেছে। তারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিয়েছে।’ -সুরা বাকারা : ১০২

কোরআন ও হাদিসে জাদুর ভয়াবহতা নানাভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এর কয়েকটি হলো-

জাদু ধ্বংসাত্মক কাজ : হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) জাদু থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, তোমরা ধ্বংসাত্মক বিষয় পরিহার করো। তা হলো, আল্লাহর সঙ্গে শিরিক ও জাদু। -সহিহ বোখারি : ৫৭৬৪

জাদু কুফরি : নবী কারিম (সা.) জাদুকরের কাছে যাওয়া ও তার কথা সত্যায়ন করাকে কুফরি বলেছেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি কোনো (জাদুকর) জ্যোতিষীর কাছে গেল এবং তার কথা সত্যায়ন করল, সে মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি অবতীর্ণ বিষয়গুলো অস্বীকার করল। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ৬৩৯

মন্দ কাজে উদ্বুদ্ধ করে : জাদুবিদ্যা অর্জন করলে তা মানুষকে মন্দ কাজে উদ্বুদ্ধ করে। যেমন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের (হারুত-মারুত) উভয়ের কাছ থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যা বিচ্ছেদ সৃষ্টি করে তা শিক্ষা করত, অথচ আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া তারা কারো কোনো ক্ষতিসাধন করতে পারত না। তারা যা শিক্ষা করত তা তাদের ক্ষতিসাধন করত এবং কোনো উপকারে আসত না; আর তারা নিশ্চিতভাবে জানত যে ব্যক্তি তা ক্রয় করে পরকালে তার কোনো অংশ নেই। তা কত নিকৃষ্ট যার বিনিময়ে তারা স্বীয় আত্মাকে বিক্রি করেছে, যদি তারা জানত!’ -সুরা বাকারা : ১০২

দণ্ডনীয় অপরাধ : ইসলামের দৃষ্টিতে জাদু দণ্ডনীয় অপরাধ। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জাদুকরের শাস্তি হলো- তরবারির আঘাতে মৃত্যুদণ্ড। -সুনানে তিরমিজি : ১৪৬০

ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, জাদু যদি কুফরির পর্যায়ভুক্ত হয় তবে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আর কুফরির চেয়ে নিম্নতর হলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না। -সুনানে তিরমিজি

আমল নষ্ট করে : জাদুর সঙ্গে সম্পৃক্ত আমল নিষ্ফল করে দেয়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি গণকের কাছে যাবে তার ৪০ দিনের আমল গ্রহণ করা হয় না। -সহিহ মুসলিম : ২২৩০

জাদু প্রকৃতপক্ষে অন্তঃসারশূন্য একটি বিষয়। যার প্রভাব সাময়িক। জাদু ও জাদুকরদের ব্যর্থতা অপরিহার্য। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা যা করেছে তা তো কেবল জাদুকরের কৌশল। জাদুকর যেখানেই আসুক সফল হবে না।’ -সুরা ত্বহা : ৬৯

;