‘বহুমাত্রিক কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন মুফতি ওয়াক্কাস’

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ছবি: সংগৃহীত

স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই যে কয়জন ইসলামি রাজনীতিকের হাত ধরে দেশে ইসলামি রাজনীতির বিকাশ ঘটে- মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস (রহ.) ছিলেন তাদের অন্যতম। দূরদর্শী আলেম ও নির্লোভ রাজনীতিবিদ হিসেবে তার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। নানামাত্রিক কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার তাকওয়া, খোদাভীরুতা ও ইখলাস ছিল পরিপূর্ণ। এ যুগে এমন মানুষের দৃষ্টান্ত বিরল। রাজনীতিতে দিন দিন এমন মানুষের সংখ্যা কমছে বলেই অপরাজনীতি সমাজে জায়গা করে নিচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মকে তার আদর্শ ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস (রহ.)-এর ‘জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

বক্তারা আরও বলেন, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব ও মানসিক দৃঢ়তার কারণে তিনি আলেমসমাজে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তার চরিত্রের দৃঢ়তা ও ইস্পাতকঠিন মনোবল দেখা গেছে, বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে।

তিনি বিশ্বাস করতেন, ইসলামের জন্য, মানুষের জন্য কিছু করতে পারাটাই আমার পরম প্রাপ্তি, অন্য কিছু নয়।

বিজ্ঞাপন

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান ও মুফতি জাকির হোসাইন খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় দেশ-বিদেশের রাজনীতিবিদ, ইসলামি স্কলার ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, আলেম-উলামাদের মতো অসাধারণ উত্তরাধিকার তিনি রেখে গেছেন। তার দেখানো পথে, তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজগুলো প্রতিপালনের মাধ্যমেই তার প্রতি প্রকৃত সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব।

অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নাজেম মাওলানা সাইয়্যেদ আজহার মাদানি, ইউরোপ জমিয়তের সভাপতি মুফতি আব্দুল হান্নান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি কারী আব্দুল খালিক আসআদি ও যুক্তরাষ্ট্র জমিয়ত নেতা মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম জালালাবাদী।

আরও বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী, বিএনপির যুগ্ন-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাবেক মন্ত্রী ও ১২ দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, নেজামে ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, জমিয়তের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা রশিদ বিন ওয়াক্কাস, ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিম, সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়ত নেতা সৈয়দ তালহা আলম, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি হোসাইন আহমদ বিন ওয়াক্কাস, সাধারণ সম্পাদক সুহাইল আহমদ, সিনিয়র যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আল আদনান, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সহ-সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ ইসলামাবাদী, এম আবদুল হাফিজ, শাব্বির আহমদ রাজী, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি হাফেজ খালেদ মাহমুদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমদ ইসলামাবাদী, সাধারণ সম্পাদক ফেরদাউস রুম্মান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরাফাত আল মিসবাহ ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাদ আমির প্রমুখ।

উল্লেখ্য, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস ২০২১ সালের ৩১ মার্চ রাজধানীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি এরশাদ সরকারের ধর্ম ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। যশোর-৫ আসন থেকে তিনি কয়েক বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দেশের শীর্ষ আলেম হিসেবে তিনি বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

স্মরণসভা শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীকে সভাপতি, মাওলানা আব্দুর রহিম ইসলামাবাদীকে নির্বাহী সভাপতি, মাওলানা ডঃ গোলাম মহিউদ্দিন ইকরামকে মহাসচিব এবং মুফতি জাকির হোসাইন খানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ২০২৪-২০২৭ তিন বছর মেয়াদি ১২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।