বদলি হজের লোক বাছাইয়ে সর্তক থাকুন



ড. মুফতি মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী, অতিথি লেখক, ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

১৪ জুলাই শুরু হবে হজ ফ্লাইট। বাংলাদেশ থেকে এবার প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলামান হজপালনের জন্যে সৌদি আরব গমন করবেন। এবার যারা হজে যাচ্ছেন, তাদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। হজ পালনেচ্ছুদের সুবিধার্থে বার্তা২৪.কম ধারাবাহিকভাবে হজের নিয়ম-কানুন, মাসয়ালা, আমল ও প্রয়োজনীয় দোয়া প্রকাশ করবে। আজ থাকছে পঞ্চম পর্ব

অন্যের পক্ষ থেকে হজ আদায় হলো বদলি হজ। বদলি হজে ইহরাম বাঁধার সময় বলতে হবে, আমি অমুকের পক্ষ থেকে হজ করছি।

কারো ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর যদি সে কোনোভাবেই আদায় করতে না পারে আর ভবিষ্যতে তার দ্বারা হজ আদায়ের সম্ভাবনা না থাকে, যেমন এমন রোগাক্রান্ত তার আর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই, প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত কিংবা দুর্বলতার কারণে বাহনে উঠার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে; এমন ব্যক্তি তার নিজের পক্ষ থেকে অন্য কারো দ্বারা হজ করাতে পারবে। হজের পূর্ণ খরচ নির্দেশদাতাকে আদায় করতে হবে।

মাসয়ালা: অসুস্থতা বা অন্যকোনো কারণে হজ করতে অক্ষম হওয়ায় কারো মাধ্যমে বদলি হজ করানোর পর ওই ব্যক্তি যদি হজ করতে সক্ষম হয়, আর সামর্থ্য থাকে তাহলে আবার হজ আদায় করতে হবে। পূর্বের আদায়কৃত হজটি তার জন্য নফল হিসেবে গণ্য হবে।

মাসয়ালা: যে নিজের হজ আদায় করেছেন তিনি অন্যের বদলি হজের দায়িত্ব নিতে পারবেন।

মাসয়ালা: যে নিজের হজ আদায় করেনি, তার ওপর হজ ফরজও হয়নি। এমতাবস্থায় অন্যের পক্ষ থেকে তিনি বদলি হজ করতে পারবেন, তবে বিষয়টি সুন্দর না; উত্তমও হবে না।

মাসয়ালা: যে নিজের হজ আদায় করেনি কিন্তু তার ওপর হজ ফরজ হয়ে আছে। তাহলে তার জন্য অন্যের পক্ষ থেকে বদলি হজের জন্য যাওয়া জায়েজ নেই, মাকরূহে তাহরিমি ও গোনাহের কাজ। তবে ওই লোকের জন্য বৈধ না হওয়া সত্ত্বেও যদি হজ করে, তাহলে যে হজে পাঠিয়েছেন তার পক্ষ থেকে হজ আদায় হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: ক্রোয়েশিয়ার ব্যতিক্রমী নকশার রিজেকা মসজিদ

মাসয়ালা: কোনো নারীর কাছে যদি নিজের হজ করার পরিমাণ সম্পদ থাকে আর তার সঙ্গে হজে যাবার জন্য মাহরাম না পায় কিংবা মাহরামের খরচ বহন করার মতো সামর্থ্য না হয় তাহলে ওই নারী নিজের পক্ষ থেকে বদলি হজ করাবে কিংবা হজের জন্য অসিয়ত করে যাবে।

মাসয়ালা: বদিল হজ আদায় করার বিনিময়ে কোনো পারিশ্রমিক নেওয়া যাবে না। পারিশ্রমিক নেওয়া ও দেওয়া গোনাহের কাজ। তারপর কেউ পারিশ্রমিক নিয়ে হজ করলেও নির্দেশদাতার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পারিশ্রমিক যা নিয়েছিল তা ফেরত দেওয়া কর্তব্য।

মাসয়ালা: হজের জন্য যে টাকা দেওয়া হয়েছে তা যদি সব না লাগে তাহলে মালিকের কাছে অবশিষ্ট টাকা ফেরত দিতে হবে। আর যদি হজের হুকুমদাতা টাকা দিয়ে বলেন, এ টাকা থেকে খরচ করবেন, যা রয়ে যাবে তা আপনার। তাহলে অবশিষ্ট বা অব্যবহৃত টাকা বদলি হজ আদায়কারী নিতে পারবেন। মদিনায় জিয়ারতের খরচ যদি নির্দেশদাতা প্রদান করেন, তাহলে তা খরচ করে মদিনায় জিয়ারত করতে পারবেন।

মাসয়ালা: বদলি হজের নির্দেশদাতা যেভাবে হজের নির্দেশ দেবেন ঠিক সেভাবেই হজ আদায় করতে হবে। উমরা ছাড়া শুধু হজের নির্দেশ দিলে ইফরাদ হজ করতে হবে। যদি তামাত্তুর জন্য নির্দেশ দেয় তাহলে তামাত্তু আদায় করতে পারবে। কিরান আদায় করার কথা বললে কিরান আদায় করবে। হজের নির্দেশদাতা শুধু হজের কথা বলেছে, কিরান, তামাত্তু বা ইফরাদ সম্পর্কে ধারণা নেই তার। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশে যেহেতু তামাত্তু হজ বেশি আদায় করা হয়, হজ বলতে উমরা ও হজ দু’টিই বুঝানো হয়। তাই বদলি হজ পালনকারী তামাত্তু হজই আদায় করবে। যদি ইফরাদ বা কিরান আদায় করে তাহলে সর্বসম্মতিক্রমে তা জায়েজ হবে।

মাসয়ালা: হজের নির্দেশদাতা যদি স্পষ্ট করে কোনো ধরণের নির্দিষ্ট হজ পালনের কথা বলে আর হজ পালনকারী ইচ্ছা করে নির্দেশ উপেক্ষা করে অন্যভাবে হজ আদায় করে তাহলে সেই হজ নির্দেশদাতার পক্ষ থেকে হবে না। এ ক্ষেত্রে নির্দেশদাতার সমুদয় টাকা ফেরত দিতে হবে। বদলি হজ পালনকারীর পক্ষ থেকে ফরজ হজ হিসেবেও তা আদায় হবে না। নফল হজ হিসেবে গণ্য হবে। ভবিষ্যতে বদলি হজ পালনকারীর ওপর হজ ফরজ হলে তাকে আবার হজ করতে হবে।

মাসয়ালা: হজের নির্দেশদাতার শহর থেকে হজ শুরু করতে হয়।

মাসয়ালা: হজের উপযুক্ত হবার পরও কোনো কারণে হজ না করতে পারলে তার কর্তব্য- হজের জন্য অসিয়ত করে যাওয়া। যদি কেউ অসিয়ত না করে যায় কিংবা হজের ব্যবস্থা না করে মারা যায়- তারপর তার ছেলে-মেয়ে বা উত্তরাধিকারীরা যদি তার পক্ষ থেকে বদলি হজ আদায় করে বা বদলি হজ করিয়ে নেয় তাহলে আশা করা যায় এর উসিলায় আল্লাহতায়ালা মৃত ব্যক্তিকে মাফ করে দেবেন।

মাসয়ালা: নিজের কোনো প্রিয় ব্যক্তি যেমন- উস্তাদ, পীর, পিতা-মাতা, শ্বশুর-শাশুড়ী বা কোনো আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকে বদলি হজ করতে পারবে। এতে আশা করা যায়, যার পক্ষ থেকে হজ আদায় করা হবে তিনি সওয়াব পাবেন।

মাসয়ালা: নিজের নফল হজ করার তুলনায় অন্যের ফরজ হজের বদলি হজ করা বেশি উত্তম।

লেখক: অধ্যাপক, উর্দু বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

হজ বিষয়ে জানতে আরও পড়ুন

** হজ: আল্লাহপ্রেমিকদের মিলনমেলা

** হিসাব রক্ষক ও ফিল্ড সুপারভাইজার এখন সরকারি হজগাইড!

** শ্রেষ্ঠ আমল হজ, বিনিময়ে জান্নাত

** নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ?

** যেসব পদ্ধতিতে হজ আদায় করা যায়

   

সৌদিতে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে গিয়ে মো. মোস্তফা (৮৯) নামে আরও এক হজ যাত্রী মারা গেছেন। শনিবার (১৮ মে) মক্কায় মারা যান তিনি।

রোববার (১৯ মে) রাত ২টার হজ পোর্টালের আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, গত বুধবার (১৫ মে) চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের প্রথম বাংলাদেশি এক হজযাত্রী মারা যান। মো. আসাদুজ্জামান নামের ওই ব্যক্তি মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন।

এ দিকে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত (১৮ মে রাত ১টা ৫৯ মিনিট) সৌদি পৌঁছেছেন ২৮ হাজার ৭৬০ জন হজযাত্রী। মোট ৭২টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২৫ হাজার ১৩ জন। এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।

হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত মোট ৭২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর গত মধ্যরাত পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু হয়েছে। সে হিসেবে এখনো ৩ হাজার ৩৯৫ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। সর্বশেষ শনিবার (১৮ মে) মো. মোস্তফা নামের ৮৯ বছর বয়সী হজযাত্রী মক্কায় মারা যান।

;

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;