লজ্জাহীনতা ধ্বংস করে

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লজ্জার সর্বাংশই উত্তম, ছবি: সংগৃহীত

লজ্জার সর্বাংশই উত্তম, ছবি: সংগৃহীত

লজ্জাশীলতা হচ্ছে মানবীয় এমন চরিত্র, যা নিকৃষ্ট, কদর্য কথা ও কর্ম পরিহারে অনুপ্রাণিত করে এবং যথাযোগ্য হকদারকে অবহেলা ও উপেক্ষা করতে বাধা প্রদান করে।

লজ্জা দুই প্রকার-

বিজ্ঞাপন

জন্মগত ও স্বভাবগত : নবী কারিম (সা.) বলেন, লজ্জাশীলতা কল্যাণ আনে। -সহিহ বোখারি

হজরত ওমর (রা.) বলেন, যে লজ্জা করল সে আড়ালে গেল। যে আড়ালে গেল সে আত্মরক্ষা করল। আর যে আত্মরক্ষা করল সে পরিত্রাণ পেল।

বিজ্ঞাপন

অর্জিত : আল্লাহর পরিচয় ও তার মহত্ত্ব, বান্দার নিকটবর্তী হওয়া, বান্দাদের ও তাদের কাজকর্ম দেখা, দৃষ্টির অবাধ্যতা ও অন্তরের গোপনীয় বিষয় সম্পর্কে তার অবগতি প্রভৃতি জানার মাধ্যমে যে লজ্জা অর্জিত হয়। এটা হচ্ছে- ঈমানের উচ্চ পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য, এটা হচ্ছে সুন্দরতম, শ্রেষ্ঠতর গুণ।

লজ্জা ইসলামের অনুষঙ্গ ও ধর্মীয় রীতির বিশেষ স্বভাব। নবী কারিম (সা.) বলেন, প্রতিটি ধর্মের একটি বিশেষ স্বভাব আছে। আর ইসলামের বিশেষ স্বভাব হলো- লজ্জাশীলতা। -সহিহ বোখারি

নবী কারিম (সা.) আরও বলেছেন, লজ্জাশীলতা পূণ্য ও কল্যাণ ছাড়া আর কিছুই আনে না। অন্য বর্ণনায় আছে, লজ্জার সর্বাংশই উত্তম। -সহিহ মুসলিম

লাজুকতাকে মহান আল্লাহ ভালোবাসেন। নবী কারিম (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই তোমার মধ্যে এমন দুটি চারিত্রিক গুণ আছে, যা আল্লাহ ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন। গুণ দুটি হলো- বুদ্ধিমত্তা ও লজ্জাশীলতা। -আদাবুল মুফরাদ

লাজুকতা মানুষকে ভালো কাজে উদ্যোগী করে আর লজ্জাশীলতার কারণে সে জান্নাতের দিকে ধাবিত হয়। নবী কারিম (সা.) বলেন, লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। আর ঈমানের স্থান জান্নাত। পক্ষান্তরে নির্লজ্জতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ। আর দুশ্চরিত্রতার স্থান জাহান্নাম। -সহিহ বোখারি

যখন মানুষের মধ্যে লজ্জা না থাকে, তখন সে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। লজ্জা মানুষকে খারাপ ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে, ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করে। লজ্জা আত্মার একটি ভালো গুণ এবং যাবতীয় উন্নত চরিত্রের মূল, ঈমানের সৌন্দর্য ও ইসলামের নিদর্শন।

যার মধ্যে লজ্জা আছে, তার চরিত্র ঠিক আর যার মধ্যে লজ্জা নেই তার চরিত্র ঠিক নেই। লজ্জা মানুষকে নিরাপত্তা দেয় অপমান অপদস্থের হাত থেকে রক্ষা করে।

হজরত ওয়াহাব ইবন মুনাব্বেহ (রহ.) বলেন, ঈমান বস্ত্রহীন, ঈমানের পোশাক তাকওয়া আর ঈমানের সৌন্দর্য লজ্জা। কেউ কেউ বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানকে লজ্জার পোশাক পরিধান করাবে, লোকেরা তার দোষ দেখতে পাবে না।

লজ্জা গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে, ইসলাম লজ্জার প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে এবং উৎসাহ দেয়। এক হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘লজ্জা ও ঈমান একটি অপরটির পরিপূরক। যখন একটি বিলুপ্ত হবে, তখন অন্যটি এমনিতেই চলে যাবে।’

লজ্জা ঈমান হওয়ার রহস্য হলো, ঈমান ও লজ্জা উভয়টি মানুষকে কল্যাণের প্রতি আহ্বান করে এবং খারাপ কাজ থেকে দূরে সরায়। যখন তুমি মানুষের মধ্যে উদাসীনতা, অশ্লীলতা ও নোংরামি দেখবে, তখন তুমি বুঝবে যে মানুষের মধ্যে লজ্জাহীনতা বেড়ে গেছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পূর্বের যুগের নবীদের অবশিষ্ট কথা যা পরবর্তী যুগের উম্মতরা পেয়েছে, তা হলো- যখন তুমি লজ্জা করবে না, তখন তুমি যা চাও তাই করেো।’ -সহিহ বোখারি : ৬১২০