জামিনে মুক্ত হয়ে বাসায় ফিরছেন সাবের হোসেন চৌধুরী
রাজধানীর খিলগাঁও থানার ৪ এবং পল্টন থানার ২ মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে তিনি আদালতের হাজতখানা থেকেই মুক্তি পেয়ে বাসায় ফিরছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে, এদিন বিকেলে রাজধানীর খিলগাঁও থানার ৪ মামলায় ও পল্টন থানার দুই মামলায় শুনানি শেষে পৃথক দুই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাবের হোসেন চৌধুরীকে জামিন দেন।
গত সোমবার (৭ অক্টোবর) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হাসান আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
সাবের হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে একদিন পরই মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হাসান।
এ সময় সাবের হোসেন চৌধুরীর আইনজীবী শাহীন জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে পৃথক ৬ মামলায় তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
পল্টন থানার পৃথক দুই মামলায় পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান। আর খিলগাঁও থানার পৃথক চার মামলায় পাঁচ হাজার টাকার মুচলেকায় আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তার জামিন মঞ্জুর করেন।
সাবের হোসেন চৌধুরীর আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহীন শুনানিতে বলেন, মানুষের জীবন আগে। বেঁচে থাকলে তারপর রিমান্ড। আসামি অসুস্থ, ঘাড়ে ব্যথা, ডায়বেটিসের রোগী, হার্টে তিনটা রিং পড়ানো হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। আসামি পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করেন। মানুষ হিসেবে সকলের জন্য সুখেদুখে পাশে রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন করেছেন। আসামির মানবিক দিক বিবেচনা করে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
এরপর বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে শুনানিতে বলেন, এই আসামি অসুস্থ, অথচ দাঁড়িয়ে রয়েছে। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে হাত মিলাবে। দেশের শান্তি নষ্ট করবে। দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। আসামির জামিনের বিরোধিতা করছি।
বিচারক জামিনের আদেশ দেওয়ার পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় তড়িঘড়ি করে বিচারক এজলাস ত্যাগ করেন। মুহূর্তেই অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে এজলাসে। কয়েকজন বিএনপিপন্থি এজলাসে রাখা টেবিলে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। এরপর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা এজলাস ত্যাগ করে চলে যায়।
অস্থিরতা অবস্থা কাটার পর রাজধানীর পল্টন থানার দুই মামলায় জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে বিচারক আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। এরপর এই দুই মামলায়ও জামিন মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে বিধি মোতাবেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোন প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারছেন না, কথোপকথনে জানা যায় যে, তিনি 'পূর্ব থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ও হৃদরোগে আক্রান্ত। তার হার্টে ৩টি রিং পরানো হয়েছে। আসামির বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতিতে পুলিশ হেফাজতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আশানুরূপ তথ্য পাওয়া যাবে না। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ না করে আপনার বরাবর প্রেরণ করা হল। আসামির সুস্থতা সাপেক্ষে পুনঃজিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হবে।
গত ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।